সেই বাম আমল থেকেই বরাবরই দেখা গিয়েছে রাজনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্রের নাম নন্দীগ্রাম। এদিকে এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেই নন্দীগ্রামের দুটি ব্লকে ভালো ফলাফল করেছে বিজেপি। কিন্তু তাদের আশঙ্কা, বোর্ড গঠনের আগেই তাদের গ্রেফতার করতে পারে পুলিশ। পুরানো মামলায় তাদের ফাঁসিয়ে দেওয়া হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা। আর তার জেরেই এবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন।
মঙ্গলবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে এই মামলার শুনানি রয়েছে। নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। এই নন্দীগ্রাম আসন থেকেই গত বিধানসভা নির্বাচনে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেখানে জয়ের ধারা অব্যহত রাখতে চেষ্টার কোনও কসুর করেনি বিজেপি। কিছু আসনে মোটের উপর ভালো ফল করেছে গেরুয়া শিবির।
কিন্তু বোর্ড গঠনের আগে এবার নয়া আশঙ্কা। নন্দীগ্রামের ২টি ব্লকের ১৭টি পঞ্চায়েতের জয়ী বিজেপি প্রার্থীদের দাবি বোর্ড গঠনের জন্য তারা যাতে হাজির হতে না পারেন সেজন্য এবার পুলিশ প্রশাসনকে কাজে লাগাচ্ছে রাজ্যের শাসকদল। ঠিক কী তাদের অভিযোগ?
বিজেপির জয়ী প্রার্থীদের দাবি, আচমকাই পুরানো মামলার ফাইল খুলতে শুরু করেছে পুলিশ। খুঁজে পেতে সেই পুরানো মামলায় তাদের ডেকে পাঠানো হচ্ছে। জয়ী প্রার্থীরা নিজেদের এলাকায় ঢুকতে পারছেন না। তাঁদের নানাভাবে ভয় দেখানো হচ্ছে। মূলত বোর্ড গঠনের আগেই তাদের গ্রেফতার করার জন্য নানাভাবে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সেকারণে তাঁরা এবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করেছেন।
এদিকে রাজ্যের একাধিক পঞ্চায়েতেই বিরোধীদের বোর্ড তৈরি আটকাতে একেবারে উঠেপড়ে লেগেছে শাসকদল, এমনটাই অভিযোগ উঠেছে। রানাঘাট ১ নম্বর ব্লক, হবিবপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা সহ বিভিন্ন জেলায় বিরোধীদের বোর্ড গঠনে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ। এনিয়ে এবার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তারা।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, আসলে একেবারে বিরোধীশূন্য় পঞ্চায়েত গড়তে চায় তৃণমূল। সেকারণেই ছলে, বলে কৌশলে নানা উদ্যোগ। এদিকে যে সমস্ত আসনে কোনওভাবে বিরোধীরা জিতে গিয়ে সংখ্য়াগরিষ্ঠ হয়ে গিয়েছেন, সেই আসনগুলি নিয়ে তারা যাতে বোর্ড গঠন করতে না পারেন সেকারণে মরিয়া শাসকদল। এর আগে নন্দীগ্রামের ১৫জন বিজয়ী প্রার্থী আদালতের আবেদন করেছিলেন তাদের গ্রেফতার করা হতে পারে। এরপরই তাদের গ্রেফতারির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছিল বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর বেঞ্চ।