রাজ্যজুড়ে তীব্র দাবদাহে পুড়ছে মানুষজন। এই আবহে গত ১৫ দিনের রোজই কোনও না কোনও সময় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। দক্ষিণ কলকাতা থেকে শহরতলির বেশ কিছু এলাকার মানুষ এই সমস্যায় পড়েছেন। এমনকী দেখা গেল, বিদ্যুৎ আছে। অথচ ভোল্টেজ কমে যাওয়ায় চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তার জেরে আলো নিজস্ব জোর হারাচ্ছে। ভোল্টেজের এই ওঠানামায় ফ্রিজ, এসি–সহ নানা বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম বিকল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফ্যান নিজস্ব গতি হারিয়ে ধীরে চলছে। গরমকালে যা মেনে নেওয়া কঠিন। এমনকী লো ভোল্টেজের জেরে চলছে না কলকাতা পুরসভার জলের পাম্প। সুতরাং সবদিক দিয়ে নাকাল হতে হচ্ছে।
সারাদিন কাজ করে রাতের বেলায় যখন মানুষজন শুতে যাচ্ছেন তখন লোডশেডিং হয়ে যাচ্ছে। তাতে প্রাণ ওষ্ঠাগত অবস্থা হচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহে বিস্তর গোলযোগের জেরে লোকসভা নির্বাচনের সময় নাকাল বাসিন্দাদের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলরদের। এই অবস্থায় লোকসভা নির্বাচনের স্ট্র্যাটেজি ঠিক করতে শুক্রবার বৈঠক ডাকেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আর সেখানেই লোডশেডিং এবং ভোল্টেজ কমা–বাড়ার সমস্যার কথা প্রথম তুলে ধরেন পুরসভার মুখ্য সচেতক বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত। তাঁকে সমর্থন করেন দক্ষিণ কলকাতা ও সংযোজিত এলাকার একাধিক কাউন্সিলর।
আরও পড়ুন: ‘দু’হাজার টাকায় মহিলাদের ইজ্জত বিক্রি বিজেপির, রাজ্যপাল পলাতক’, তোপ অভিষেকের
মেয়র ফিরহাদ হাকিম তখন মন দিয়ে গোটা বিষয়টি শোনেন। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, গত রবিবার বাঘাযতীন এলাকায় ভোল্টেজের অবস্থা খুব খারাপ ছিল। তার জেরে কলকাতা পুরসভার পাম্প চালানো সম্ভব হয়নি। বাধ্য হয়ে এই এলাকার জি ব্লকে কলকাতা পুরসভার গাড়িতে করে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। স্থানীয় কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য বলেন, ‘ঠিক ১৫ দিন ধরে ওয়ার্ডের নানা জায়গায় ভোল্টেজ যেমন কমে যাচ্ছে, তেমনই দিনে বারবার লোডশেডিং হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। এই ঘটনার ফলে আমাদের ভুল বুঝছেন বাসিন্দারা। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’
এছাড়া কলকাতা পুরসভার ১১ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তারকেশ্বর চক্রবর্তীর কথায়, ‘টালিগঞ্জ, যাদবপুর, পাটুলির অনেকটা অংশে লো ভোল্টেজের কারণে বাসিন্দারা ক্ষোভ জানাচ্ছেন।’ নিউ আলিপুর এলাকার কাউন্সিলার জুঁই বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘কয়েকটি জায়গায় লোডশেডিং হচ্ছে। আমার কাছে সেই খবর আসছে।’ ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্ত বলছেন,‘আজাদগড়, গল্ফগ্রিন এলাকায় লোডশেডিং হচ্ছে। আর রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর পর্যন্ত ভোল্টেজ কম থাকছে। বাসিন্দারা আমাকে ফোন করে এমন অভিযোগ জানাচ্ছেন।’ সব শুনে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘শহরের সব জায়গায় যাতে ভোল্টেজ ঠিক থাকে এবং লোডশেডিং না হয় তার জন্য সিইএসসি’কে অনুরোধ করেছি। ওঁরা আমাকে আশ্বস্ত করেন।’