বিয়ের দেড় বছরের মধ্যে পেট ফুলতে শুরু করেছিল গৃহবধূর। স্বাভাবিকভাবেই অনেকে ভেবেছিলেন হয়ত তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন। কিন্তু, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ কাছে যেতেই জানা জানতে পারেন, সেটি অন্তঃসত্ত্বার কারণে নয়, আসলে গৃহবধূর পেটে রয়েছে একটি বড় টিউমার। ৩ অক্টোবর ওই গৃহবধূর অস্ত্রোপচার করে টিউমারটি বের করেছেন চিকিৎসকরা, যার ওজন হল ৬ কিলগ্রাম। অস্ত্রোপচারের পর আপাতত সুস্থ রয়েছেন গৃহবধূ। তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: টিউমারে আটকে গিয়েছিল শ্বাসনালী, নিরাময় হল ১৮জন চিকিৎসকের প্রচেষ্টায়
জানা গিয়েছে, ওই গৃহবধূর নাম প্রিয়াঙ্কা তালুকদার। তিনি পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা। ২০২২ সালে তাঁর বিয়ে হয়। আর বিয়ের পর থেকে তিনি যাদবপুরে স্বামীর সঙ্গেই থাকেন। গত মে মাস থেকে গৃহবধূর পেট ফুলতে শুরু করে। প্রথমে ওই গৃহবধূ বিষয়টিতে গুরুত্ব দেননি। তবে শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়ায় তিনি শরীর চর্চায় মনোযোগী হয়েছিলেন। কিন্তু, তারপরে কিছুতেই পেট কমছিল না। তারপরে বাঁদিকের ফোলা অংশটি আরও শক্ত হতে শুরু করে এবং পেট ফোলা অব্যাহত থাকে। তারওপর অল্প কিছু খেলেই তাঁর মনে হতো পেট ভরে গিয়েছে। এমনকী জলও তিনি বেশি খেতে পারতেন না। সেই সময় পরিবারের সকলে ভেবেছিলেন তিনি অন্তঃসত্ত্বা রয়েছেন। সেইমতো, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে তাঁকে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। সেখানেই তাদের ভুল ভাঙে। চিকিৎসক জানান, গৃহবধূর পেটে একটি বড় টিউমার রয়েছে। আর সেই কারণে পেট ফুলছে। শেষে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন গৃহবধূ। সেখানেই তাঁর অস্ত্রোপচার হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬ কিলো ওজনের টিউমারটি অনেকটা কুমড়োর মতো। টিমারের চাপে ডান দিকে সরে গিয়েছিল অগ্নাশয়। এছাড়া বৃহদন্ত্র এবং কিডনিও নিচে নামতে শুরু করেছিল। সেই কারণে ওই গৃহবধূ বেশি খাবার খেতে পারতেন না। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে গেলে ইউজিসি এবং সিটি স্ক্যান করে সেটি ধরা পড়ে। জানা গিয়েছে, গত ৩ অক্টোবর অস্ত্রোপচার হয়েছে ওই গৃহবধূর। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার হয়েছে গৃহবধূর। গত শনিবার তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে বিপদ কেটে যাওয়ায় খুশি গৃহবধূ এবং তাঁর পরিবার।
একই রকম ঘটনা ঘটেছিল গত বছর। রমা হালদার নামে এক মহিলার পেট থেকে অস্ত্রোপচার করে বের করা হয়েছিল ৬ কেজি ওজনের টিউমার। এসএসকেএম হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয়েছিল ওই মহিলার। প্রায় দেড় বছর ধরে পেটের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন তিনি । প্রায় চার ঘণ্টা ধরে রমা দেবীর অস্ত্রোপচার করে এসএসকেএম-এর চিকিৎসকেরা টিউমারটি বের করেছিলেন।