আজ বিশ্ব রক্তদাতা দিবস

আজ  বিশ্ব রক্তদাতা দিবস

 আজকাল সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা যাচ্ছে, রক্ত লাগবে। রক্ত দিতে হবে। নিশ্চয়ই মহৎ কাজ। আর সেই মহান কাজটিকে সুদূরপ্রসারী করতেই ১৪ জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। ১৯৯৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক রক্তদান দিবস পালন এবং ২০০০ সালে ‘নিরাপদ রক্ত’-এই থিম নিয়ে পালিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের অভিজ্ঞতা নিয়ে ২০০৪ সালে প্রথম পালিত হয়েছিল বিশ্ব রক্তদান দিবস। ২০০৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য অধিবেশনের পর থেকে প্রতিবছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এ দিবস পালনের জন্য তাগিদ দিয়ে আসছে।  

আসলে যারা স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদান করে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ বাঁচাচ্ছেন তাদেরসহ সাধারণ জনগণকে রক্তদানে উৎসাহিত করাই এ দিবসের উদ্দেশ্য। প্রতিবছর ১১ কোটি ইউনিটের বেশি রক্ত স্বেচ্ছায় দান করা হয়। তার মধ্যে ৫৭ টি দেশে সম্পূর্ণ রক্ত স্বেচ্ছায় মানুষ দান করেন। নিম্ন আয় যুক্ত দেশে ৬৫ শতাংশ রক্ত দেওয়া হয় পাঁচ বছরের নিচের ছোট ছোট শিশুদের জন্য। এখনো বিশ্বের অনেক দেশে মানুষের রক্তের চাহিদা হলে নির্ভর করতে হয় নিজের পরিবারের সদস্য বা নিজের বন্ধুদের রক্তদানের ওপর, আর অনেক দেশে পেশাদারি রক্তদাতা অর্থের বিনিময়ে রক্ত দান করে আসছে রোগীদের। অথচ বিশ্বের নানা দেশ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে জানা যায়, ‘নিরাপদ রক্ত সরবরাহের’ মূল ভিত্তি হলো স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে দান করা রক্ত। কারণ তাদের রক্ত তুলনামূলকভাবে নিরাপদ এবং এসব রক্তের মধ্য দিয়ে গ্রহীতার মধ্যে জীবনসংশয়ী সংক্রমণ, যেমন এইচআইভি ও হেপাটাইটিস সংক্রমণের আশঙ্কা খুবই কম।

শারীরিকভাবে সুস্থ ১৮ থেকে ৫৭ বছর বয়সের মধ্যে কোনো পুরুষ ও নারী রক্ত দিতে পারবে। এ ক্ষেত্র পুরুষের ওজন থাকতে হবে অন্তত ৪৮ কেজি এবং নারীর ওজন অন্তত ৪৫ কেজি। ১২০ দিন পর পর, অর্থাৎ চার মাস পর পর রক্ত দেওয়া যাবে। রক্তদানে কোনো সমস্যা হয় না। কেননা, একজন মানুষের শরীরে সাড়ে চার থেকে ছয় লিটার রক্ত থাকে। রক্তদান করা হয় সাধারণত ২৫০ থেকে ৪০০ মিলিলিটার। এটি  শরীরে থাকা মোট রক্তের মাত্র অল্প ভাগ।  

 

স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদানকারী আড়ালে থাকা সেসব মানুষের উদ্দেশে, এসব অজানা বীরের উদ্দেশে, উৎসর্গীকৃত ১৪ জুনের বিশ্ব রক্তদান দিবস। ১৪ জুন দিবসটি পালনের আরও একটি তাৎপর্য রয়েছে। এই দিনেই জন্ম হয়েছিল বিজ্ঞানী কার্ল ল্যান্ডস্টিনারের। এই নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী আবিস্কার করেছিলেন রক্তের গ্রুপ ‘এ, বি, ও,এবি’।

রক্তদানের উপকার

১. রক্তদান স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বছরে তিনবার রক্তদান আপনার শরীরে লোহিত কণিকাগুলোর প্রাণবন্ততা বাড়িয়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গে নতুন কণিকা তৈরির হার বাড়িয়ে দেয়। নিয়মিত রক্তদান করলে হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।

২. নিয়মিত স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে নিজের শরীরে বড় কোনো রোগ আছে কি না, সেটি বিনা খরচে জানা যায়। যেমন : হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, সিফিলিস, এইচআইভি (এইডস) ইত্যাদি।

৩. গবেষণায় দেখা যায়,  যাঁরা বছরে দুবার রক্ত দেন,  অন্যদের তুলনায় তাঁদের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। বিশেষ করে ফুসফুস, লিভার, কোলন, পাকস্থলী ও গলার ক্যানসারের ঝুঁকি নিয়মিত রক্তদাতাদের ক্ষেত্রে অনেক কম দেখা গেছে।

৪. রক্ত দিলে ৬৫০ ক্যালরি করে শক্তি খরচ হয়। অর্থাৎ ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

 

  

 

 

 

 

 

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here