বৈভবের জীবনযাপন তিনি পছন্দ করেন না। ভিভিআইপি কালচার তাঁর স্বভাবে নেই। সাধারণ মানের জীবনেই অভ্যস্ত তিনি। তাই সাধারণ মানুষের মধ্য দিয়েই করেন যাতায়াত। একেবারে ছাপোষা জীবনযাপন করলেও তিনিই জননেত্রী। এখন দেশের একমাত্র বিরোধী মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। হ্যাঁ, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ তাঁর দলেরই শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সহকারী সভাধিপতির গাড়িতে জ্বলছে নীলবাতি। সেই গাড়ি নিয়ে দিব্যি ঘুরছেন তিনি। শিলিগুড়িতে এই নীলবাতির গাড়িতেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। মহকুমা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি গাড়িতে নীলবাতি ব্যবহার করতে পারেন? উঠছে প্রশ্ন। শুরু হয়েছে আলোড়ন।
এদিকে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে আদিবাসী সম্প্রদায় থেকে রাজনীতির আঙিনায় এসেছেন অভিনেত্রী রোমা রেশমি এক্কা। মহকুমা পরিষদের বেশিরভাগ এলাকা আদিবাসী অধ্যুষিত। আঞ্চলিক ভাষাতেই সিনেমা করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন রোমা রেশমি। এই রোমাকে রাজনীতির প্ল্যাটফর্মে নিয়ে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর তারপরই বামেদের দুর্গ ভেঙে বিপুল ভোটের ব্যবধানে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস। মহকুমা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি হয়ে যান রোমা। সেই রোমা কেন নীলবাতির গাড়ি চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে জনমানসে।
অন্যদিকে যে দলের সর্বোচ্চ নেত্রী সাধারণ জীবনযাপন করেন সে দলের আর এক নেত্রীর এমন চলাফেরা বেমানান। নীলবাতির গাড়ি চড়া নিয়ে বামেদের প্রাক্তন মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি তাপসকুমার সরকার বলেন, ‘কলকাতা হাইকোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে কারা নীলবাতি ব্যবহার করতে পারবেন, আর কারা পারবেন না। আমি যখন সভাধিপতি হই তখন নির্দেশিকা দেখেই গাড়িতে আলো লাগিয়েছিলাম। মহকুমা পরিষদের শুধুমাত্র অতিরিক্ত কার্যনির্বাহী অফিসার (এইও) এবং সভাধিপতির গাড়িতে আলো লাগাবার নির্দেশ রয়েছে। তবে এটা তৃণমূলের চরিত্র। মানুষের সামনে এরা নিজেকে কেউকেটা দেখান। রোমাও তাঁদের মধ্যে একজন।’
আরও পড়ুন: অত্যাধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ে আসা হচ্ছে, চিংড়িহাটাকে যানজটমুক্ত করতে নয়া পদক্ষেপ
এছাড়া সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজ যাঁরা করেন, তাঁদের উচ্চপদস্থ কর্তারা গাড়িতে ও আপৎকালীন পরিষেবা দেয় এমন গাড়িতে নীলবাতি ব্যবহার করা যায়। এই বিষয়ে দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক প্রীতি গোয়েলের বক্তব্য, ‘বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে।’ আর মহকুমা পরিষদের বিজেপির কিষান মোর্চার সাধারণ সম্পাদক অনিল ঘোষের কটাক্ষ, ‘এই ঘটনা ‘লজ্জাজনক’। আর রোমা রেশমি এক্কা বলেন, ‘নীলবাতি লাগানো থাকলে প্রশাসনিক কাজ করতে সুবিধা হয়। কাজের জন্য আমাকে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। রাস্তায় যানজট থাকলে জরুরি বৈঠকে পৌঁছতে দেরি হয়। তাই নীলবাতি থাকলে ভাল।’