সদ্য বাঁকুড়ার কোতলপুরের বিজেপি বিধায়ক হরকালি প্রতিহার দল ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। আর তার পরের দিনই অবশ্য রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতার হয়েছেন। সুতরাং খেলার স্কোর—১–১। তবে আরও ২০ জন বিজেপি বিধায়ক দল ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে আসতে পারে বলে বিস্ফোরক দাবি করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর সংখ্যা ছিল ৭৭। সেটা এখন এসে দাঁড়িয়েছে ৬৭। তার সঙ্গে বঙ্গ–বিজেপিতে অন্তর্কলহ রয়েছে। কুণাল ঘোষের দাবি, বিজেপির আরও ২০ জন বিধায়ক নাকি শিবির বদলের জন্য পা বাড়িয়ে আছেন।
ঠিক কী দাবি কুণালের? এদিকে কুণাল ঘোষের দাবি, বিজেপির ২০ জন বিধায়ক নিয়মিত তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। কিন্তু তাঁরা কারা? সেইসব নাম প্রকাশ্যে আনেননি তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। তবে এই কথা বলার পর থেকে রাজ্য–রাজনীতিতে আবার আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। এমনকী বিজেপির অন্দরে শুরু হয়েছে আলোচনা বলে সূত্রের খবর। কারা যেতে পারে তার একটা সম্ভাব্য তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। আর কুণালের দাবি যদি বাস্তবে প্রতিফলিত হয় তাহলে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির এই রাজ্যে সংগঠন বলে আর কিছু থাকবে না বলে অনেকের মত।
কারা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন? বিধানসভা নির্বাচনের পর বিজেপি ৭৭টি আসন জেতে। তবে পরে বিজেপির টিকিটে জেতা ৭ বিধায়ক তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। মুকুল রায়, বিশ্বজিৎ দাস, তন্ময় ঘোষ, সৌমেন রায়, কৃষ্ণ কল্যাণী, সুমন কাঞ্জিলাল, হরকালী প্রতিহার পদ্মফুল ত্যাগ করে ঘাসফুল ভিড়েছেন। বিজেপি বিধায়ক কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসে। এটা বঙ্গ–বিজেপি নেতাদের কাছে গলার কাঁটা বলেও মনে করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি আটকাতেই তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–মন্ত্রীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি। এই আবহের মধ্যেই ধূপগুড়ি আসনটি হেরে বসেছে বিজেপি। তার মধ্যেই বিজেপির জন্য দুঃসংবাদ বয়ে নিয়ে এলেন কুণাল।
আরও পড়ুন: রাজ্যের প্রতিটি জেলায় আয়ুষ ডিসপেনসারি খুলছে রাজ্য সরকার, কেন এমন সিদ্ধান্ত?
ঠিক কী বলেছেন কুণাল? অন্যদিকে সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি বিধায়কদের তৃণমূল কংগ্রেস যোগদান করিয়ে দেখানোর জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু কুণালের দাবির পর তিনি কোনও মন্তব্য এখনও করেননি। আর বঙ্গ–বিজেপিকে কটাক্ষ করে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘একের পর এক নেতা দল ছেড়েছে। আরও ২০ জন ছাড়ার মুখে আছে। যেতে দিন আগামী ক’মাস। গুনে নেবেন বিজেপি থেকে ক’জন বেরিয়ে চলে আসে। বিজেপি নেতারা ট্রেলার দেখানোর নামে ইডি–সিবিআই অপব্যবহার দেখায়। তার সঙ্গে মানুষের শক্তি, মানুষের আশীর্বাদের কোনও যোগ নেই। কিন্তু তৃণমূল যে মার দেখাবে, সেটা মানুষের মার, গণতন্ত্রের মার। শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক উপায়ে কীভাবে বিজেপিকে বিদায় করতে হয় সেটা তৃণমূল দেখিয়ে দেবে।’