মণিপুর: আতঙ্কের ছবি মণিপুরে। তার মধ্যেই কোনক্রমে দিন কাটছে এ রাজ্যের পড়ুয়া থেকে শুরু করে কর্মরত চিকিৎসকদের। আশঙ্কা আর আতঙ্কের দোলাচালে রোগীদের মধ্যে ভাগ বসিয়েই দিন কাটছে মনিপুর রিজিওন্যাল ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন থেকে মেডিসিনে পোস্ট গ্রাজুয়েট পড়তে যাওয়া অতিশ গিরির।
গোলমাল শুরু হওয়ার পর থেকেই হাসপাতাল ওয়ার্ডেই আশ্রয় নিয়েছেন এনআরএস হাসপাতাল থেকে ডাক্তারি পাশ করা অতীশ। রবিবার টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে কাঁপা গলায় বলেন, নবান্ন থেকে ফোন করেছিল। তিনটি ফোন নম্বর দিয়েছে। কলকাতায় ফিরতে চাইলে টিকিট কেটে জানাতে হবে। তাহলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিরাপদে বিমানবন্দর পৌঁছে দিতে মনিপুর সরকারের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা করবে।
অতীশের কথায়, টিকিট কাটব কী করে? নেট তো নেই। কথার মধ্যেই ফোনের লাইন কেটে যাচ্ছে। কাঁপা কাঁপা গলায় বললেন বাড়ি ফিরতে পারলে ভাল হত। কিন্তু কি ভাবে ফিরব? মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, সিকিম সরকার তাদের পড়ুয়াদের ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। কেরল, তামিলনাড়ু সরকারও তাদের পড়ুয়াদের ফেরানোর ব্যবস্থা করছে। হাসপাতাল চত্বর মেইতি প্রধান এলাকা বলে জানালেন অতীশ।
প্রতি মুহূর্তে আহতরা আসছেন হাসপাতালে অনেক মৃতদেহ আসছে। অনেককে হাসপাতালে আসার পরে মৃত্যু হয়েছে। মূলত আহতরা আসছেন সার্জারি ও অর্থপেডিক ডিপার্টমেন্টে। আমাদের বলা হয়েছে নিজেদের ডিপার্টমেন্ট না ছাড়তে। হাসপাতাল চত্বর ছাড়াও বারন।
অতীশ বলেন, ক্যান্টিন বন্ধ। তাই রোগীদের জন্য তৈরি খাবার থেকে কিছুটা খাবার সংগ্রহ করে খাচ্ছি। কতদিন চলবে বুঝতে পারছি না। তবে আগের চেয়ে পরিস্থিতি অনকটা নিয়ন্ত্রণে আসছে বলে মনে হয়। তবুও বাড়ি ফিরতে পারলে ভাল লাগবে। কিছু ভাল লাগছে না।
একই রকম শঙ্কায় রয়েছেন সৌরভ সর্দ্দার। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরে। অর্থোপেডিকের পোস্ট গ্রাজুয়েট করছেন। তিনি অবশ্য একটি দল নিয়ে এসেছিলেন তামিং লং জেলা হাসপাতালে। সেখানেই আটকে পড়েছেন। তাঁর কথায়, এখানে গোলমাল না থাকলেও ইম্ফল ফেরার পথটা নিরাপদ নয়। তাই ইম্ফল ফেরার সাহস দেখাতে পারছি না। আট জনের দল এসেছি। এখনও খাবার আর জলের সমস্যা নেই। তবে ইম্ফলের যোগযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হলে কী হবে বলতে পারছি না।
আরও পড়ুন, এসি-কুলারের দাম অনেক! গরমে ঘরে রেখে দিন এই ফ্যান, ঘর ঠান্ডা হবে কয়েক মিনিটে
আরও পড়ুন, চণ্ডীপুরে সিআইডি, পাল্টা আদালতে শুভেন্দু! দুর্ঘটনা কাণ্ডে টানাপোড়েন চরমে
ইম্ফলে রয়েছে জহরলাল নেহরু ইন্সটিটিউট অফ মেডিকাল সায়েন্স। সেখানেও রয়েছে বাংলার ছয় পড়ুয়া। যাঁরা পড়তে গিয়েছেন পোস্ট গ্রাজুয়েটের জন্য। সকলেরই মুখেই এক কথা।
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়
Tags: Manipur violence