বাড়ি পোষ্য রয়েছে। অনেকেই তাকে নিজের সন্তানের মতো করে মানুষ করেন। কিন্তু দুর্গা পুজোর সময় হয় বিপত্তি। তাদের নিয়ে রাস্তায় বেরোলেও মণ্ডপে ঢোকা যায় না। আবার তাদের বাড়ি ছেড়ে যেতেও মন চায় না। আবার অনেকে দুধের শিশু নিয়েও ঠাকুর দেখতে বের হন। পথে তাদের খিদে পেয়ে গেলে স্তন্যপান পান করানো নিয়েও সমস্যা পড়তে হয়। এ সবের কথা মাথায় রেখে বিশেষ ব্যবস্থা করেছে কলকাতার বেশ কয়েকটি পুজো কমিটি।
উত্তর কলকাতার বিধানসরণীর অ্যাটলাস ক্লাব ২০২২ সালে প্রথম পোষ্যবান্ধব পুজোর করে। তাদের প্যান্ডেলে আনা প্রাণীদের জন্য খাবারেরও ব্যবস্থা রাখা হয়। ক্লাবের মণ্ডপ শিল্পী সায়ক রাজ বলেন, ‘গত বছর কলকাতা পুলিশের ডগ স্কোয়াডের চারজন সদস্য, দুটি ল্যাব্রাড এবং দুটি জার্মান শেফার্ড পুজোর প্রধান অতিথি ছিলে। আমরা পোষ্যদের জন্য বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করেছি। কুকুর বা বেড়াল সবের জন্য খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে।’
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, গত বছর বেশ কিছু দর্শকরা তাঁদের পোষ্যকে নিয়ে মণ্ডপে এসেছিলেন, এ বছরও অনেকেই তাঁদের কুকুর-বিড়াল নিয়ে আসছেন।
সায়ক বলেন, ‘আমরা পোষ্যদের জন্য আলাদা কোনও লেন তৈরি করিনি। তবে ঢোকার সময় তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এখানে পোষা প্রাণীরা ভিআইপি ট্রিটমেন্ট পাচ্ছে।’
বাগুইহাটির অশ্বিনীনগর বন্ধমহল ক্লাব বিশেষ ভাবে সক্ষমদের জন্য হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করেছে। এই ধরনের দর্শকদের সাহায্য করার জন্য সব সময় ক্লাবের স্বেচ্ছাসেবকরা সদা সক্রিয়।
ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক স্বরূপ নাগ বলেন, ‘ স্পেশাল কেয়ার এবং মেডিক্যালের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া স্তন্যপান করানোর জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’
দক্ষিণ কলকাতার বোস পুকুর শীতলা মন্দিরের পুজো উদ্যোক্তারা লোহার চেয়ারে মোটর লাগিয়ে বিশেষ ভাবে সক্ষম ও প্রবীণ দর্শনার্থীদের সরাসরি প্রতিমার কাছে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা করেছে।
গত ১৫ অক্টোবর কামারহাটির আর্যনগর কিশোর সংঘের প্যান্ডেলটি পোষ্যদের এলাকায় পরিণত হয়েছিল। গোল্ডেন রিট্রিভার, বিগল সহ নানা জাতের কাকাতুয়া ক্লাবের পুজো উদ্বোধনে একত্রিত করা হয়েছিল। ৪১ পল্লীপ আয়োজকরা স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন রেখেছেন। কলকাতার তালতলা এলাকার অর্জুনপুরের আমরা সাবাই ক্লাব মহিলাদের এবং বিশেষ সক্ষম দর্শনার্থীদের জন্য শৌচাগার ব্যবস্থা করেছে।
মধ্য কলকাতার পাথুরিয়াঘাটা পাঁচের পল্লীর দুর্গা পুজোর প্যান্ডেল ঋতুস্রাবের সঙ্গে যুক্ত নিষেধাজ্ঞা ভেঙে দিয়েছে। মাসিকের সময় পরিচ্ছন্নতার থিম সহ প্যান্ডেলটি এ বছর ভিড় টানছে। থিম শিল্পী মানস রায় বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্দেশ সচেতনতা তৈরি করা। এক্ষেত্রে অনেক মহিলারা অগ্রনী ভূমিকা নিয়েছেন। তবু অনেকেই একে প্রাকৃতিক চক্রটিকে প্রায়শই নিষিদ্ধ হিসাবেই দেখে থাকেন।’