Home ব্লগবাজি দুনিয়া বদলানো 3G-4G , আজকের Digital জীবনে ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ: সুপ্রকাশ দে

দুনিয়া বদলানো 3G-4G , আজকের Digital জীবনে ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ: সুপ্রকাশ দে

0
দুনিয়া বদলানো 3G-4G , আজকের Digital জীবনে ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ: সুপ্রকাশ দে

একটা সময় মোবাইল ফোন মানেই শুধু কথা বলার যন্ত্র ছিল । ধীরে ধীরে মোবাইল ফোনের ব্যবহার হয়ে পড়ে বহুমাত্রিক । শুধু কথা বলার কাজেই নয়, কম্পিউটিংয়ের সমস্ত কাজ এখন মোবাইল ফোনেই করা যায়, আলাদা করে আর কম্পিউটার খুলে বসতে হয় না সব সময় । নিমেষে মুশকিল আসান করতে রকমারি অ্যাপস এর ব্যবহারে আমরা প্রত্যেকে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি । আর সেই সাথে পাল্লা দিয়ে প্রয়োজন বাড়ছে দ্রুত গতির ইন্টারনেটের ।

গত এক বছর ধরে দেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় যে দুটি রহস্যময় শব্দ সব কিছু এলোমেলো করে দিচ্ছে তা হলো ‘থ্রি-জি’ এবং ‘ফোর-জি’ । মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির নানা রকম অফার ও বিজ্ঞাপনের দুলুনিতে দুলছি আমরা যারা সাধারন জনগণ । বাজারে এখন ফোর-জি স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটের ছড়াছড়ি । থ্রি-জি ব্যাপারটা পুরনো হয়ে সবাই এখন ‘ফোর-জি’র পথে পা বাড়িয়েছে । কিন্তু মোবাইলের ‘জি’ ব্যাপারটা কি বা কেন, সেটা নিয়ে অনেকেই অবহিত নয় ।

জি এর মানে কি?  ‘জি’ মানে জেনারেশন বা প্রজন্ম । মোবাইল প্রযুক্তির প্রজন্ম, যা মোবাইল ফোন এবং তার নেটওয়ার্কে ইনস্টল করা হয়ে থাকে । প্রজন্ম ভাগ করা হয় টেকনোলজির উৎকর্ষের ভিত্তিতে । টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তির বিভিন্ন প্রজন্মের নামকরণের মাধ্যমে মূলত টেলিযোগাযোগ পরিষেবার কিছু প্রযুক্তিগত পরিবর্তনকে বোঝানো হয়, যেমন নতুন ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ড, উচ্চতর পিক ডাটা রেট, তথ্য স্থানান্তরের জন্য নেটওয়ার্কে আরো বেশি তথ্য ধারণ ক্ষমতা ইত্যাদি । প্রতিটি নতুন ‘জি’ অর্থাৎ জেনারেশনের জন্য আপনাকে নতুন একটি ফোন কিনতে হবে, আর নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে ব্যয়বহুল আপগ্রেডের । অর্থাৎ নতুন প্রজন্ম মানেই সেটা আগের প্রজন্মের চেয়ে আরো দ্রুত গতির হবে । মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কের ধারাবাহিক উন্নতিতে বাজারে এসেছে একটার পর একটা নতুন ‘প্রজন্ম’ অর্থাৎ ‘জি’ বা জেনারেশন । এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ১৯৮১ সালের অ্যানালগ (১জি) থেকে ১৯৯২ সালে ডিজিটাল (২জি) স্থানান্তর প্রযুক্তিতে পরিবর্তনের মাধ্যমে । এবার মোবাইলের প্রজন্মগুলি সম্পর্কে একটু ধারণা নেওয়া যাক ।

প্রথম প্রজন্মের সেলুলার নেটওয়ার্ক প্রযুক্তিকে বলা হয় ১জি । ১জি চালু হয় ১৯৮১ সালে । এতে শুধুমাত্র অ্যানালগ ডাটা ট্রান্সফার করা যেত । সাউন্ড এর গুণগত মান ভাল ছিল না এবং ১জি নেটওয়ার্কের স্পীড ছিল খুবই কম । ১জি নেটওয়ার্কের আরো একটি বৈশিষ্ট্য হলো এর একটা এরিয়া লিমিট ছিল ।

১৯৯২ সালে এলো ‘টু-জি’ নেটওয়ার্ক অর্থাৎ দ্বিতীয় প্রজন্মের নেটওয়ার্ক সিস্টেম । ১জি ছিল পুরোপুরি সনাতন অ্যানালগ প্রযুক্তিভিত্তিক নেটওয়ার্ক । ২জি নেটওয়ার্কে সিগন্যাল গুলো ডিজিটাল ফরম্যাটে ট্রান্সফার হয় এবং এর গুনগত মান ১জি এর চেয়ে অনেকটা উন্নত । ডিজিটাল মডুলেশন টেকনিকের উপর ভিত্তি করে দ্বিতীয় প্রজন্মের নেটওয়ার্কে এসএমএস (Short Message Service) আদান প্রদান, উচ্চতর ব্যান্ডউইথ, উন্নত মানের সাউন্ড কোয়ালিটি, ইত্যাদি সুবিধা যুক্ত করা হয় । ২জি তে তথ্য আদান প্রদানের গোপনীয়তা রক্ষা করার সুবিধাও যোগ করা হয় । ২জি নেটওয়ার্ক মূলত ন্যারো ব্যান্ড বেসড নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ।

২০০২ সালে ২জি প্রযুক্তির উত্তরসূরি হিসাবে আসে থার্ড জেনারেশন বা ৩জি । ৩জি প্রযুক্তিতে যুক্ত করা হয় মাল্টিমিডিয়া সাপোর্ট। মাল্টিমিডিয়া সাপোর্টের পাশাপাশি এর স্পেকট্রাম বা ফ্রিকোয়েন্সিতে পরিবর্তন আনা হয়, যা আগের তুলনায় বেশি তথ্য ধারণ করতে পারে ।  অনলাইন টিভি, হাই ডেফিনেশন ভিডিও, ভিডিও কলিং, ভিডিও গেমস, ইত্যাদি মূলত যার জন্য সম্ভব হয়েছে তা হল এই  থ্রিজি নেটওয়ার্ক । ২জি এর চেয়ে ৩জি নেটওয়ার্কের গুণগত মান ও স্পীড দুটোই অনেক উন্নত হওয়ায় ভিডিও কলিংসহ অন্যান্য সুবিধাগুলো সম্ভব হয়েছে ৩জি তে । পূর্বে ৩ মিনিটের একটি গান টু-জি মোবাইলের মাধ্যমে ডাউনলোড করতে ৬-৯ মিনিট সময় লাগতো, থ্রি-জি প্রযুক্তির সাহায্যে তা ১১-৯০ সেকেন্ডেই করা সম্ভব হয় । থ্রি-জি মোবাইলের সাহায্যে মোবাইলে টিভি দেখা এবং টেলিকনফারেন্সের সুবিধা ভোগ করা সম্ভব । থ্রি-জি প্রযুক্তি একটি ষ্ট্যান্ডার্ড মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম যা ইন্টান্যাশানাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (ITU) কর্তৃক নির্ধারিত ইন্টারন্যাশানাল মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন-২০০০ (IMT-2000) এর শর্তসমূহ পূরণ করে ।

ফোর-জি হলো ফোর্থ জেনারেশন বা চতুর্থ প্রজন্ম শব্দটির সংক্ষিপ্ত রূপ । এটি ব্যবহৃত হয় চতুর্থ প্রজন্মের তারবিহীন টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তিকে বোঝাতে । এটিই এখন মোবাইল ফোনের সর্বাধুনিক নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা । এটি সম্পূর্নরূপে ইন্টারনেট প্রোটোকলভিত্তিক একটি টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম যা গ্রাহককে আলট্রা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদান করে থাকে । ফোর-জি প্রযুক্তি হচ্ছে থ্রি-জি প্রযুক্তির আধুনিকতর সংস্করণ । ৪জিতে ৩জির সব সুবিধাই বিদ্দমান রয়েছে, শুধু আরো স্পীড বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়েছে, যাতে সহজেই যে কোনো বড় সাইজের ফাইল শেয়ার এবং একসাথে অনেকগুলো ডিভাইস কানেক্ট করা সম্ভব হয় । এর পরে ৪জিকে আরো দ্রুত করার জন্য এলটিই বা ‘লং টার্ম ইভোলিউশন’ প্রযুক্তি সামনে চলে আসে, যেটা ৪জি প্রযুক্তিকে আরো সমৃদ্ধ করেছে । ৪জি প্রযুক্তি মূলত আইপি ভিত্তিক এক ধরনের নেটওয়ার্ক । এখানে প্রত্যেক সেলের আলাদাআলাদা আইপি ও আইডেন্টিটি আছে, অনেকটা ব্রডব্যান্ড ব্যবহার করা পিসির মতো ।আগের প্রজন্মগুলো সার্কিট-সুইচড টেলিফোনি সমর্থন করলেও ৪জি তা করেনা ।এটি ইন্টারনেট প্রটোকল ভিত্তিক সকল সেবা যেমন আইপি টেলিফোনি সমর্থন করে ।ক্রমবর্ধমান আইপির অভাব থেকেই আইপি ভার্সন ৪-এর পর আইপি ভার্সন ৬ বা আইপিভি ৬-এর আবির্ভাব ঘটে । ফোরজি নেটওয়ার্কের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটি আইপিভি ৬ সাপোর্ট ।

৪জি এর ব্যান্ডউইথ আগের যে কোনো প্রজন্মের চেয়ে বেশি হওয়ার ফলে ডাটা ট্রান্সমিশন এবং রিসিভ আগের যে কোনো প্রজন্মের প্রযুক্তির চাইতে ভালোভাবে ও আরো দ্রুতগতিতে করা সম্ভব । আমরা ফোনে বা ইন্টারনেটে কথা বলি, ছবি পাঠাই, ডেটা ট্রান্সফার (আপলোড/ডাউনলোড) করি, যা ৪জি অনেক বেশি দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করে, বিশেষ করে ভয়েস, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি । অর্থ্যাৎ যে ভিডিওটি আপনি ১ ঘন্টায় পাঠাতেন ৪জি হলে সেটি ১-২ মিনিটে পাঠাতে পারবেন । ৪জি প্রযুক্তিতে গ্রাহক সর্বদাই মোবাইল অনলাইন ব্রডব্যান্ডের আওতায় থাকতে সমর্থ । সর্বোচ্চ গতির ডাটা ট্রান্সফারের সুবিধা থাকায় এতে হাই ডেফিনেশন টেলিভিশন এবং ভিডিও কনফারেন্সের সুবিধা পাওয়া যায় । এই প্রযুক্তিতে গ্রাহকের কথোপকথন ও ডাটা ট্রান্সফারের নিরাপত্তা অনেক বেশী শক্তিশালী । ৪জি নেটওয়ার্কে আরো যেসব সুবিধাগুলি পাওয়া যায় সেগুলোর মধ্যে মোবাইল ওয়েব সেবা, আইপি টেলিফোনি, গেমিং সেবা, হাই-ডেফিনিশন মোবাইল টিভি, ভিডিও কনফারেন্স, ত্রিমাত্রিক (থ্রি-ডি) টেলিভিশন এবং ক্লাউড কম্পিউটিং উল্লেখযোগ্য । যারা ইন্টারনেট বেসড কাজ কিংবা ব্যবসা করেন কিংবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে কমিউনিকেট করেন তাদের সময় এবং অর্থ সাশ্রয় হয় এই প্রযুক্তিতে ।

৪জি কে নতুন প্রজন্মের নেটওয়ার্ক না বলে নতুন একটি নেটওয়ার্কের স্ট্যান্ডার্ড বলা যেতে পারে । এখানে আগের প্রজন্মের ব্যাকওয়ার্ড কম্প্যাটিবিলিটি পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে । অর্থাৎ ৪জি সাপোর্ট করে না এমন মোবাইল ফোন ৪জি নেটওয়ার্কে চলবে না । আর সেই সাথে এতে যুক্ত হয়েছে নতুন ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ড। বাণিজ্যিকভাবে দুই ধরণের ফোরজি প্রযুক্তি স্থাপিত হয়েছে, মোবাইল ওয়াইম্যাক্স (২০০৬ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম) এবং ‘লং টার্ম ইভোলিউশন’ বা এলটিই (২০০৯ সালে নরওয়ের ওসলো এবং সুইডেনের স্টকহোমে প্রথম) । ৪জি প্রযুক্তি আসলে একক কোনও প্রযুক্তি নয় । তিনটি উপায়ে এই ৪জি বাস্তবায়ন করা হয়েছে, সেগুলো হলো এইচএসপিএ+ ২১/৪২, ওয়াইম্যাক্স এবং এলটিই । যদিও কিছু মানুষ এলটিইকেই শুধু চতুর্থ প্রজন্মের প্রযুক্তি বলে মনে করে থাকেন । আবার কেউ কেউ বলেন এদের কেউই চতুর্থ প্রজন্মের যে গতি থাকার কথা তা দিতে সক্ষম নয় । নেটওয়ার্কের মান নির্ধারক সংস্থা ‘আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন’ ফোর-জি নামকরণের একটা নির্দিষ্ট মাপকাঠি তৈরি করে দেবার প্রচেষ্টা করেছে ।২০০৮ সালের মার্চে  এই আন্তর্জাতিক সংস্থাটি ৪জি এর জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তুসমূহের একটি রূপরেখা প্রবর্তন করে । মোবাইল ওয়াইম্যাক্স এবং এলটিই-এর প্রথম অবমুক্তির পর থেকে যে সব পরিষেবা প্রতি সেকেন্ডে এক গিগাবাইটের কম গতি প্রদান করে, আইইউটি-আর এর নীতি অনুযায়ী সেগুলোকে ৪জি পরিষেবা বলা যাবে না । কিন্তু সার্ভিস প্রোভাইডার কোম্পানিগুলি সব সময় এটা মানে না । কম গতিসম্পন্ন পরিষেবাকেও অনেকে ৪জি বলে বাজারজাত করে থাকে । ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে, আইটিইউ-আর ৪জি প্রযুক্তির দুটি স্ট্যান্ডার্ড অনুমোদন করে । এর একটি হচ্ছে এলটিই অ্যাডভান্সড এবং অপরটি হচ্ছে ওয়্যারলেসম্যান অ্যাডভান্সড ।

আশা করা যায় যে পরবর্তী প্রজন্মের নেটওয়ার্ক প্রযুক্তিগুলো পূর্ববর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তিগুলোর তুলনায় অধিক সস্তা এবং উন্নততর হবে । ৩জি, ৪জি এর পর এখন চলছে ৫জি নিয়ে ব্যাপক গবেষণা । যেখানে আরো বেশি ডিভাইসকে একত্রে কানেক্ট করানোর প্রশ্ন আসে এবং যেখানে প্রয়োজনীয়তা বাড়ে আরো বেশি ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের, সেখানে অবশ্যই এমন কোন প্রযুক্তি প্রয়োজন যা আরো বেশি ব্যান্ডউইথ কন্ট্রোল করার ক্ষমতা রাখে । মূলত এই বিষয়ের উপর লক্ষ্য করেই ৫জি প্রযুক্তির যাত্রা শুরু । ওয়্যারলেস শিল্পে এখন ৫জি নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে । মোবাইল ফোন অপারেটর, স্মার্টফোন চিপ নির্মাতা, নেটওয়ার্ক যন্ত্রপাতি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ৫ জি বা পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ শুরু করেছে । বর্তমানের ৪জি প্রযুক্তির থেকে ৫জি তে ব্যান্ডউইথ স্পীড কয়েকগুন বেশি । সাধারনভাবে এই প্রযুক্তিতে ১-১০+ গিগাবাইট প্রতি সেকেন্ড স্পীড পাওয়া সম্ভব এবং সবচাইতে মজার ব্যাপার হচ্ছে এতে থাকবে মাত্র ১ মিলি সেকেন্ডের লেটেন্সি ।তাই বুঝতেই পারছেন, ৫জি প্রযুক্তি ব্যবহার করে কিভাবে অনেকটা নাটকীয় রূপে ইন্টারনেট স্পীড বৃদ্ধি পেয়ে যাবে । এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে সহজেই বড় সাইজের ভিডিও ডাউনলোড বা আপলোড করা সম্ভব হবে এবং যারা গেম খেলতে ভালোবাসেন তাদের জন্য যুগান্তকারী পরিবর্তন আসতে চলেছে । ৫জি প্রযুক্তিতে আরেকটি বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি ৯০% কম এনার্জি ব্যয় করে কাজ করবে । যারা ৩জি বা ৪জি তে সেলুলার ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তারা নিশ্চয় জানেন যে, ইন্টারনেট কানেক্ট হওয়ার পড়ে কতো দ্রুত চার্জ ফুরিয়ে যায় ।


            

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here