কয়লা এবং গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল এবং সায়গল হোসেন এখন তিহাড় জেলে বন্দি। কিন্তু তাতেও শেষ হচ্ছে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাত থেকে রেহাই। এবার জিলেটিন স্টিক উদ্ধার মামলাতে জেরার মুখে পড়তে চলেছেন বীরভূম জেলার দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর নিরাপত্তারক্ষী সায়গল হোসেন। বীরভূমের মহম্মদবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ জিলেটিন স্টিক উদ্ধার হয়েছিল। ওই ঘটনায় অনুব্রত–সায়গলকে নয়াদিল্লির তিহাড় জেলে গিয়ে জেরার জন্য ব্যাঙ্কশাল কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল এনআইএ। তাতে অনুমোদন মিলেছে বলে খবর। এনআইএ আধিকারিকরা তিহাড় জেলে গিয়ে জেরা শুরু করবেন।
এদিকে ২০২২ সালের ৩০ জুন বীরভূমের একটি ভ্যান থেকে ৮১ হাজার ডিটোনেটর উদ্ধার হয়েছিল। ওই ঘটনায় রীতিমতো আলোড়ন পড়ে যায় বাংলায়। ওই বছর ২৯ সেপ্টেম্বর ওই মামলার তদন্তভার হাতে নেয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। এই বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় এনআইএ’র আতসকাচে ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল ও সায়গল হোসেন। এই বিস্ফোরক উদ্ধারে ধৃতদের জেরা করে তাঁদের নাম পাওয়া গিয়েছিল বলে দাবি এনআইএ’র। বীরভূম জেলায় অনুব্রত এবং সায়গলের যোগসাজশেই জিলেটিন স্টিক মজুত করা হচ্ছিল বলে তদন্তকারীদের অনুমান।
অন্যদিকে এই মামলায় এখনও পর্যন্ত তিনটি চার্জশিট পেশ করেছে এনআইএ। আর ১২ হাজার পাতার চার্জশিটের একাধিক জায়গায় অনুব্রত মণ্ডলের নাম উল্লেখ রয়েছে বলে সূত্রের খবর। আর সেই সূত্রেই তাঁদের জেরা করতে চান তদন্তকারীরা। ২০২২ সালের অগস্ট মাসে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। তার আগে দিল্লিতে গ্রেফতার হন সায়গল হোসেন। প্রথমে আসানসোল সিবিআই জেলে রাখা হলেও পরে তদন্তের স্বার্থে নয়াদিল্লির তিহাড় জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যাও। লম্বা সময় জেলে কেটে গেলেও জামিন মেলেনি এই দু’জনের এবং সুকন্যার।
আরও পড়ুন: অমিত শাহের সভা ঘিরে বাড়ছে উত্তাপ, বিধানসভায় কালো পোশাক পরার সিদ্ধান্ত তৃণমূলের
তবে সূত্রের খবর, সায়গল হোসেনকে আগে জেরা করার অনুমতি চেয়ে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে আবেদন জানায় এনআইএ। সেই আবেদনে সাড়া মেলায় এবার জেরা করার তৎপরতা শুরু হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তিহাড় জেলে গিয়ে সায়গল হোসেনকে জেরা করা হবে। তার পর জেরার মুখে পড়বেন অনুব্রত মণ্ডল। যদিও এই জেরা থেকে কোনও চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে কিনা সেটা বোঝা যাচ্ছে না। কিন্তু যদি নয়া মোড় নেয় তাহলে জেলের মেয়াদ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।