অধিকারীদের দুর্নীতিও যে আছে সেটা গতকাল নবান্ন থেকে নাম না করে শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। তখনই গর্জে উঠেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু আইন যে আইনের পথে চলবে সেটা স্পষ্ট করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তারপরই আজ, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় গর্জে উঠলেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর সর্বশেষ আয়কর রিটার্ন সেখানে পোস্ট করে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর নাম নেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরও এমন আক্রমণ পায়ে পা দিয়ে ঝগড়ার সামিল বলে অনেকে মনে করছেন। শুভেন্দুর চ্যালেঞ্জ, যা তিনি আয়কর রিটার্নে দাবি করেছেন তার চেয়ে ১ পয়সাও বেশি তিনি রোজগার করেছেন সেটা প্রমাণ করে দেখাক সরকারি গোয়েন্দা বাহিনী।
নবান্নে বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কারও নাম মুখে নেননি। তবে তাঁর বক্তব্যের ইঙ্গিত শুভেন্দুর দিকেই ছিল বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারা। কারণ হলদিয়া এবং দিঘায় সরকারি জমি বিক্রি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল কংগ্রেসে থাকার সময়ে শুভেন্দু অধিকারী হলদিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁর বাবা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী ছিলেন দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান। মুখ্যমন্ত্রী বুধবার বলেছেন, তখন মন্ত্রী ছিলেন বলে ওদিকে নজর দেওয়া হয়নি। ছেড়ে রেখেছিলাম। কিন্তু এবার সব তদন্ত হবে। কাগজ তৈরি করতে বলে দিয়েছি।
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যেই ঘাবড়ে গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা বলে অনেকে মনে করছেন। তার উপর আজ তাঁর ভাই সৌম্যেন্দু অধিকারীকে কাঁথি থানায় তলব করা হয়েছে। এই আবহে বিরোধী দলনেতার সাম্প্রতিক আয়কর রিটার্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট বেশ আৎপর্যপূর্ণ। সেখানে তিনি বেশ কিছু কড়া কথাও লিখেছেন। আবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জও ছুড়েছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছিলেন। কারও নাম নেননি। সেখানে আগ বাড়িয়ে শুভেন্দুর টুইট অনেককে ভাবিয়ে তুলেছে। তবে এই আয়কর রিটার্ন নিয়ে শুভেন্দুকে তুলোধনা করেছেন কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘নারদ কাণ্ডে কাগজে মুড়ে যে টাকাটা নিয়েছিলেন শুভেন্দু তা তো আয়কর রিটার্নে দেখলাম। শুভেন্দু মানুষকে বোকা ভেবেছেন। রাখাল বেরা কে? তাঁর সঙ্গে শুভেন্দুর সম্পর্ক কী? রাখাল বেরা দিঘায় হোটেল করলেন কীভাবে? এই প্রশ্নগুলির জবাব কি উনি দেবেন।’
আরও পড়ুন: শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌম্যেন্দুকে থানায় তলব করল পুলিশ, সারদা মামলার তদন্তে ডাক
ঠিক কী লিখেছেন শুভেন্দু? মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠকের পরই গর্জে উঠেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর আজ, বৃহস্পতিবার বিরোধী দলনেতা এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘গতকাল আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছিলেন আপনি। যদিও আমার নাম নেওয়ার সাহস হয়নি আপনার। আমার বিরুদ্ধে সিআইডি, এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ, আইবি’কে দিয়ে তদন্ত করান। হিসাব বহির্ভূত এক পয়সা উপার্জন করেছি কি না, প্রমাণ করুন। কালীঘাটে হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের জমির চুক্তি প্রকাশ্যে আনুন। জমির দখল বৈধ না অবৈধ সেটা সবাইকে জানতে দিচ্ছেন না কেন? আশা করি আপনি আমার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবেন।’