বাঙালির হৃদয় জয় করতে গিয়ে তা ভেঙে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ ২৫শে বৈশাখ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন। আর সেটা পালন করতে বাংলায় এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এমনকী এদিনই বিশ্বকবির সম্পর্কে ভুল তথ্য দিলেন বলে টুইটে দাবি করল তৃণমূল কংগ্রেস। জাতিয়তাবাদ–দেশপ্রেম নিয়ে যে রাজনৈতিক দল সবচেয়ে বেশি জ্ঞান দিয়ে থাকে সেই দলের চাণক্যের মুখে জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে ভুল তথ্য! আজ কলকাতায় রবি–স্মরণে নতুন বিতর্কে জড়ালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এমন মন্তব্য করেছেন বলে রে রে মাঠে নেমে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। টুইটে তাঁরা শাহের ভুল বলাকে জনসমক্ষে তুলে ধরেছেন। নেটপাড়ায় হিল্লোল দেখা দিয়েছে। কারণ ভুল তথ্য তাও আবার জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গলায় মেনে নিতে পারছেন না কেউ। তিনি বলেছেন, ভারত এবং বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত রচনা করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে বিতর্ক। তৃণমূল কংগ্রেস ট্যুইট করেছে এই তথ্য নিয়ে। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানেন না সঠিক তথ্য। ট্যুইটে লেখা হয়েছে, বিজেপি যে সত্যিই দেশের ইতিহাস সম্পর্কে কিছু জানে না সেটা আবারও প্রমাণ হয়ে গেল অমিত শাহের মন্তব্যে।
অন্যদিকে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ‘বন্দে মাতরম’। যার রচনা করেছিলেন বাঙালি সাহিত্যিক ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। আর বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা’—রচনা করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আর ভারতের জাতীয় স্তোস্ত্র ‘জন গণ মণ’ রচনা করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। জাতীয় সঙ্গীত আর জাতীয় স্তোস্ত্র যে এক নয় সেটা ভুলে গিয়েছেন অমিত শাহ। আর তাই এমন মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলে মনে করেন তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। এমন ভুলটা চোখে আঙুল গিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকী কিছুটা সময় অবসর নিয়ে ভাল করে ভারতের ইতিহাস পড়ার পরামর্শ দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার উপর বছর ঘুরলে লোকসভা নির্বাচন। এই দুই নির্বাচন মাথায় রেখে বাঙালির হৃদয় জিততে চেয়েছিলেন অমিত শাহ। আর তাই অমিত শাহের রবীন্দ্রজয়ন্তীতে বাংলায় ছুটে আসা। এই কারণে সকালেই জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে কবির মূর্তিতে মালা দিয়ে সেখানে ঘুরে বেড়ান শাহ। এই নিয়ে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ বাঙালির আবেগ। সেই আবেগ নিয়ে ছেলেখেলা করা যায় না। বিজেপি নেতারা যতই আসুন রবীন্দ্রস্মরণে। তাঁকে নিয়ে রাজনীতি করতে পারবেন না। সেটা ভাল হবে না।’ একুশের নির্বাচনের আগে বিশ্বভারতীতে এসেছিলেন মোদী–শাহ। অমিত শাহ শান্তিনিকেতনে গিয়ে মহামিছিল বের করেছিলেন। এবারও রবীন্দ্রনাথকে ব্যবহার করার চেষ্টা করল বিজেপি বলে মনে করছে তৃণমূল কংগ্রেস।