রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ করা নিয়ে রাজ্য সরকার একটি অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল। কলকাতা হাইকোর্টে সেই অর্ডিন্যান্সকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয়েছিল। আজ, সোমবার এই মামলার শুনানিতে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্য এবং মামলাকারীর বক্তব্য জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। এমনকী অর্ডিন্যান্স নিয়ে তিন সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আর মামলাকারীর বক্তব্যও দু’সপ্তাহের মধ্যে জানতে হবে আদালতে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সুপ্রিম কোর্ট এবং কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরই উপাচার্য নিয়োগের জন্য গঠিত সার্চ কমিটিতে পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়। সেখানে তিনজনের বদলে পাঁচজনের কমিটি গঠন করতে নবান্ন অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল। ১৫ মে এই অর্ডিন্যান্স রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতর দিয়ে দেয়। নতুন যে কমিটি ঠিক করা হয় সেখানে রাখা হয় রাজ্যপালের মনোনীত প্রতিনিধি, উচ্চশিক্ষা সংসদের মনোনীত প্রতিনিধি, রাজ্যের মনোনীত প্রতিনিধি এবং মুখ্যমন্ত্রী মনোনীত প্রতিনিধি। বাদ যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোনীত প্রতিনিধি।
অন্যদিকে এখানে দুটি বিষয়ে আপত্তি তোলা হয়। এক, মুখ্যমন্ত্রীর মনোনীত প্রতিনিধি থাকা নিয়ে। দুই, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি বাদ রাখার বিষয়টি। তাই এই অর্ডিন্যান্স নিয়ে আপত্তি তুলে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করেন আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত। তাঁর দাবি, রাজ্যের জারি করা অর্ডিন্যান্সে নতুন কমিটিতে রাজ্য সরকারের তিনজন প্রতিনিধি থাকবে। সেটা যদি ঘটে তাহলে রাজ্য কোনও সিদ্ধান্ত নিলে সংখ্যাগরিষ্ঠতায় তা সহজেই পাশ হয়ে যাবে। সেখানে রাজ্যপালের মতামতের কোনও গুরুত্বই থাকবে না। সুতরাং নামমাত্র হিসাবেই থেকে যাবেন রাজ্যপাল।
আর কী জানা যাচ্ছে? আজ, সোমবার এই মামলার শুনানিতে আইনজীবী সুস্মিতা দত্ত বলেন, ‘রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বজনপোষণের কোনও জায়গা নেই। কারণ ইউজিসি’র সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী উপাচার্য নিয়োগ হয়। সার্চ কমিটিতে বেআইনিভাবে রাজ্যের প্রতিনিধি বাড়তি রাখা হয়েছে।’ তখন রাজ্যের পক্ষ থেকে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, ‘যাঁরাই সার্চ কমিটির সদস্য হন না কেন তাঁরা ইউজিসি’র অনুমতির ভিত্তিতেই মনোনীত। আর রাজ্যের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়েই এই সংক্রান্ত সার্চ কমিটি গঠন হয়নি।’ এই দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে রিপোর্ট তলব করে কলকাতা হাইকোর্ট।