সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের পাঁচদিনের বিশেষ অধিবেশন। আচমকা কেন এই বিশেষ অধিবেশন ডাকা হল তা নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। কারণ সরকারের পক্ষ থেকে এই বিশেষ অধিবেশনের কারণ জানানো হয়নি। তাই জল্পনার জল গড়াচ্ছে নানা দিক থেকে।
বিরোধীরা দাবি করছে, আসলে সরকার নিজস্ব কিছু বিল পাশ করিয়ে নিতে চাইছে এই অধিবেশনে। এরই মধ্যে আবার তৃণমূলের রাজ্য সভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন সংসদের এই অধিবেশন ডাকার কারণ নিয়ে নতুন কারণ জানালেন।
সমাজমাধ্যমে তৃণমূল সাংসদ লিখেছেন,’কী কারণে ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার রহস্য ফাঁস করব। দুপুর বারোটায় তা জানাবা।’ এর পর দুপুর ১২টা নাগাদ ডেরেক আরও একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লেখেন,’সব জল্পনার অবসান। অবশেষে আসল কারণ জানা গেল। ১৭ সেপ্টেম্বর নরেন্দ্র মোদীর ৭৩ তম জন্মদিন পালনের জন্য সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর সপ্তাহব্যাপী তাঁর জন্মদিন পালন করা হবে।’
After all the speculation. Finally.
Here is the real reason! #ParliamentSpecialSession called to celebrate PM @NarendraModi ‘s 73rd BIRTHDAY 🎂on September 17.
Week long birthday 🎂celebrations 😝 Sept 18-22
— Derek O’Brien | ডেরেক ও’ব্রায়েন (@derekobrienmp) September 16, 2023
তৃণমূল সাংসদের এই পোস্টে বিশেষ অধিবেশন ডাকা নিয়ে কটাক্ষের ইঙ্গিত থাকলেও ইন্ডিয়া জোট চাইছে এই অধিবেশনে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যুগুলোকে তুলে ধরতে। শনিবার হায়দরাবাদে নবগঠিত কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির প্রথম বৈঠকে শেষ হয়েছে। এই বৈঠকে সংসদের বিশেষ অধিবেশন কংগ্রেসের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি ধরেই নিচ্ছে, নিজস্ব কিছু অ্যাজেন্ডা পাশ করাতে এই অধিবেশন ডেকেছে সরকার। কিন্তু সরকারে সেই ইচ্ছা তারা সফল হতে দেবে না। মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্বের গুরুত্বপূর্ণ মতো ইস্যুগুলোকে তুলে ধরা হবে অধিবেশনে।
ওয়ার্কিং কমিটির দুদিনের বৈঠকের শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রাক্তন মন্ত্রী পি চিদম্বমর। তিনি বলেন,’সরকার নিজস্ব কিছু অ্যাজেন্ডা পাশ করানোর জন্য অধিবেশন ডেকেছে। তবে আমরা তা হতে দেব না। গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যুগুলোকে আমরা তুলে ধবর।’ সূত্রের খবর, তৃণমূলও এই কৌশলে মাঠে নামবে।
‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে কেন্দ্র ইতিমধ্যে কমিটি তৈরি করে ফেলেছে। সংসদের বিশেষ অধিবেশনে এ নিয়ে প্রস্তাবও পেশ করা হতে পারে। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ কংগ্রেস তাদের অবস্থান জানিয়েছে। এই নীতি চালু হলে ধাক্কা খাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো। তেমনটাই মনে করেছে দল।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সেরা সংস্থাগুলির তালিকা প্রকাশ, টাইম ম্যাগাজিনের শীর্ষ ১০০-তে শুধুমাত্র একটি ভারতীয় সংস্থা
সম্প্রতি জি ২০-র নৈশভোজে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রপত্রে ইন্ডিয়ার জায়গায় লেখা হয় ভারত। প্রধানমন্ত্রীর পরিচয়ের ক্ষেত্রেও একাধিকবার জায়গায় উল্লেখ করা হয় ভারত। এই ইস্যুতেও বিরোধীরা সরব হতে পারে সংসদের বিশেষ।
জানা গিয়েছে, অধিবেশনের প্রথমদিন পুরনো সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত হলেও বাকি অধিবেশন নতুন ভবনে হবে। রবিবার নতুন সংসদ ভবনে জাতীয় পাতাকা উত্তোলন করেন উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর থাকার কথা ছিল। কিন্তু তিনি অন্য একটি অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকায় আসতে পারেননি। দেরিতে চিঠি পাওয়ার জন্য আসতে পারেননি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। তার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে বার্তাও দিয়েছেন। বিকেলে নিয়ন অনুযায়ী সর্বদলীয় বৈঠক রয়েছে।