জানেন কি আপনার দেহেই বেঁচে থাকে ১০টি জীবন্ত প্রাণী !!! চিনে নিন তাদের ~

জানেন কি আপনার দেহেই বেঁচে থাকে ১০টি জীবন্ত প্রাণী !!! চিনে নিন তাদের ~

“তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা… মন জানো না…” মন তো দূর নিজেদের দেহের খবর কি আমরা রাখি? প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠা থেকে আবার শুতে যাওয়া অব্ধি, দৈনন্দিন সব কাজে আমাদের শরীর ও জীবনযাত্রার সাথে জুড়ে আছে আরও কিছু পরজীবী প্রাণী।

হ্যাঁ, মানুষের শরীরে এত এত প্রাণী বাস করে যে একে পুরোপুরি একটা বাস্তুসংস্থান এমনকি একটি গ্রহের সাথে তুলনা করা যায়! বেশিরভাগ সময়ে এদের উপস্থিতি আমরা টেরও পাই না। তবে মাঝে মাঝে এরা শরীরে তৈরি করে অস্বস্তি এবং রোগ। আসুন পরিচয় করে নেওয়া যাক তাদের সাথে যারা আপনার শরীরটাকে দিব্বি তাদের ঘর-বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছে…

১) অ্যাথলিট’স ফুট ফাঙ্গাসঃ

Trichophyton, Microsporum  এবং Epidermophyton নামের ফাঙ্গাসগুলো ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় একজনের শরীর থেকে অন্যের শরীরে ছড়িয়ে যায়। এরা পায়ের নখের ভেতরে গিয়ে লুকিয়ে থাকে, এমনই অনেক সময়ে মাথার তালুতেও ছড়িয়ে যেতে পারে।

২) ভ্যাজাইনাল ফ্লোরাঃ

কিছু উপকারি ব্যাকটেরিয়া বাস করে নারীদের জননাঙ্গে এবং উৎপাদন করে ল্যাকটিক এসিড, যার ফলে কিছু ক্ষতিকর জীবাণু যেমন Candida albicans জন্মাতে পারে না।

৩) ফার্মিকিউট এবং ব্যাকটেরয়েডঃ

কমপক্ষে ৫০০ প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া বাস করে মানুষের পেটের ভেতরে যাদের ওজন প্রায় ৩.৩ পাউন্ড। এরা কার্বোহাইড্রেট এবং অন্যান্য কিছু পুষ্টি উপাদান ভেঙে ফেলে এবং হজমে সহায়তা করে। এদের উপস্থিতির কারণে ক্ষতিকর কিছু ব্যাকটেরিয়া পেটের ভেতরে জন্মাতে পারে না।

৪) হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাসঃ

শতাধিক হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (HPV) মানুষের শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। এদের মাঝে টাইপ ১৬ এবং ১৮ বেশি ক্ষতিকর, যাদের কারণে বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার হতে দেখা যায়।

৫) মাথার উকুনঃ

Pediculus humanus capitis হোলো আমাদের খুব পরিচিত এবং বিরক্তিকর উকুন। এরা এতই পুরনো যে ১০ হাজার বছর পুরনো একটি চুলের সাথে আটকে থাকা অবস্থাতেও একটি উকুন পাওয়া গেছে। চ্যাপ্টা, উড়তে অক্ষম এসব ক্ষুদ্র প্রাণী আমাদের রক্ত খেয়ে বেঁচে থাকে এবং এদের ডিম পারে আমাদের চুলের মাঝে।

৬) ডেন্টাল স্ট্রেপ্টোকক্কাসঃ

নিয়মিত ব্রাশ না করলে আমাদের দাঁতের ওপরে একটা ব্যাক্টেরিয়ার স্তর পড়ে যায়। এদের মাঝে বেশিরভাগই হলো Streptococcus sanguis এবং S. mutans। নিয়মিত ব্রাশ করলেও এরা কিছু পরিমাণে দাঁতে থেকেই যায়। দাঁত ওঠার সাথে সাথে এরা আবির্ভূত হয়, আর থাকে দাঁত খসে না যাওয়া পর্যন্ত।

৭) ডেমোডেক্স মাইটঃ

এরা বাস করে আমাদের চোখের পাতার গোড়ায়। এখানেই খাওয়া দাওয়া বংশবৃদ্ধি সব করে এরা আর বের হয় না সচরাসর। মাঝে মাঝে আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি তখন আমাদের মুখের ওপরে চলাফেরা করে। এরা হয়ে থাকে ০.৩ মিলিমিটারের মতো লম্বা। বয়স যত বাড়তে থাকে, এদের দ্বারা আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা তত বাড়ে।

৮) শিংগলসঃ

একবার যদি আমাদের চিকেন পক্স হয়ে থাকে তবে varicella-zoster নামের ভাইরাসটি আমাদের শরীরে থেকেই যায়। মেরুদণ্ডের কাছে স্নায়ুতে থেকে যায় এরা। বয়স বাড়লে বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে এই ভাইরাস আবার সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে। তখন এরা ব্যাথা এবং ত্বকে র‍্যাশ তৈরি করে যাকে বলা হয় শিংগলস।

৯) ফসিল ভাইরাসঃ

আপনি কি জানেন, আপনার ডিএনএর ভেতরেও যে কিছু পরিমাণে অন্য পরজীবী প্রাণীর অংশ আছে? আমাদের পূর্বপুরুষকে যেসব ভাইরাস আক্রমণ করেছিলো তারা এসব আবর্জনা রেখে গেছে আমাদের শরীরে। এসব ডিএনএ টুকরো নিজেরাই সময়ের সাথে উন্নত হয়েছে এবং তারা আমাদের ডিএনএর ভেতরে নিজেদের কপি রেখে যেতে পারে। এর থেকে তৈরি হতে পারে মানবদেহের বিভিন্ন জেনেটিক রোগ।

১০) স্ট্যাফাইলোকক্কাসঃ

শুধু যে আমাদের পেটের ভেতরে ব্যাকটেরিয়া রয়েছে তাই নয়, আমাদের ত্বকেও রয়েছে ট্রিলিয়নের মতো ব্যাকটেরিয়া। এরা ঘাম থেকে তৈরি করে দুর্গন্ধ। এসব ব্যাকটেরিয়া হয়ে থাকে ১৮২ প্রজাতির। এসবের বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়া অবশ্য ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here