গত সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক ছিল মুম্বইয়ে। সেই বৈঠকের আগে দিল্লিতে ভোরবেলা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে একটি বৈঠক হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই বৈঠককে আগেও কটাক্ষ করেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। শনিবার সেই একই বৈঠক নিয়ে ফের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর গড়ে সরব হয়েছেন তিনি। তাঁর সেই মন্তব্যকে বিঁধলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি একে ইন্ডিয়া জোটকে ভাঙার চক্রান্ত বলে মন্তব্য করেন। মন্ত্রী কথায়, মিরজাফরের মতো আচারণ করছেন সেলিম।
বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটে থাকলেও প্রথম থেকেই সিপিএমের অবস্থান ধোঁয়াশাপূর্ণ। সমন্বয় কমিটি তৈরি হলেও সেই কমিটিতে নিজেদের কোনও প্রতিনিধি রাখেনি তারা। জোটে তৃণমূল ও কংগ্রেসের সঙ্গে থাকলেও রাজ্যে তারা তৃণমূলের বিরোধী অবস্থান বজায় রেখেছে। একই সঙ্গে আবার প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে ভোট লড়লেও তাদের কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না সিপিএম।
মুর্শিদাবাদের রানিনগরে বাম যুব সংগঠন আয়োজিত ‘ইনসাফ’ যাত্রা উপলক্ষে বক্তব্য রাখছিলেন সেলিম। সেখানে তিনি বলেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ভোরের অন্ধকারে স্পেশাল ট্রেন নিয়ে রাহুল গাঁধীর ঘরে চলে গেলেন। আমরা তখন বলছি ‘চোর ধরো, জেল ভরো’। চোর তখন গিয়ে বলছে কংগ্রেসের পায়ে পড়ে, দাদা আমাকে বাঁচাও।’
এদিন কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়ে সেলিম বলেন, ‘কংগ্রেস দলকেও বুঝতে হবে, ২০১১-তে তারা তৃণমূলকে যদি সমর্থন না করত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হিম্মত ছিল না রাইটার্স বিল্ডিংয়ে পৌঁছনোর।’
এরই প্রেক্ষিতে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘ওঁর এত মাথা ব্যথা হচ্ছে কেন? উনি কি ইন্ডিয়া জোট ভাঙার চক্রান্তে জড়িত হয়ে পড়ছেন? যেখানে ইন্ডিয়া শক্তিশালী হয়ে যাচ্ছে, তাই সেটাকে ভাঙার জন্য মিরজাফরের কাজ করছেন। ’
যদিও সেলিমের এই মন্তব্যের পর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমরা যা বোঝার বুঝতে পেরেছি। রাহুল গান্ধীর কাছে কেউ যদি পা ধরতে যায়, তা হলে রাহুল গান্ধীই বলবে, পা ধরতে যেও না! আমরা সেটা বলতে পারি না। কোনও বিষয়ের গভীরে না গিয়ে এ ভাবে আলটপকা মন্তব্য করা উচিত নয়।’
সেলিমের এই মন্তব্যের পর রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘এটা ওদের ইন্ডিয়া জোটের ব্যাপার। কে কার সঙ্গে ফিস ফ্রাই খাবে। কে কার কাছে ছুটে যাবে, একেবারেই ওদের নিজস্ব ব্যাপার।’