[ad_1]
একশ্রেণির যুবক–যুবতী এই রাজ্য থেকে ভিনদেশে পাড়ি দেন নানা ছদ্মবেশে। আবার কেউ কেউ বিদেশে ঘুরতে, বেড়াতে যাচ্ছে দেখিয়েও যান। এরা আসলে ‘ক্যারিয়ার’–এর কাজ করেন। অর্থাৎ এদেশের মাল বিদেশে পাচার করা। কলকাতা বিমানবন্দর দিয়েই তাঁরা যাতায়াত করেন। পোশাক, বৈদ্যুতিন পণ্য থেকে শুরু করে টাকাও পাচার করেন তাঁরা। এটাই তাঁদের কাজ। বিনিময়ে মোটা কমিশন পেয়ে থাকেন তাঁরা। এদেরকে কিন্তু হাওলা বলা যাবে না। হাওলার চরিত্র একটু আলাদা। এই ‘ক্যারিয়ার’ হিসাবে যাঁরা কাজ করেন তাঁরা বরাত পান। এই কাজ করতে গিয়ে মাসে একাধিকবার ব্যাঙ্কক, দুবাই, মরিশাস, সিঙ্গাপুরের উড়ানে সফর করেন তাঁরা। এদেরকে বাংলায় ‘বাহক’ বলা হয়। ইডি এখন এই বাহকদের খুঁজছে। কারণ রেশন দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে তাঁদের মাধ্যমেই।
এদিকে হাওলার কাজটি কিন্তু আলাদা। তারা দুটি বিষয় জানে। এক, কে বা কারা টাকা পাঠাচ্ছে। দুই, কার হাতে তুলে দিতে হবে। মাঝখানে কাজ করেন এই বাহক বা ক্যারিয়ার। তাঁরা শুধু জানে টাকা কার কাছে পৌঁছে দিতে হবে। কোথা থেকে আসছে জানে না। ইডি সূত্রে খবর, বিদেশ সফরের সময় ডলার–পাউন্ডের মতো বিদেশি মুদ্রা নিয়ে যেতেই হয়। সেটাকেই কাজে লাগিয়ে দুর্নীতির টাকা ছোট ছোট পরিমাণে ক্রমাগত বদলানো হয়েছে বিদেশি মুদ্রায়। সেই বিদেশি মুদ্রা বাহকদের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে বিদেশে। বারবার পাঠানো হয়েছে ছোট ছোট অঙ্কে। যাতে কেউ সন্দেহ না করে। এভাবেই লুকিয়ে পাচার করা হয়েছে শুল্ক দফতরকে ফাঁকি দিয়ে।
অন্যদিকে রেশন দুর্নীতিতে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এখন জেলে। তাঁর ঘনিষ্ঠ উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য ধরা পড়েছে। রেশন দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। আর এখান থেকেই ইডি অফিসাররা জানতে পেরেছেন, শঙ্কর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে ৮টি বিদেশি মুদ্রা বিনিময় সংস্থা রয়েছে। আর এগুলি নজরে এসেছে কারণ, ওই সমস্ত সংস্থায় যে অঙ্কের লেনদেনের অনুমতি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছিল, আর যা করা হয়েছে সেটার পরিমাণ অনেক বেশি।
আরও পড়ুন: রামমন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা ‘সামাজিক উৎসব’, বার্তা দিল নাখোদা মসজিদ
ইডির প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ থেকে ২০২২ পর্যন্ত প্রায় ২৫০ জন ক্যারিয়ারের হাত দিয়ে বিদেশে ডলার পাচার হয়েছে। শঙ্কর ও তাঁর ছেলে শুভর নামে দুবাইয়ে একটি সংস্থার হদিশ মিলেছে। সেখানে হাওয়ালার মাধ্যমেও টাকা জমা পড়েছে আবার ক্যারিয়ারদের মাধ্যমেও টাকা পৌঁছেছে। ভুয়ো সংস্থা খুলে সেখানে বাহকদের নিয়ে যাওয়া টাকা জমা করা হয়েছে। এই তথ্যও পেয়েছে ইডি। তাই এখনও ওই বাহকদের খোঁজা হচ্ছে। তাহলে দুটি বিষয় পরিষ্কার হবে। এক, এখান থেকে কে তাঁদের টাকা দিয়েছিল। দুই, ওখানে কাকে তাঁরা টাকা হ্যান্ডওভার করেছিলেন।