সাংবাদিক বৈঠকে দলীয় কর্মসূচি ঘোষণা করতে গিয়ে অযোধ্যার রাম মন্দিরের নাম উচ্চারণ করা এড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতর নবান্নে বসেই তৃণমূলনেত্রী হিসাবে সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। যদিও তা নতুন কিছু নয়। সেখানেই ২২ জানুয়ারি রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিন পালটা কর্মসূচি ঘোষণা করতে গিয়ে রাম মন্দিরকে ‘বিভিন্ন মন্দির’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিন মমতা বলেন, ‘আপনারা আমাকে বারবার জিজ্ঞাসা করছেন বিভিন্ন মন্দির নিয়ে। আমি বার বার বলেছি ধর্ম যার যার আপনার, উৎসব কিন্তু সবার। ২২ জানুয়ারি আমি নিজে দলীয় ভাবে একটা ব়্যালি করব। আমি প্রথমে নিজে কালী মন্দিরে যাব। ওটা সবাই যাবে না। আমি মা কালীকে পুজো দিয়ে হাজরা থেকে সর্বধর্মের মানুষকে নিয়ে মিছিল করে পার্ক সার্কাস ময়দানে গিয়ে আমরা একটা মিটিং করব। মা কালীকে ছুঁয়ে, মন্দির – মসজিদ – গুরুদ্বার, ওখানে অনেক গীর্জাও আছে সব কিছুকে ছুঁয়ে সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে আমরা একটা ব়্যালি করব। আমরা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মিছিলটা করব। শুভানুধ্যায়ীরা আসতে পারেন সংহতি মিছিলে। এছাড়া প্রতিটা জেলায় ব্লকে ব্লকে ২২ জানুয়ারি বেলা ৩টায় সম্প্রীতি মিছিল হবে সবাইকে নিয়ে’।
এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর হাওড়ার ডুমুরজলা হেলিপ্যাড থেকে উত্তর ২৪ পরগনায় দলীয় জনসভায় যাওয়ার জন্য হেলিকপ্টারে ওঠার আগে মুখ্যমন্ত্রীকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আপনি কি রাম মন্দিরের উদ্বোধনে যাচ্ছেন। প্রশ্ন শুনেই মেজাজ হারান মমতা। বলেন, ‘তোমরা সব জেনে বসে আছো, আমি তো কিছু জানিই না।’ বলতে বলতেই হেলিকপ্টারের দিকে হাঁটতে শুরু করেন তিনি। সঙ্গে থাকা প্রশাসনিক আধিকারিকদের এই প্রশ্ন করার জন্য সাংবাদিকের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করতে শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের প্রচারে তাঁর কনভয়ের পাশে জয় শ্রীরাম ধ্বনী দেওয়ায় গাড়ি থেকে নেমে জনতাকে তাড়া করার অভিযোগ উঠেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে।
এদিন ফের একবার মুখ্যমন্ত্রীর আচরণে রাম মন্দিরের উদ্বোধন নিয়ে তাঁর অস্বস্তিই প্রকাশ পেল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। রাম মন্দিরের আবেগ যে লোকসভা ভোটে ঠেকানো মুশকিল হবে তা বুঝেই তিনি পালটা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বলে দাবি তাঁদের।
২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন কবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেদিনই রাম লালার মূর্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে।