[ad_1]
সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে গোটা এলাকায় আধাসেনা মোতায়েনের দাবি জানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শুক্রবার এই মর্মে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখেছেন তিনি। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় সুকান্তবাবু এই ঘটনার সঙ্গে রোহিঙ্গা যোগের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন।
এদিন তিনি বলেন, ‘সন্দেশখালিতে প্রমাণ হয়ে গেল আমরা ঠিকই বলছিলাম। ওখানে শাহজাহানের মতো লোকেরা রোহিঙ্গাদেরকে বসিয়ে ভারতবিরোধী একটি শক্তি তৈরি করার চেষ্টা করছে। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তথ্য আছে। আজকে যেটা দেখলাম সেটা ট্রেলার। তৃণমূল কংগ্রেস এই হার্মাদ – জেহাদিদের হাতে গোটা রাজ্যটাকে ছেড়ে দিচ্ছে। আগামীদিনে বাংলার সব জায়গায় এরকম হবে। পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান রাজ্য সরকার ভারতের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষার জন্য ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। সমস্ত ভারতবিরোধী কাজ পশ্চিমবঙ্গ থেকেই হচ্ছে এরকম একের পর এক দেখা যাচ্ছে’।
এর পর জানা যায়, সন্দেশখালির ঘটনার কথা জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। সেই চিঠিতে ইডি আধিকারিকরা যাতে সন্দেশখালিতে বিনা বাধায় তদন্তপ্রক্রিয়া চালাতে পারেন সেজন্য গোটা এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার সকালে সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে যান ইডির আধিকারিকরা। অনেক ডাকাডাকিতেও কেউ সাড়া না দেওয়ায় বাড়ির তালা ভাঙার চেষ্টা শুরু করেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। তখনই বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েক শ’ নারী – পুরুষ দুষ্কৃতী কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ও ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় একাধিক ইডি আধিকারিকের মাথা ফাটে। এর পর গাড়িতে করে এলাকা ছাড়ার চেষ্টা করেন ইডি আধিকারিকরা। অভিযোগ গাড়ি থামিয়ে ফের মারধর করা হয় তাঁদের। ভাঙচুর করা হয় গাড়ি। প্রাণ বাঁচাতে অটো রিকশয় করে এলাকা ছাড়েন তাঁরা। এর পর এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ শুরু হয়।
এই ঘটনার পর রাজ্যপালকে পদক্ষেপ করাতে আহ্বান জানিয়ে টুইট করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকরী। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যে সাংবিধানিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে বলে কেন্দ্রকে রিপোর্ট দেওয়া উচিত রাজ্যপালের।
এর পর জারি এক অডিয়ো বার্তায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেছেন, ‘যে ভয়াবহ ঘটনার খবর সন্দেশখালি থেকে পেয়েছি তা উদ্বেগজনক ও অগ্রহণযোগ্য। বর্বরতা ও তাণ্ডব বন্ধ করা গণতন্ত্রে যে কোনও সভ্য সরকারের দায়িত্ব। সরকার তার প্রাথমিক দায়িত্ব পালনে অক্ষম হলে সংবিধান তার পথে চলবে। রাজ্যপাল হিসাবে এই ঘটনায় উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে আমি আমার সমস্ত সাংবিধানিক অধিকার সংরক্ষিত রাখছি’।
রাজ্যকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘পেশিশক্তির প্রদর্শন ও কাগুজে বাঘদের দিয়ে কদমতাল করিয়ে বাংলার মানুষের কোনও উপকার হবে না। জঙ্গলরাজ ও গুন্ডারাজ শুধু মুর্খের স্বর্গে কাজ করে। বাংলা কোনও বানানা রিপাবলিক নয়। সরকারের তাদের পদক্ষেপ করা উচিত। ভোটপূর্ব এই হিংসা নিশ্চিতভাবে অবিলম্বে অবসান হওয়া উচিত। এই হিংসার দায় শুধুমাত্র বর্তায় সরকারের ওপর। সরকারের উচিত চোখ মেলে বাস্তবকে দেখা এবং যথাযথ পদক্ষেপ করা। নইলে তাদের এর ফল ভোগার জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত’।