নবান্নের শীর্ষ কর্তা থেকে জেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যে আলিপুর হাওয়া অফিসের তরফে নবান্নকে ঝড়ের সমস্ত তথ্য দেওয়া হচ্ছে। আর এই তথ্য পাওয়ার পরেই বুধবার জরুরি বৈঠক করেন। জানা যাচ্ছে, আজ বৃহস্পতিবারও দফায় দফায় বৈঠক করেছেন মমতা।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রত্যেকবছর একটা করে দুর্যোগ আসে। একদিকে করোনা অন্যদিকে এই ঝড়ের পূর্বাভাস। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এদিন মমতা বলেন, আমফানের সময় উনি (মোদী) এলেন। আকাশ থেকে হাত বেড়ে চলে গেলেন। এক টাকাও দেননি বলে দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর মধ্যেই ফের দুর্যোগ। সামলাতে তাও হবে। কেন্দ্র সাহায্য না করলেও আমরা দুর্যোগ মোকাবিলাতে তৈরি। এমনটাই মন্তব্য রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের।
অন্যদিকে, মোকাবেলায় একগুচ্ছ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে। বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার আলিপুরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলাশাসক পি উলগানাথান সমস্ত বিডিও, মহকুমার শাসক ও অন্যান্য দপ্তরে আধিকারিকদের সঙ্গে একটি জরুরি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে , জেলায় যে সমস্ত সাইক্লোন সেন্টার গুলি বানানো হয়েছে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য সেগুলি উপযুক্ত করার জন্য বলা হয়েছে। সেই সমস্ত ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রগুলির জেনারেটর, টয়লেট ও অন্যান্য দ্রব্য মজুদ করতে বলা হয়েছে। তারপলিন ,ওষুধ, চাল কাপড় সহ সমস্ত কিছু মজুদ রাখতে বলা হয়েছে। যদি সেগুলোর অভাব থাকে তাহলে কি কি অভাব আছে তা দ্রুত প্রশাসনকে জানাতে বলা হয়েছে।
প্রত্যেকটি এলাকার মহকুমা শাসক এবং বিডিও দেরকে এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান দের কে সমন্বয় মিটিং করে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শুধু তাই নয় মানুষকে সচেতন করার জন্য পঞ্চায়েত গুলোকে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মাইকের মাধ্যমে প্রচার করতে বলা হয়েছে। তবে সবটাই করতে হবে কোভিড বিধি মেনে। শুধু তাই নয় সমস্ত মত্স্যজীবীরা যাতে সমুদ্রে না যায় তার জন্য সমস্ত মত্স্যজীবীদের কে বলা হয়েছে।
মাছ ধরা নৌকা ও টলার যেগুলো ইতিমধ্যেই মাছ ধরার কাজে নিযুক্ত সেগুলো কে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। ২৩ তারিখের মধ্যে সমস্ত মত্স্য জীবীদের ফেরার নির্দেশ। অন্যদিকে প্রতিটি মিউনিসিপালিটি, পঞ্চায়েত সমিতি এবং বিডিওগুলি তে কন্ট্রোল রুম তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেখান থেকে এই ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে প্রতিমুহূর্তে খবরা খবর পেতে সুবিধা হবে এলাকাবাসীর।
ঘূর্ণিঝড় শুরু হওয়ার আগেই নিচু এলাকা থেকে স্থানীয় মানুষদের কে নিরাপদ জায়গায় সরাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঝড় শেষ হওয়ার পরবর্তী সময়ে কোস্টকার্ড এবং উদ্ধারের কাজে ব্যবহৃত যানবাহনগুলোকে উপযুক্ত জায়গাতে নিযুক্ত করার জন্য বলা হয়েছে। শুধু তাই নয় প্রতিটি এলাকায় যে সমস্ত বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর এর কর্মীরা থাকবেন তাদের সঙ্গে মহাকুমা শাসকদেরকে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে।
স্পিড বোট, সাধারণ বোট, জেসিবি মেশিন সবই মজুদ রাখতে বলা হয়েছে। সেচ দফতরকে নদীপথ গুলি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। কারণ যেহেতু এই ঘূর্ণিঝড় যখন আছড়ে পড়বে তখন নদীতে কোটাল থাকার বাড়বে প্রবল জল। তাই নদী বাঁধ ভেঙে গেলে দ্রুত মেরামতি করা সম্ভব হয় তার জন্য সেচ দফতরকে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে।
দুটি কুইক রেসপন্স টিমের রাখা হচ্ছে একটি কাকদ্বীপ অন্যটি ক্যানিংয়ে। এ বিষয়ে জেলাশাসক বলেন আমরা সর্বত্র ভাবে প্রতিটি ডিপার্টমেন্টকে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। বিদ্যুত্ ,পানীয় জল, এবং রাস্তা পরিষ্কার করা গাছ কাটা সহ অন্যান্য দপ্তর কেও তৈরি রাখা হয়েছে।