পারাদীপ ঘোষ, কলকাতা: বাংলা ফুটবলে জিয়ন কাঠি হয়ে উঠবে লা লিগা ? সম্ভাবনা তো রয়েছেই! আর স্বপ্নের শুরু তো হয়েই গিয়েছে! বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টায় এক টেবিলে বসানো গিয়েছে দুই ভিন্ন দেশের ফুটবল কর্তাদের। আলাপ আলোচনা শেষে স্বাক্ষরিত হয়েছে মউ। স্বপ্নের শুরু টা তো সেখান থেকেই।
ফিফা ক্রমপর্যায়ে প্রথম দশে থাকা দেশটা যদি বাংলার ফুটবলের উন্নতির জন্য এগিয়ে আসে, তাহলে আজ না হোক দশ বছর পরে বিশ্ব ফুটবলের মানচিত্রে নিজেদের চেনাতেই পারে এই রাজ্যের ফুটবল প্রতিভারা। মেসি, রোনাল্ডোরা লা লিগা ছাড়ার পর জনপ্রিয়তায় একটু টোল পড়েছে বটে কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতার মানে এখনও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের পরেই বিশ্ব ফুটবলে নাম আসবে লা লিগার। রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, সেভিয়া, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ অ্যাথলেটিক বিলবাও। মানের দিক থেকে খুব কাছাকাছি। জাভি , ইনিয়েস্তার দেশে ফুটবল শুধু নিছক একটা খেলা নয় আমাদের বাঙ্গালিদের মতোই ফুটবল স্প্যানিশদের রক্তে, আবেগে! আর এই জায়গা থেকেই খুব কাছাকাছি চলে আসতে পারে ভৌগোলিক দুরত্বে হাজার মাইল দূরের দুটো প্রদেশ।
আরও পড়ুন– ৮ কেজি পায়জোর, ২ কেজির আংটি; পরার মতো পা পেলে বিনামূল্যে দেবে নির্মাতা সংস্থা !
লা লিগার চেয়ারম্যান জেভিয়ার তেভেজ পর্যন্ত স্বীকার করে নিয়েছেন এই রাজ্যে ফুটবলের প্রতি মানুষের অকৃত্রিম ভালবাসার কথা। মউ স্বাক্ষরের মঞ্চে মোহনবাগান সচিব দেবাশিষ দত্ত কিংবা মহমেডান সচিব ইস্তিয়াক আহমেদ সহজ ভঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন নিজেদের ক্লাবের ঐতিহ্য বাংলার ফুটবলের ইতিহাস। সময় নিরিখে লা লিগার থেকেও প্রাচীন কলকাতা ফুটবল লিগ। দেবাশিষ দত্ত, ইস্তিয়াক আহমেদদের বক্তব্যের শব্দে শব্দে ঝরে পড়েছে ফুটবলের প্রতি এই রাজ্যের মানুষের আবেগ, ভালবাসার প্রতিফলন। আর তাতেই কাজটা সহজ হয়ে গিয়েছে। লা লিগা এগিয়ে এসেছে বাংলার সঙ্গে মউ সইতে।
আরও পড়ুন- দৈর্ঘ্যের বিচারে সবচেয়ে বড় রানওয়ে রয়েছে ভারতের কোন কোন বিমানবন্দরে ? দেখে নিন তালিকা
সেদিন আর দূর নয়, রিয়াল মাদ্রিদ বা বার্সেলোনার শীর্ষকর্তারা বাংলায় এসে অ্যাকাডেমি তৈরির পরামর্শ বা টেকনিক্যাল সাপোর্ট যোগাবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিনামূল্যে রাজ্যে অ্যাকাডেমি তৈরির জমি পর্যন্ত দিতে রাজি!
বাংলার ফুটবলে স্প্যানিশ কানেকশন অবশ্য প্রথম নয়। ইন্ডিয়ান সুপার লিগে কলকাতার সেরা মুকুট ছিনিয়ে নেওয়া, সেও তো প্রথমবার এক স্প্যানিশ ক্লাবের হাত ধরেই। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে কলকাতার ফ্র্যাঞ্চাইজির সেতুবন্ধন সেদিন ভারতীয় ফুটবলে চমকে তৈরি করেছিল। আর খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে একটা সময়ে ব্রাজিল ফুটবলের প্রভাব ছিল ভারতীয় ফুটবলে। ব্রাজিল থেকে আসা ফুটবলাররা দাপিয়ে বেড়াতেন কলকাতা লিগ থেকে আই লিগে। লাতিনদের সরিয়ে বর্তমানে সেখানে স্প্যানিশ সাম্রাজ্য। স্পেনের কোচ, ফুটবলারদের ছড়াছড়ি ভারতীয় ফুটবলে। তাই এবার রাজ্য সরকারের দৌত্য ও সমর্থনে আরও একটা চমকের আশা করা যেতেই পারে।
প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, মানস ভট্টাচার্য কিংবা রঞ্জন ভট্টাচার্যর মত প্রাক্তনরা বলছেন, ‘‘বাংলার ফুটবলে সুদিন আসতে দেরি নেই। স্প্যানিশ টেকনিক্যাল সাপোর্ট পাওয়া গেলে আবারও মাথা তুলে দাঁড়াবে বাংলার ফুটবল।’’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাতেও কসুর করছেন না এই রাজ্যের প্রাক্তন ফুটবলাররা। প্রাথমিক কাজটা শুরু হয়ে গিয়েছে। দরকার এবার সেই ধারাটাই বজায় রাখা। চালিয়ে নিয়ে যাওয়া। জয় হো!
Tags: Mamata Banerjee