রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্থাভাজন তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এই আবহে গতকাল বামেদের জমানায় রেশন দুর্নীতি নিয়ে আক্রমণ শানিয়েছিলেন মমতা। দাবি করেন, আগের সরকারের সময়ে ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড ইস্যু করা হয়েছিল। মমতার সেই অভিযোগের জবাবে এবার মুখ খুললেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। মমতাকে পালটা তোপ দেগে সেলিম বলেন, রেশন দুর্নীতির সিংহভাগ টাকা গিয়েছে মমতার কাছে। (আরও পড়ুন: ভরসা নেই কারও ওপর, বালুর বাড়ি থেকে আসা খাবার আগে খাওয়ানো হচ্ছে বাড়ির লোককেই)
মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক দশক ধরে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে খাদ্যমন্ত্রী করে রেখেছিলেন। এখন যেটা উদ্ধার হচ্ছে, সেটা চার আনার অংশ। বাকি বারো আনা কালীঘাটে আছে।’ এদিকে মমতার ভুয়ো রেশন কার্ড অভিযোগের জবাবে সেলিম বলেন, ‘এত ভুয়ো কার্ড থাকলে এতদিন কী করছিলেন? ১৩ বছর ধরে ঘুমোচ্ছিলেন?’ এর আগে রেশন দুর্নীতি নিয়ে আগের বাম সরকারকে তোপ দেগে গতকাল মমতা বলেন, ‘আমার যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম, ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড ছিল। আজ সিপিএম বড় বড় কথা বলছে। বামফ্রন্ট আমলের যাঁরা বড়বড় কথা বলছেন, সেই ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড ছিল মানে সেগুলো দিয়ে কেউ রেশন তুলত। সেই রেশন কোথায় যেত? সেই টাকা কোথায় যেত? আজও পর্যন্ত তার তদন্ত হয়নি।’
এদিকে গতকাল মমতা বলেন, ‘অনেক দালাল মানুষের রেশন নিয়ে বাইরে বিক্রি করে দিত। তাদের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত করেছি। গ্রেফতার করে চার্জশিট দাখিল করেছি। অনেক রেশন দোকান বাতিল করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম আমরা। সেগুলিকে নতুন লোকেদের দেওয়া কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু আমার তা করতে পারিনি। এই নিয়ে আমাদের আদালতের আদেশ মানতে হয়। আমরা যখনই কোনও দালালকে ধরেছি, যখনই রেশন দোকান বাতিল করার কথা বলেছি, আমাদের আদালতে যেতে হয়েছে। আদালতে এই সব মামলায় বারবার স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। এর জেরে ২ থেকে ৩ বছর লড়াই করতে হয়েছে আমাদের। তবে এর মধ্যেও এমন একটাও পরিবার দেখাতে পারবেন না, যারা রেশন চেয়ে পায়নি। কেন্দ্রীয় সরকারও আমাদের প্রশংসা করেছে বলেছে, ১০০ শতংশ ডিজিটাল কার্ড করে দিয়েছি। এটা করতে সময় লেগেছে। এখন সমস্তটা পরিষ্কার হয়েছে।’
মমতা আরও বলেন, ‘ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার থেকে চাল কিনতে বাধ্য হতাম আমরা। তবে আচমকা তারা বন্ধ করে দিল সেটা। সেই সময় গণবণ্টন ব্যবস্থাই প্রায় বন্ধ হতে বসেছিল। তখন আমরা ভাবলাম, ভাঙা চাল খাওয়ার চেয়ে আমরা আমাদের কৃষকের ঘরের চাল কিনব। গত ৪ থেকে ৫ বছর ধরে আমরা তাই কৃষকদের থেকে চাল কিনছি। আমরা চাল কিনি ২৩ থেকে ২৬ টাকায়। তবে আমরা বিনামূল্যে রেশন দিচ্ছি।’