[ad_1]
নামাজ পড়তে যাবার সময় দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন তৃণমূল নেতা তথা অঞ্চল সভাপতি সইফুদ্দিন লস্কর। ভোরে নামাজ পড়তে যাবার সময় দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন তিনি। তার পর থেকে অগ্নিগর্ভ জয়নগর। একধিক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের দাবি এলাকায় জনপ্রিয় নেতা ছিলেন সফুদ্দিন। আবার গ্রামবাসীদের কথা যথেষ্ট প্রভাবশালীও। কী ভাবে তিনি এত প্রভাবশালী হয়ে উঠলেন?
নিহতের স্ত্রী জানিয়েছেন, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে সিপিএম করত সইফুদ্দিন লস্কর। রাজ্যে পরিবর্তনের সরকার আসার পর তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। আগে মুহূরির কাজ করতেন। এর সঙ্গে পোস্ট অফিসের কাজও করেতেন। সেই সূত্র ধরে সেই সময় থানার পুলিশের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে।
সইফুদ্দিনের নিজস্ব অনুগামী ছিল। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর দলের একজন নির্ভর কর্মী হয়ে ওঠেন। বিভিন্ন সমস্যার সময় দলে ক্রাইসিস ম্যানেজারের কাজ করে নিজের নির্ভরযোগ্যতা আরও বাড়িয়ে তোলেন।
আবাস যোজনার দুর্নীতিতেও তাঁর নাম ওঠে। ২০১৮ সালে স্ত্রী সেরিফা বিবিকে বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতে দাঁড় করান তিনি। জিতেও যান স্ত্রী। পঞ্চায়েত প্রধান হন সইফুদ্দিনের স্ত্রী। তিনি নিজেও ভোটে দাঁড়িয়ে জেতেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বারুইপুর পূর্ব বিধানসভার তৃণমূলের বিধায়ক বিভাস সরদারের ঘনিষ্ট ছিলেন তিনি। জয়নগর এলাকার ছটি পঞ্চায়েত ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে। অঞ্চলে তিনিই ছিলেন শেষ কথা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পুলিশও তাঁকে সমঝে চলতো।
(পড়তে পারেন। সন্ত্রাস ছড়াতে খুন, দাবি তৃণমূলের, বখরার বিবাদের বলি, পালটা দাবি বাম – বিজেপির)
সইফুদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার পর তৃণমূল নেতৃত্ব আঙুল তোলে সিপিমের দিকে। সে সব বাড়িতে আগুন লাগানো হয় তার বেশির ভাগ বাড়ি সিপিএস কর্মী-সমর্থকদের। নিহত তৃণমূল নেতার বাবার দাবি, এর আগেও তাঁকে খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল। তার স্ত্রীর দাবি, দলের অন্দরে সইফুদ্দিনের বিরুদ্ধে গোষ্ঠী তৈরি হয়েছিল।
খুনের পর তৃণমূল বিধায়ক সওকত মোল্লা বলেন, ‘সিপিএম ও বিজেপি আশ্রিত সমাজবিরোধীরা খুব কাছ থেকে গুলি করে সইফুদ্দিনকে খুন করেছে। গোটা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতেই এই খুন করেছে বিরোধী দলগুলি।’
অন্যদিকে, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘মাফিয়া নেতা বলেই তাঁকে আসেপাশের সবাই চেনেন। বিস্তীর্ণ এলাকায় তাঁর মাফিয়ারাজ চলে। উনি পুলিশের ডাকমাস্টার। সেই সব তোলাবাজির টাকার বখরার লড়াইয়ের জেরেই এই খুন। গোটা রাজ্যে তৃণমূলে এই চলছে। তৃণমূলের এই বখরার লড়াইয়ের দায় অন্য কারও ঘাড়ে চাপানোর মানে হয় না।’