রোগী এক হাসপাতাল থেকে আর এক হাসপাতালে রেফার করে দেওয়ার রেওয়াজ পছন্দ নয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সে কথা তিনি বারবার বলেছেনও। কিন্তু তার পরও জেলা থেকে রোগী রেফার হয়ে কলকাতায় চলে আসে। তাতে শহরের হাসপাতালে চাপ বাড়ে। আবার গ্রামের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকেও রোগী রেফার করা হয়। তখন সেই রোগী মহকুমা কিংবা জেলা হাসপাতালে ভর্তি হন। কলকাতা শহরে ঠিক এমন ঘটনা দেখা যায় না। রোগী রেফার হয়। কিন্তু ওই রোগী পুর–স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বড় হাসপাতাল বা মেডিকেল কলেজে যাবেন কিনা তার কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম বেঁধে দেওয়া নেই।
এই পরিস্থিতিতে এবার স্বাস্থ্য দফতর একটি নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশের জেরে এবার নিয়মে বদল আসতে চলেছে। কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডের ১৬টি বরো এলাকা রয়েছে। এবার তাদের জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হল ‘রেফারেল হাসপাতাল’। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এই সিদ্ধান্তে রোগীকে এক হাসপাতাল থেকে অন্যত্র ঘুরে বেড়াতে হবে না। তাছাড়া শহরের হাসপাতালগুলিতেও চাপ অনেকটা কমে যাবে। এই নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
ঠিক কী আছে বিজ্ঞপ্তিতে? এই বিজ্ঞপ্তিতে কোন বরো এলাকার রোগীকে কোথায় রেফার করা যাবে তার উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, কলকাতা পুরসভার ১ থেকে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত পুর–স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে রেফার করতে হবে নর্থ সুবার্বন এবং আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আর কলকাতা পুরসভার ২ নম্বর বরোর পুর–স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে রেফার করা যাবে রোগীকে আরজি কর হাসপাতালে এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। ৩ নম্বর বরোর ক্ষেত্রে থাকছে আরজি কর এবং নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ। তবে ৪, ৫ এবং ৬ নম্বর বরোর জন্য থাকছে কলকাতা মেডিক্যাল, ট্রপিক্যাল এবং নীলরতন সরকার হাসপাতাল।
আর কী জানা যাচ্ছে? অন্যদিকে বরো নম্বর—৭, ৮, ৯, ১০–এর জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে ন্যাশানাল মেডিক্যাল, শম্ভুনাথ হাসপাতাল, এমআর বাঙুর এবং পিজি হাসপাতাল। আর ১১ থেকে ১৬ নম্বর বরো পর্যন্ত বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল, এমআর বাঙুর এবং গার্ডেনরিচ স্টেট জেনারেল হাসপাতালকে চিহ্নিত করা হয়েছে। পুর–স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে এসব জায়গায় রেফার করা যাবে। এই বিজ্ঞপ্তিতে সই করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সিদ্ধার্থ নিয়োগী এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা ডাঃ দেবাশিস ভট্টাচার্য। ন্যাশানাল আরবান হেলথ মিশনের অধিকর্তা সৌমিত্র মোহনের নির্দেশে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।