Home আপডেট পাকিস্তানের মতোই স্বৈরতান্ত্রিক দেশ, বাংলাদেশের থেকেও পিছিয়ে ভারত এখন ‘নির্বাচনী স্বৈরতন্ত্র’

পাকিস্তানের মতোই স্বৈরতান্ত্রিক দেশ, বাংলাদেশের থেকেও পিছিয়ে ভারত এখন ‘নির্বাচনী স্বৈরতন্ত্র’

পাকিস্তানের মতোই স্বৈরতান্ত্রিক দেশ, বাংলাদেশের থেকেও পিছিয়ে ভারত এখন ‘নির্বাচনী স্বৈরতন্ত্র’

বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রকে ‘নির্বাচনী স্বৈরতন্ত্র’  আখ্যা দিল সুইডেনের ভি-ডেম (ভ্যারাইটিজ অফ ডেমোক্র্যাসি) ইনস্টিটিউট (V-Dem Institute)। সংস্থাটির বার্ষিক গণতন্ত্র রিপোর্টে ভারতকে ওই আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, “গত দশ বছরে বিশ্বের যে সব দেশে সব চেয়ে বেশি নাটকীয় পরিবর্তন ঘটেছে, তার মধ্যে ভারত অন্যতম।”

সিভিল সোসাইটি গ্রুপ, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ইত্যাদির মতো গণতন্ত্রের যে সব বহুবিধ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, সেগুলির সীমাবদ্ধকরণের কারণেই ভারত ‘নির্বাচনী স্বৈরতন্ত্র’ আখ্যা পেয়েছে। রিপোর্টে সংবাদমাধ্যমের উপর খবরদারি এবং ‘মুখ বন্ধ করা’ এবং মানহানি ও দেশদ্রোহ সংক্রান্ত আইনের যথেচ্ছ ব্যবহারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে।

২০১৪ সালে সুইডিশ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী স্টাফান লিন্ডবার্গের হাতে গড়া ভি-ডেম ইনস্টিটিউট একটি নিরপেক্ষ গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এরা প্রতি বছর বিভিন্ন দেশে গণতন্ত্রের অবস্থা নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করে। বিশ্বের ২০২টি দেশের প্রায় ৩ কোটি ডেটাপয়েন্ট থেকে তৈরি করা ডেটাসেটের ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশের গণতন্ত্রের মান প্রকাশ করা হয় ওই রিপোর্টে।

যে ভারতকে আগে ‘নির্বাচনী গণতন্ত্র’ হিসাবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছিল, “১৩৭ কোটি মানুষের দেশ বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র সেই ভারতবর্ষ নির্বাচনী স্বৈরতন্ত্রে রূপান্তরিত হয়েছে” বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে।

‘অটোক্র্যাটাইজেশন গোস ভাইরাল’  শীর্ষক রিপোর্টে ভি-ডেম ইনস্টিটিউট বলেছে, উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক সূচকে (লিবারেল ডেমোক্র্যাসি ইন্ডেক্স) ভারত ২৩% পয়েন্ট নেমে এসেছে। ২০১৩ সালে যেখানে ভারতের স্কোর ছিল ০.৫৭ (০-১ স্কেলে), সেখানে ২০২০-এর ভারতের স্কোর দাঁড়ায় ০.৩৪। রিপোর্টে বলা হয়েছে, “এই অবনতির অনেকটাই ঘটেছে ২০১৪ সালে বিজেপির জয় এবং তাদের হিন্দু জাতীয়তাবাদী কর্মসূচির জন্য।” রিপোর্টে ভারতের সঙ্গে একই তালিকায় রাখা হয়েছে হাঙ্গেরি ও তুরস্ককে।

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, “এ ক্ষেত্রে (সেনসরশিপ) ভারত এখন পাকিস্তানের মতোই স্বৈরতান্ত্রিক দেশ এবং তাদের অবস্থা প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও নেপালের চেয়েও খারাপ। সাধারণ ভাবে মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার তার সমালোচকদের মুখ বন্ধ করার জন্য দেশদ্রোহ, মানহানি এবং সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধী আইন ব্যবহার করেছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর ৭ হাজারেরও বেশি মানুষের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়েছে এবং অভিযুক্তদের মধ্যে বেশির ভাগই শাসক দলের সমালোচক।”

 


রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের চুপ করাতে মানহানির বার বার ব্যবহার এবং অবৈধ ক্রিয়াকলাপ প্রতিরোধ আইনের (ইউএপিএ, UAPA) ব্যবহার নাগরিক সমাজকে দমন করেছে এবং ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি সংবিধানের যে দায়বদ্ধতা, তার বিরুদ্ধে গিয়েছে।

উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই মার্কিন সংগঠন ‘ফ্রিডম হাউজ’ (Freedom House) বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক অধিকার ও স্বাধীনতা সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে। এ বারের সেই রিপোর্টে ভারত অধিকার ও স্বাধীনতার দিক দিয়ে এখন ‘আংশিক মুক্ত’ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে।