কেন সরকারি অর্থে সরকারি দফতর ইদের নমাজের মঞ্চ তৈরি করল? কেন কলকাতার রেড রোডের খিলাফৎ কমিটি সেই অর্থ গ্রহণ করল। প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার বিজেপির রাজ্য সদর দফতরে এক সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেড রোডে ইদের জমায়েতে গিয়ে রাজনৈতিক ভাষণ দিয়েছেন। ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা এর প্রতিবাদ করছেন। আমরা প্রথমবার দেখলাম PWD থেকে ২৯ লক্ষ টাকা খরচ করে সেখানে প্যান্ডেল ইত্যাদি করা হয়েছে। কলকাতা খিলাফৎ কমিটি কেন এই প্রথম সরকারি অর্থ গ্রহণ করলেন? PWD-কে কাজ করার সুযোগ দিলেন? আর যদি পশ্চিমবঙ্গ সরকার ঠিক করে থাকে যে যেখানেই জামাত হবে সেখানে আমরা আয়োজন করব, তাহলে রেড রোডের জামাতের থেকেও বড় বড় জামাত রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হয়েছে। সেখানে সরকারের তরফে এক গ্লাস জলেরও ব্যবস্থা ছিল না। আমরা প্রশ্ন করেছিলাম, গোটা রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী কেন এই আয়োজন করবেন না? আগামী দিনে অন্যান্য ধর্মের মানুষরাও যদি প্যান্ডেল, মাইকের ব্যবস্থা PWD-কে করতে বলে, মুখ্যমন্ত্রী করবেন তো? তার পর সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে সরাসরি ভোট চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।’
শুভেন্দুর প্রশ্ন, ‘উনি হিন্দিতে কেন ভাষণ দেবেন? পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ কোটি। এদের মাত্র ১০ শতাংশ উর্দুতে কথা বলেন। ৯০ শতাংশ বাংলায় কথা বলেন। তিনি সব সময় হিন্দিকে ঘৃণা করেন, বাঙালি – অবাঙালি করেন, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর পুরো বক্তব্যটা কেন হিন্দিতে কেন দিলেন, কাদের উদ্দেশে দিলেন। বাঙালি মুসলিমদের উদ্দেশে নিশ্চই দেননি? মুসলিমদের একটা অংশের জন্য দিয়েছেন। আর সেখানে তিনি যেভাবে রাজনৈতিক বক্তব্য রেখে বলেছেন কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলে ছুড়ে ফেলতে হবে। আমি মুসলিমদের প্রশ্ন করতে চাই, কোরান – হাদিসে কি এই ধরণের কোনও ব্যবস্থা আছে? না থাকলে, খিলাফৎ কমিটিকে প্রশ্ন করুন। খিলাফৎ কমিটিতে এখন আর ধর্মীয় আলোচকরা নেই। সেখানে এখন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা জাভেদ খানকে দিয়ে খিলাফৎ কমিটিও নিয়ন্ত্রণ করছে তৃণমূল কংগ্রেস। শাখা সংগঠনে পরিণত করেছে। যে ধরণের বক্তব্য মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন তাতে এই রাজ্যের শান্তি সম্প্রীতি সৌভ্রাতৃত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে বিজেপি মনে করে’।
শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘আমাদের সংখ্যালঘু মোর্চা এই সপ্তাহে আম্মেদকর মূর্তির পাদদেশে রেড রোডের পাশে আমরা বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করতে চলেছে। সেখানে গোটা ভারত থেকে কয়েক হাজার রাষ্ট্রবাদী-দেশপ্রেমিক সংখ্যালঘুরা থাকবেন। আমরা কলকাতায় ১৯৪৫ – ৪৬ এর মতো আরেকটা বিভাজনের রাজনীতি করতে দেব না। যেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করতে চাইছেন।’ তিনি বলেন, ‘ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করে যিনি বিভাজনের রাজনীতি করতে চান তাঁর মুখোশ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় জনতা সংখ্যালঘু মোর্চা।’