পঞ্চায়েত ভোটের আবহে কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কোচবিহারের দিনহাটার গিতালদহ। এবার সেখানে তৃণমূল প্রার্থীর ছেলেকে অপহরণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হল। দুই দলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বাঁধে। ঘটনায় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মাফুজার রহমান সহ ৬ জন জখম হয়েছেন। আহতদের দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যার মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের রেফার করা হয়েছে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরও পড়ুন: আজবনগরে বাঁধ সারাবে কে, তাই নিয়ে ‘মারামারি’ ২ তৃণমূল নেতার মধ্যে
জানা গিয়েছে, গিতালদহ ২ তৃণমূল প্রার্থীর ২ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর হকের ছেলে রাজু হককে অপহরণের অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগ উঠেছে বিজেপি এবং কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের দাবি, অপহৃত রাজু হককে ছাড়াতে গিয়ে মাফুজার রহমান সহ পাঁচজন আক্রান্ত হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় অভিযোগ করেন, ওই এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী খলিল হকের ছেলে প্রচার সেরে বাড়ি ফেরার সময় একদল দুষ্কৃতি তাঁকে অপহরণ করে এবং মারধর করে। এই খবর পাওয়ার পর মাফুজার রহমান সহ বেশ কয়েকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছন। সেই সময় তাদের উপর হামলা চালানো হয়। তিন চার জন পালিয়ে গেলেও মাফুজার রহমান পালাতে পারেননি। তাঁর হাত-পা বেঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সারা শরীরে কোপ মারা হয় বলে অভিযোগ। কংগ্রেস এবং বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতিরা এই ঘটনার সাথে জড়িত বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় প্রথমে আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ৩ জনকে কোচবিহারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মাফুজার রহমান ছাড়াও তাঁর শ্যালক রফিকুল হককে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে আক্রান্ত তৃণমূলের মাফুজার রহমানকে দেখতে কোচবিহারের বেসরকারি হাসপাতালে যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে আক্রান্তের শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চান। পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলেন।
যদিও ঘটনায় তৃণমূলের যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। দলের দিনহাটা শহর মণ্ডল সভাপতি অজয় রায় দাবি করেছেন, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা কমল দাশগুপ্ত তৃণমূলের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছেন।