কলকাতা: কামাল তিতাস সাধু৷ অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন৷ সেটা যে জাস্ট ফ্লুক নয় তা আরও একবার প্রমাণ করলেন বাংলার তিতাস৷ এশিয়ান গেমসের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বল হাতে ৩ উইকেট নিলেন৷ ৪ ওভারে ৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন৷
মহিলাদের বিশ্বকাপের ফাইনালে সেরা, এশিয়ান গেমসে বাংলার চুঁচুড়ার মেয়ে তিতাস সাধুর চমৎকার পারফরম্যান্স। ২৫ তারিখ সোনা পেয়েই যেন নিজের জন্মদিনের সেলিব্রেশন শুরু করলেন৷ ২৯ সেপ্টেম্বর ১৮ পেরিয়ে ১৯ পড়বেন তিনি৷ তাঁর আগেই মেগা খবর ফের একবার চুঁচুড়া সরগরম৷
তিতাস ছেলেদের সঙ্গে অনুশীলন করেই ক্রিকেট শুরু করেছিলেন। সেই ছোট বয়সে পুরুষদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলে বড় হয়ে ওঠা বঙ্গললনা এখন ফের চর্চায়৷
আরও পড়ুন – Asian Games 2023: সোমবার সকালে সুখবর, সোনা এল শ্যুটিংয়ে
ঝুলনের উত্তরসূরি ভাবা হচ্ছে বাংলার তিতাসকে৷ কোথা থেকে এল এই মেয়ে। কী ভাবে তিতাসের উত্থান। বিভিন্ন প্রশ্ন নিয়ে চর্চা চলছে। বিশ্বকাপের ফাইনালে দারুণ পারফরম্যান্স করে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ হওয়া মেয়েটিকে সেই সময় যাঁরা চেনেননি তাঁদের জন্য ফের একবার তিতাসের জীবনের জানা- অজানা কাহিনী। হুগলির চুঁচুড়ার মেয়ে তিতাসের বাবা রনজিৎ সাধু নিজেও ছিলেন অ্যাথলিট। ক্রীড়াবিদের মেয়ে ক্রিকেটে আগ্রহী। তাঁর ক্রিকেট প্রতিভা প্রথম নজরে পড়ে বাংলার রনজি দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার প্রিয়ঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের। তারপর থেকেই গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন তিনি। মহিলা ক্রিকেটার হলেও তিতাসকে নিয়মিত ছেলেদের সঙ্গে খেলাতেন কোচ।
তিতাসের প্রাক্তন কোচ প্রিয়ঙ্কর বলেন, “অনূর্ধ্ব ১৫, অনূর্ধ্ব ১৭ বিভাগের টুর্নামেন্টে তিতাস ম্যান অব দ্য ম্যাচ, ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছে। বিশ্বকাপ চলাকালীন রাতের দিকে ওর সঙ্গে কথা হত। ফাইনালের আগেও হয়েছে। শেষ পর্যন্ত এই সাফল্য দেখে ভাল লাগছে। অদ্ভুত একটা তৃপ্তি৷”
তিনি আরও বলেন, “ক্রিকেটার গড়ে তুলতে একটা পরিবেশ পরিস্থিতি দরকার। তিতাসকে দেখে মনে হয়েছিল লম্বা রেসের ঘোড়া। তখনই আমি শিবশঙ্কর পালকে দেখতে বলেছিলাম। ম্যাকো সেই সময় মহিলাদের কোচ ছিল। সেই ভরসা যে মিথ্যে ছিল না তা দেখা যাচ্ছে।”
ফাইনালে দারুণ বল করেছেন বাংলার তিতাস সাধু। চার ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে দু’টি উইকেট তুলে নেন বাংলার মেয়ে। কীভাবে তিতাসকে তুলে এনেছিলেন? শিবশঙ্কর বলছেন, “তিতাসের কোচ প্রিয়ঙ্কর আমায় জানান ওঁর কথা। আমি পাঠাতে বলি। নেটে ওর বোলিং দেখি। ওর বোলিং দেখে আমার ভাল লাগে। সেই সময় সিএবি সভাপতি ছিলেন অভিষেক ডালমিয়া। দেবব্রত দাস তখন যুগ্ম সচিব। সবার সঙ্গে কথা বলে তাঁদের রাজি করাই। তারপর ওকে নেওয়া হয় দলে। তারপর থেকেই ভাল খেলছে ও।”
তিতাসকে বাংলা দলে নেওয়ার নেপথ্যের অন্যতম কারিগর শিবশঙ্কর পাল৷ তবে তিনি আলাদা কোনও কৃতিত্ব দাবি করতে চান না। তিনি বলেছেন, “আমি কাউকে দলে নিতে পারি। তবে খেলার দায়িত্ব তো ওঁর। ও সেটাই দারুনভাবে করে গিয়েছে। আমরাও অনেক সময় ভুল করে ফেলি এটা ঠিক। ওরা ভাল খেলছে দেখলেই ভাল লাগে। মনে হয় ঠিক ক্রিকেটার নির্বাচন করেছি বলে।”
Tags: Asian Games, Cricket, Titas Sadhu