কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাত, শিবাজি মাহাত এবং অনুপ মাহাত এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সি প্রশংসা করলেন। ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্সে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাত বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী কুড়মিদের জন্য যা যা করেছেন তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। উনি যা করেছেন, আগে কোনও রাজ্য সরকার করেনি।’ এই বক্তব্য মেনে নিতে নারাজ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আজ, বুধবার বিশ্ব আদিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে পিংবনীর সভা থেকে কুড়মি নেতা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছেন বলে আক্রমণ করলেন শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। তারপর ওই বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘প্রথমত আমরা ওঁর সঙ্গে দেখা করে করম পরবের পূর্ণ দিবসের ছুটির জন্য ওঁকে আমরা ধন্যবাদ জানালাম। কুড়মি জাতিকে এসটি তালিকার অন্তর্ভুক্ত করার দাবির বিষয়েও ওঁর সঙ্গে আলোচনা করলাম।’ এই ঘটনার পরই কুড়মি সম্প্রদায় এবং জাকাত মাঝি পারগনার সদস্যদের ‘সতর্ক’ করে শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘আপনাদের টুপি পরানোর চেষ্টা করছেন। টুপি পরবেন না।’ যদিও কুড়মি সমাজের নেতা রাজেশ মাহাত সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘আমরা জাতিসত্তার আন্দোলন করছি। আমরা রাজ্যের এবং কেন্দ্রের শত্রু নই।’
এদিকে শুভেন্দু সভা করেন পিংবনীতে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করেন আজ ঝাড়গ্রামে। এই দুই জায়গার দূরত্ব ৫০ কিমি। এখান থেকে শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেন, ‘উনি শুধু একা সভা করবেন। পশ্চিমবঙ্গ যেন ওঁর একার। আগে রাজেশকে ক্রিমিনাল বলেছিলেন উনি। এখন সেই রাজেশের সঙ্গে বৈঠক। আর রাজেশকেও বলিহারি। সে গিয়ে মমতার পায়ে পড়েছেন। তবে রাজেশ বিক্রি হতে পারে, কুড়মিরা বিক্রি হওয়ার লোক নয়। জনজাতির লোকজন বিক্রি হওয়ার নয়। রাজেশ মাহাতোকে কিনে নিয়েছেন।’ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের প্রতিনিধিরাও।
আরও পড়ুন: সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের বাড়ি ঘেরাও করলেন যৌনকর্মীরা, অপমানের জের
অন্যদিকে এদিন ঝাড়গ্রাম থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করেন। মণিপুরের ঘটনাকে টেনে এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখানের বিজেপি নেতারা মানুষের জন্য কাজ করেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর পাল্টা শুভেন্দু অধিকারী মমতার সরকারের বিরুদ্ধে লক্ষাধিক ভুয়ো এসসি–এসটি শংসাপত্র তৈরির অভিযোগ তুলেছেন। যদিও নন্দীগ্রামের বিধায়কের মন্তব্যের প্রসঙ্গে কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাত সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘শিরদাঁড়া বিক্রি নাই’।