বিষয়টায় চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে অনেকের কপালেই। গত একশো বছরে যা ঘটেনি তা ঘটতে চলেছে এবার। দেবীপক্ষের সূচনা এবার গ্রহণের মধ্য দিয়ে।মহালয়ার দিন সূর্যগ্রহণ। তাহলে কি হবে? পিতৃতর্পণ কি বন্ধ থাকবে এবার? কি বলছেন জ্যোতিষ শাস্ত্রবিদরা? বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মহিষাসুরমর্দিনীর সুর যেদিন কাকভোরে শোনা যাবে এবার সেই মহালয়াতেই সূর্যগ্রহণ।দেবীর আবাহনে আকাশ যেদিন থেকে নীলাম্বরী শাড়িতে সাদা মেঘের আঁচল পাতবে সেদিনই বিশ্বের বেশ কিছু প্রান্তের আকাশ ঘনীভূত হবে বলয়গ্রাসে। শতবর্ষের ইতিহাসে এই প্রথম।
ভারত থেকে অবশ্য গ্রহণ দেখা যাবে না। কিন্তু ওই দিনটায় দেবীপক্ষের সূচনা। অনেকের প্রশ্ন, পিতৃতর্পণের যে প্রথা অনন্তকাল ধরে চলে আসছে, সূর্যগ্রহণ সেই রীতি পালনে কোনও প্রভাব ফেলবে না তো? এখানেই আশ্বস্ত করছেন জ্যোতিষ শাস্ত্রবিদরা। তাঁরা বলছেন, ভারতে এই সূর্যগ্রহণ অদৃশ্য। ফলে তর্পণের রীতি পালনে কোনও বাধা নেই। বর্ষার মাঝেই বাংলায় দুর্গাপুজোর আমেজ ধরা পড়তে শুরু করেছে।আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছেন পুজো কমিটির কর্মকর্তারা। অনেক বারোয়ারির খুঁটিপুজো সাড়া। প্রতিমা বায়না থেকে ডেকরেটর্স বুকিং হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। পুজো কমিটির সভাপতি, সম্পাদকের নাম দিয়ে চাঁদার তোলার বিল ছাপানোর কাজও শেষ। এখন চলছে পুজো উদ্যোক্তাদের স্পনসর ধরার দৌড়ঝাঁপ। ২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠীতে বোধন হবে দেবীর।
উৎসব শুরুর প্রস্তুতির আবহে উদ্বেগের খবর বয়ে এনেছে সূর্যগ্রহণ। কারণ দিনটা মহালয়া! আগামী ১৪ অক্টোবর।অমাবস্যা তিথিতে পিতৃতর্পণের ধুম থাকবে ঘাটে ঘাটে।ভারতীয় সময় রাত ৮টা ৩৪ মিনিটে গ্রহণ স্পর্শ করবে।শেষ হবে মধ্যরাত ২টা ২৫ মিনিটে। মহালয়ার দিনে সূর্যগ্রহণ, শেষ ১০০ বছরের শাস্ত্রীয় দলিলে এমন তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না বিশারদরা। তবে তাঁরা সকলেই বলছেন, মহালয়ার সঙ্গে সূর্যগ্রহণের কোনও সম্পর্ক নেই। জ্যোতিষ শাস্ত্রবিদরা বলছেন, তর্পণে কোনও অসুবিধা নেই। ওই দিন নিয়ম-রীতি মেনে সকলেই পিতৃপুরুষকে জলদান করতে পারবেন।
কারণ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ও ধর্মীয় রীতি আটকে রাখতে পারে না। তাছাড়া সূর্যগ্রহণ ভারতের আকাশে দৃশ্যমান না হওয়ায় প্রভাব পড়বে না। তবে কারও মনে যদি দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকে, তাহলে ১৪ অক্টোবর রাতে গ্রহণের সময়টুকু তর্পণের থেকে বিরত থাকলেই হবে। তবে আর কি, গ্রহণ হোক তার নিয়মে। সেই সময়টুকু বাদ দিয়েই চলুক পিতৃতর্পণ।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়