#মুম্বই: ১৯৮২ সাল। পরিচালক বব্বর সুভাষ একদিন বাপি লাহিড়িকে বললেন, ‘একটা নতুন ছেলে আছে। ওকে নিয়ে কিছু একটা দারুণ করতে হবে।” তখনই ‘ডিস্কো ডান্সার’-এর ভাবনা ছিল পরিচালকের মাথায়। কিছু একটা মিউজিক্যাল করতে হবে, শুনেই বাপ্পি লাহিড়ি ভেবে ফেলেন বাকিটা । কিন্তু ছেলেটাকে তখনও জানা হয়নি তাঁর। তবে ততক্ষণে তৈরি হয়ে গিয়েছে ‘ডিস্কো ডান্সার’-এর সুর। বাপ্পি লাহিড়ীর গানে সেদিন নেচেছিলেন ছবিতে থাকা এই খুদে৷
‘ডিস্কো ডান্সার’ তাঁকে বলিউডের সেরা নায়কদের তালিকায় এনে ফেলে। অথচ এর আগেও এই ছেলেটার ঝুলিতে বেশ কিছু ছবি ছিল। মৃণাল সেনের পরিচালনায় ১৯৭৬ ‘মৃগয়া’ ছবির জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার তাঁর ঝুলিতে। কিন্তু বলিউডে মাটি পেতে সময় লাগছিল তাঁর।
সম্প্রতি এক বাংলা রিয়্যালিটি শো-তে এসে তিনি বলেন, “নাচ করে আমি আমার প্রথম অর্জন শুরু করেছি। তার কারণ আমার গায়ের রঙের জন্য কেউ আমাকে কাজ দেয়নি একটা সময়। সবাই গালিগালাজ দিয়েছে। কী না কী বলেছে আমায়, লাঞ্ছনার যদি কোনও সীমা থাকে সেটাও ছাড়িয়ে গিয়েছিল অনেকে। কিন্তু আমার জীবনের অর্জন আমি করেছি নাচ দিয়ে। আর তারপর সেই নাচ আমাকে পৃথিবী-বিখ্যাত করেছে। আমি বলি আমাকে দেখেও এখন আপনাদের বলতে ইচ্ছে করে? একটা নাচ করে ২০ সি মধু সেন গার্ডেন লেনের গরীব ঘরের ছেলে পৃথিবী বিখ্যাত হয়েছে, তারপরেও আপনারা এই কথা কী করে বলেন?”
২০ সি মধু সেন গার্ডেন লেনের গরীব ঘরের ছেলেটি মিঠুন চক্রবর্তী৷ আজ সকলের প্রিয় মহাগুরু৷ যদিও তাঁর আসল নাম গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী, তবে জনসমক্ষে তিনি মিঠুন দা নামেই বেশি পরিচিত। মৃণাল সেনের মৃগয়াতে অভিনয় করে বলিউডে পা রাখেন মিঠুন। এই সিনেমায় অসাধারণ অভিনয় প্রতিভার জন্য তিনি ন্যশনাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডে সেরা অভিনেতার সম্মান পান। এরপর দো আনজানে ও ফুল খিলে হ্যায় গুলশান গুলশান-এ অভিনয় করেন। মুঝে ইন্সাফ চাহিয়ে, ঘর এক মন্দির, প্যার ঝুঠা নেহি, স্বর্গ সে সুন্দর এবং প্যায়ার কা মন্দির সিনেমায় অভিনয় করেন৷ প্রায় ৪০০ এর বেশি ফিল্মে অভিনয় করেছেন। এরপর ১৯৮২ সালে ডিস্কো ড্যন্সার সিনেমায় অভিনয় করে তিনি পুনরায় প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তিনি শুধু বলিউড নয় বাংলা, ওড়িয়া, তামিল, ভোজপুরি, পাঞ্জাবি, কন্নর ভাষায় সিনেমা করেছেন। ২০০৭ সালে তাকে লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডে সম্মানিত করা হয়।
Tags: Bollywood actor