ওয়েব ডেস্কঃ আজকের দিনটি অন্যরকম। মনটা বলতেই পারে আজ একটু কাদা মেখে ফুটবল হয়ে যাক। বা বাড়ির সামনে কিতকিত। কানামাছি। আসলে মন ভাল রাখার জন্য খেলা ও শরীরচর্চার প্রয়োজন। আর সেটা অনেক আগেই সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার জন্য বুঝেছিল অলিম্পিক সংস্থা। আসুন ভাগ করেনি কিছু তথ্য।
১৮৯৪ সালের ২৩ জুন। এই বিশেষ দিনটিতে প্রতিষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)। প্রাচীন অলিম্পিক গেমসকে একটি রেনেসাঁ হিসেবে ধরে প্রতিযোগিতামূলক খেলাধুলাকে এগিয়ে নিতে প্রতিবছর নানা কর্মকাণ্ড এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে পালিত হয় দিবসটি, যা বিশ্ব অলিম্পিক দিবস হিসেবে খ্যাত। ১৯৮৭ সাল থেকে দিবসটিকে অলিম্পিক ডে রানও বলা হয়।
পটভূমি :
১৯৪৩ সালে স্কটহোমে বসে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) ৪১তম অধিবেশন। এই অধিবেশনে চেকোস্লোভাকিয়ার আইওসি সদস্য ড. গ্রাস ‘বিশ্ব অলিম্পিক দিবস’ পালনের বিষয়ে একটি প্রস্তাব তোলেন। যার প্রাথমিক উদ্দেশ্য হবে অলিম্পিকের ধারণাকে প্রচার করা। পরের বছর আইওসির ৪২তম অধিবেশনে এই প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় প্রতিটি দেশের জাতীয় অলিম্পিক কমিটি (এনওসি) প্রতিবছর ১৭-২৪ জুনের মধ্যে এই দিবসটি পালন করবে।
প্রথম অলিম্পিক ডে : ১৯৪৮ সালের ২৩ জুন প্রথম অলিম্পিক ডে পালন করা হয়। এদিন আইওসির তৎকালীন সভাপতি সিগফ্রিড এডস্ট্রোম বিশ্বের তরুণদের জন্য একটি বার্তা দেন। পর্তুগাল, গ্রিস, অস্ট্রিয়া, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, গ্রেট ব্রিটেন, উরুগুয়ে, ভেনেজুয়েলা ও বেলজিয়াম তাদের নিজ নিজ দেশে প্রথম অলিম্পিক দিবস পালন করে।
চার্টারে অলিম্পিক ডে :
অলিম্পিক চার্টারের ১৯৭৮ সংস্করণে আইওসি সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্বব্যাপী জাতীয় অলিম্পিক কমিটি (এনওসি) কর্তৃক অলিম্পিক ডে পালনের। সেখানে বলা হয়, ‘এই মর্মে সুপারিশ করা যাচ্ছে যে প্রতিটি এনওসি অলিম্পিক আন্দোলনকে প্রচার করতে একটি অলিম্পিক দিবস পালন করবে (সম্ভব হলে প্রতিবছর)।
অলিম্পিক ডে রান : ২০ বছর ধরে বিশ্বব্যাপী অলিম্পিক ডে রান পালিত হচ্ছে। যার শুরুটা হয়েছে ১৯৮৭ সালে। এটা মূলত চালু করা হয়েছিল বিশ্বের সমস্ত জাতীয় অলিম্পিক কমিটিকে অলিম্পিক দিবস পালনে উৎসাহিত করতে। ১৯৮৭ সালে ৪৫টি এনওসি অলিম্পিক ডে রান পালন করেছিল। এর পর থেকে ক্রমেই বেড়েছে এই সংখ্যাটা। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৪ সালে ১৮১টি দেশে অলিম্পিক ডে রান পালিত হয়েছে।
এখন অলিম্পিক ডে রান কেবল একটি দৌড় কিংবা ক্রীড়া ইভেন্ট নয়, তার চেয়েও বেশি কিছু। ‘মুভ, লার্ন অ্যান্ড ডিসকভার’ এই তিনটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে জাতীয় অলিম্পিক কমিটি ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও শিক্ষা কার্যক্রমকে প্রসারিত করার চেষ্টা করছে। যেখানে বয়স, লিঙ্গ, সামাজিক পটভূমি অথবা ক্রীড়া সামর্থ্যসহ সব ধরনের ভেদাভেদ ভুলে যাওয়া হয়। কিছু কিছু দেশ এটিকে তাদের শিক্ষা কার্যক্রমের আওতাভুক্ত করেছে। কিছু কিছু এনওসি এই দিবসে কনসার্ট ও নানা প্রদর্শনীর আয়োজন করে। সম্প্রতি এনওসিগুলো দেশের শীর্ষস্থানীয় অ্যাথলেটদের সঙ্গে শিশু ও তরুণদের সভার আয়োজন করে। যার মধ্য দিয়ে সকলে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক ডে-র অংশ হতে পারে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি ও জাতীয় অলিম্পিক কমিটি তাদের কাজের ক্ষেত্রে গতিশীলতা পেয়েছে।