নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উষ্মাপ্রকাশ করেন মুড়িগঙ্গা নদীতে নতুন চরকে নিয়ে। আর দ্রুত তার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। কারণ বছর ঘুরলেই গঙ্গাসাগর মেলা। এখানে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটে। সেখানে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিয়ে সদা সতর্ক মুখ্যমন্ত্রী। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ পেয়েই তৎপর হয়ে উঠল প্রশাসন। আর তাই এবার ওই চর কাটতে ফরাক্কা থেকে ড্রেজিং মেশিন আনতে চলেছে জেলা প্রশাসন। দু’দিনের মধ্যেই ওই চরের মাটি কাটার কাজ শুরু হবে বলে খবর। গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, দশ বছর আগে মুড়িগঙ্গা নদীতে একটি বাংলাদেশি জাহাজ ডুবে গিয়েছিল। আর সেখানেই কচুবেড়িয়ার কাছে জেগে উঠেছে চর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই চর কাটতেই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন। ডুবে যাওয়া জাহাজ তোলার জন্য সেনাবাহিনীর সাহায্য নিতে নির্দেশ দেন। তখন ওই বৈঠকে উপস্থিত একাধিক দফতরের অফিসাররা জানান, এই কাজ করার জন্য ড্রেজিং কর্পোরেশনকে চিঠি লিখে আবেদন করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী তখনই জানান, গঙ্গাসাগর মেলা শেষ হলে জাহাজটি তোলার কাজ হবে। আপাতত যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে সেটা দেখার জন্য নির্দেশ দেন।
এদিকে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এখন যত দ্রুত সম্ভব চর কাটা হবে এবং আগে চরের পলি–বালি সরানো হবে। এই বিষয়ে জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো ফরাক্কা থেকে অত্যাধুনিক ড্রেজার নিয়ে আসা হচ্ছে। আর তা দিয়েই ওই চরের পলি–বালি সরানো হবে। আগামী দু’দিনের মধ্যে এই কাজ শুরু হয়ে যাবে। পাঁচদিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে।’ গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে ২০২৪ সালের প্রথম সপ্তাহেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাগরে আসতে পারেন। ৪ জানুয়ারি জয়নগরে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী। তখনই তিনি দেখে নেবেন সার্বিক পরিস্থিতি। এই বছর প্রায় ৪০ লক্ষ পুণ্যার্থী মেলায় আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে হবে কড়া নজরদারিতে, ফরমান জারি করল মধ্যশিক্ষা দফতর
অন্যদিকে বেশ কিছুদিন আগে কপিলমুনি মন্দিরের কাছে সমুদ্রতটে ধস নেমেছিল। তখন ভরা কোটালে ব্যাপক সমস্যা হয়েছিল। এই ঘটনার পর নতুন করে সমুদ্রতট গড়ে তোলা হয়েছে। মন্দিরে নতুন রঙ করা হয়েছে। কচুবেড়িয়া বাসস্ট্যান্ড ও গঙ্গাসাগর বাস স্ট্যান্ড থেকে মেলা চত্বরে আসার রাস্তায় আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে। তাছাড়া প্লাস্টিক বর্জনের উপর জোর দিচ্ছে গঙ্গাসাগর–বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী তথা সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গঙ্গাসাগর মেলায় সব বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। নতুন করে সমুদ্রতট তৈরি থেকে শুরু করে নিরাপত্তা প্রস্তুতি প্রায় শেষ।’