রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন পালটা কর্মসূচি ঘোষণা করায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করলেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সঙ্গে মেট্রোর কাজের জন্য মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের জমি দিতে অস্বীকার করায় দিলীপবাবু বললেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনও উন্নয়ন নিয়ে ভাবেন না। কেবল রাজনীতি নিয়েই ভাবেন।
বুধবার সকালে দিলীপবাবু সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘যারা চিরদিনই দেশের একতা – সংহতির বিরুদ্ধে কাজ করে এসেছেন তারাই সংহতি মিছিল করছেন। এর থেকে বিড়ম্বনা কী হবে আর? কেন্দ্রীয় সরকার বা দেশজুড়ে যে অনুষ্ঠান হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার বিরোধিতা চিরদিন করেছেন। এটাকে উনি রাজনীতি মনে করেন। এসব করতে করতে এমন জায়গায় পৌঁছে গেছেন যে তার আলাদা জাতীয় সংগীত চাই, জাতীয় পতাকা চাই। আলাদা হয়তো কোর্টও চাইবেন। আলাদা পার্লামেন্ট তৈরি করার কথাও এক সময় বলেছিলেন। যার ব্যবহারের মধ্যে, চিন্তা ভাবনার মধ্যে সংহতি নেই তিনি যতই সংহতি যাত্রা করুন, কিচ্ছু হবে না’।
মেট্রোর কাজের জন্য মমতা রাজ্যের জমি দিতে অস্বীকার করায় তিনি বলেন, ‘উনি কোথায় জমি দিয়েছেন? রাজ্য সরকার জমি দিচ্ছে না বলে পশ্চিমবঙ্গে রেলের ৬০টা প্রকল্প আটকে আছে। বারাসতের কাছে এসে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ আটকে গেল, কারণ পশ্চিমবঙ্গ সরকার জমি দেয়নি। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে ঘুরতে হচ্ছে। এখানে রাস্তাঘাট করবে না, করতে দেবে না। রেল লাইন পাততে দেবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনও উন্নয়ন নিয়ে ভাবেন না। কেবল রাজনীতি নিয়েই ভাবেন’।
দক্ষিণেশ্বর স্টেশনকে পুরোদমে কাজে লাগানোর জন্য স্কাইওয়াকের প্রবেশ – বাহির পথ স্থানান্তরের প্রস্তাব দিয়ে রাজ্যকে চিঠি দিয়েছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মেট্রোর সেই প্রস্তাবকে দক্ষিণেশ্বর মন্দির ভাঙতে বলার সামিল বলে মঙ্গলবার নবান্নে মন্তব্য করেন মমতা। বলেন, ‘এদের ঔদ্ধত্য দেখলে আমি অবাক হয়ে যাই। হাত দিচ্ছে কোথায়? হাত দিচ্ছে দক্ষিণেশ্বরে? ক’দিন বাদে বলবে কালীঘাটটা ভেঙে দেও। শুনব না! যদি বলে, নাখোদা মসজিদ ভেঙে দেও, আমি থোড়াই শুনব। এগুলো মানতে আমি বাধ্য নই, মানতে রাজি নই। ওদের আমার সঙ্গে বসতে দিন। ম্যাপ নিয়ে বসলে হবে না। ফিজিক্যালি ভেরিফিকেশন করতে হবে’।
একই সঙ্গে রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন পালটা কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি বলেন, আপনারা আমাকে বারবার জিজ্ঞাসা করছেন বিভিন্ন মন্দির নিয়ে। আমি বার বার বলেছি ধর্ম যার যার আপনার, উৎসব কিন্তু সবার। ২২ জানুয়ারি আমি নিজে দলীয় ভাবে একটা ব়্যালি করব। আমি প্রথমে নিজে কালী মন্দিরে যাব। ওটা সবাই যাবে না। আমি মা কালীকে পুজো দিয়ে হাজরা থেকে সর্বধর্মের মানুষকে নিয়ে মিছিল করে পার্ক সার্কাস ময়দানে গিয়ে আমরা একটা মিটিং করব। মা কালীকে ছুঁয়ে, মন্দির – মসজিদ – গুরুদ্বার, ওখানে অনেক গীর্জাও আছে সব কিছুকে ছুঁয়ে সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে আমরা একটা ব়্যালি করব। আমরা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মিছিলটা করব। শুভানুধ্যায়ীরা আসতে পারেন সংহতি মিছিলে। এছাড়া প্রতিটা জেলায় ব্লকে ব্লকে ২২ জানুয়ারি বেলা ৩টায় সম্প্রীতি মিছিল হবে সবাইকে নিয়ে’।