জীবন শুরু সল্টলেক লাগোয়া বাইপাসে শশা-পেয়ারা বিক্রি করে। দত্তাবাদের ‘দাদা’ হিসেবে তৎকালীন বাম নেতার মদতে তৃনমূল প্রার্থীর বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং ও ভাঙে দত্তাবাদ তথা সল্টলেক এর উঠতি মস্তান সিন্ধু কুণ্ডু। পাশে চলতে থাকে ইমারতি দ্রব্যের কারবার, এলাকার কিছু ছেলে জোগাড় করে গড়ে ওঠে ‘সিন্ধুর সিন্ডিকেট’।
এ হেন সিন্ধু রাজনৈতিক পালাবদলের পর স্বভাবতই, ঢুকে পরে শাসক দলের ছত্রছায়ায়। তোলাবাজি আর সিন্ডিকেট এর নামে গা-জোয়ারি, হুমকি দিয়ে বাড়তে থাকে তার প্রতিপত্তি। দুষ্কৃতি দের সাথে রাজনৈতিক নেতা দের সখ্যতা থেকে দূরে থাকেননি, শাসকদলের তাবড় নেতা-মন্ত্রী, পৌরপিতা। সিন্ধুর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ঘাঁটলেই তার প্রমান মেলে। যেখানে সময় সময় এই সিন্ধুর পাশে দেখা গিয়েছে মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে থেকে শুরু করে বিধায়ক সুজিত বসুকেও। আছেন স্থানীয় কাউন্সিলরও ।
সল্টলেক এর মত সম্ভ্রান্ত ও হাইপ্রোফাইল এলাকায়, তোলাবাজি ও টাকা দাবী করে হুমকির অপরাধে এই নিয়ে তিন বার গ্রেপ্তার হল দত্তাবাদের ত্রাস সিন্ধু কুণ্ডু। প্রথমবার করুণাময়ীর কাছে নির্মীয়মান সুলভ কমপ্লেক্স এর ঠিকাদার স্থানীয় বাসিন্দা দেবলিন ধর কে প্রাননাশ এর হুমকির পাশাপাশি গা-এর জোরে তার কাজ বন্ধ করে দেয়ে সিন্ধু ও তার দলবল। নিরুপায় দেবলিন পুলিশে অভিযোগ জানান।
দ্বিতীয় বার তোলাবাজিতে অভিযুক্ত শাসকদলের কাউন্সিলর অনিন্দ্য চ্যাটার্জীকে গ্রেপ্তার পর তার সহযোগী হিসেবে সিন্ধুকে আবার গ্রেফতার করা হয়, সেবার হুমকি দেওয়া হয়েছিল বিডি ব্লকের বাসিন্দা সন্তোষকুমার লোধ কে ।
গত শুক্রবার স্থানীয় ব্যাবসায়ি কার্তিকচন্দ্র কর্মকারকে ফোনে দুলক্ষ টাকা চেয়ে ফের প্রাণনাশ এর হুমকি দেয় সিন্ধু। পূর্বাচলের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা আতঙ্কিত কার্তিকবাবু তাঁর ছেলেকে নিয়ে দ্বারস্থ হন বিধাননগর থানার। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রায়ে সাথে সাথেই পুলিশ ফের গ্রেফতার করে সিন্ধু কে।
মুম্বাই আন্ডার-ওয়ার্ল্ড নিয়ে আমরা দেখেছি এমন অনেক ফিল্ম যাতে তুলে ধরা হত এই ধরনের অপরাধ, যার পোশাকি নাম extortion.
এখন, স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এলাকার সাধারন মানুষের একটাই প্রশ্ন, এবার কি বন্ধ হবে সিন্ধুর এই তোলাবাজি ? নাকি আইনের ফাঁক গলে বেড়িয়ে, নেতা মন্ত্রীদের ছত্রছায়ায় চলতেই থাকবে এই ‘গুন্ডারাজ’? সেই উত্তরের আশায় বিধাননগরবাসী।