নিউটাউন মেলাগ্রাউন্ডে বিজেপি কর্মীদের দূর্গাপুজো করার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মেলা গ্রাইন্ডে পুজো করার অনুমতি চেয়ে পুলিশ এবং হিডকোর কাছে আবেদন জানিয়েছিল ‘মানবজাতি কল্যাণ ফাউন্ডেশন’। সংস্থাটি বিজেপি কর্মীদের দ্বারাই পরিচালিত ছিল। কিন্তু দু’পক্ষই অনুমতি দেয়নি পুজো করার। অনুমতি না মেলায় আদালতের দ্বারস্থ হয় সংস্থাটি।
শুক্রবার এই মামলায় বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য জানান, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৯ অনুযায়ী সকল নাগরিকের স্বাধীন চিন্তাভাবনা প্রকাশের অধিকার রয়েছে। সেই অধিকারের মধ্যে দুর্গাপুজোর মতো উৎসবও পড়ে। তাই কারও এই অধিকার খর্ব করা যায় না।
শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবীর যুক্তি ছিল, সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকারি পার্ক, রাস্তা, ফুটপাত ঘিরে পুজো করার অধিকার নেই কোনও নাগরিক বা সংস্থার। আইনজীবীর এই দাবি খারিজ করে বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, এ ক্ষেত্রে পুজোর জন্য যে জায়গার অনুমতি চাওয়া হয়েছে সেটি কোনও রাস্তা, ফুটপাত বা খেলার মাঠ নয়। জায়গাটি নির্দিষ্ট করে মেলার জন্যই পরিচিত। তাই ‘মানবজাতি কল্যাণ ফাউন্ডেশন’ নিউটাউন মেলা গ্রাউন্ডে দুর্গাপুজো করতে চাওয়ার আবেদনে যুক্তি রয়েছে।
(পড়তে পারেন। দুর্গাপুজো কি ধর্মনিরপেক্ষ? গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের)
(পড়তে পারেন। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে ফের আদালতের ভর্ৎসনার মুখে CBI, উঠছে সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন)
বিচারপতি ভট্টাচার্যের তাঁর পর্যবেক্ষণ আরও বলেন, দুর্গাপুজো উৎসব কেবলমাত্র একটি ধর্মীয় পুজো বা কোনও নারীশক্তির প্রদর্শন নয়। এই উৎসবে বিভিন্ন সংস্কৃতির মেলবন্ধন হয়। তাই দুর্গাপুজো অনেক বেশি ধর্মনিরপেক্ষ।
প্রসঙ্গত, দুর্গাপুজো করার জন্য গত বছরও পুলিশ ও হিডকোর কাছে আবেদন জানিয়ে অনুমতি মেলেনি। আদালতে অনুমতি নিয়ে পুজো করতে হয়েছিল ওই সংস্থাকে। এবছর ফের এই বিষয় হওয়াতে ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারপতি।
মামলাকারীর আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি বলেন, ‘এ রাজ্যে দুর্গাপুজো করার অধিকার মেলে না। অন্য সব কিছুর অনুমতি পাওয়া যায়।’