ওয়েব ডেস্কঃ শেখার কোনও বয়স নেই. মার্শাল আর্ট এমন এক শিক্ষা, যা যে কোনও বয়সে শেখা যায়. এরই অন্যতম অংশ তাই চি. সন্ধি এবং পেশী মজবুত করা, পেশীর নমনীয়তা বৃদ্ধি ও সমন্বয় সাধন, মানসিক বিকাশের পরিপূর্ণতা-সবেতেই প্রয়োজন এই প্রযুক্তিটির।
তাই চি এছাড়াও অস্টিওপরোসিসের মতো রোগের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা নেয়। যে কোনও বয়সের মানুষ তাই চি শিখতে পারেন. এর বিশেষ কিছু অধ্যায় রয়েছে. যার মাধ্যমে শরীর ও মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা জন্মাবে আপনার। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে তাই চির গুরুত্ব জীবনে অপরিসীম।
ব্যায়ামের সাহায্যে স্বাস্থ্যের উন্নতি যদি আপনার লক্ষ্য হয়, তবে তাই চি আপনার জন্য অপরিহার্য। তাই চি শব্দের অর্থ ‘longevity exercise’। অর্থাৎ আপনি দীর্ঘ জীবনের কামনায় তাই চি অনুশীলন করতে পারেন।
যে কোনও সময় শুরু করুন…
আপনার বয়স তাই চি শেখার জন্য কোনও বাধা নয়. সমীক্ষা বলছে, অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী পঞ্চাশ বছর বয়েসের পর তাই চি শেখা শুরু করে. বয়স যত বাড়বে, তাই চি বাঁচার ইচ্ছা যেন আরও বাড়িয়ে দেয়. আপনার শরীরের কর্মক্ষমতা আরও বাড়ে, পুরোনো হতে থাকা শরীরের যন্ত্রপাতি গুলো নতুন ভাবে ব্যাযামের ফলে নতুন করে কর্মক্ষম হয়ে ওঠে.
তাই – চির ক্লাসে যোগ দিন…
আজই তাই চি শিখতে শুরু করুন. একটা নয়, চাইলে দুটো ক্লাস একসাথে করতে পারেন. মার্শাল আর্টের নানা রকমভেদের মত তাই চিও আপনাকে শেখাবে নানরকন ভাবে সুস্থ থাকার উপায়. এতে বিভিন্ন মানুষের সাথে মেলামেশা বাড়বে, কথা বলার সুযোগ থাকবে আপনার সামনে, দৈনন্দিন সামাজিকতার হার বাড়লে, মনও থাকবে প্রফুল্ল.
সময়কে নিয়ন্ত্রণ করুন তাই চি দিয়ে…
অবসর জীবনকে তাই চির প্রশিক্ষণ দিয়ে পরিপূর্ণ করুন. অবসর জীবন মানেই বিশ্রাম করে দিন কাটানো নয়. বা একঘেয়ে সময় অতিবাহিত করা নয়, তাই চি সেই একঘেয়ে জীবনকেও আনন্দে ভরিয়ে তুলতে পারে.
নিজের ক্ষমতার 70 শতাংশ দিন…
তাই চির প্রশিক্ষণে নিজের শারীরিক সক্ষমতার 70 শতাংশ অতিবাহিত করুন. তাতেই কাজ হবে.সেই ধারাবাহিকতা বজায রাখুন. শরীরের উন্নতি হবে. আর সেই পার্থক্য নিজেই বুঝতে পারবেন.
কিছু সময়ের অব্যাহতি…
শরীরের কোথাও ব্যথা থাকলে, বা কোনও আঘাত থাকলে, তার ওপর জোর করে তাই চি অনুশীলন করবেন না. তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে. নিজের শরীর বুঝে অনুশীলন করুন. প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন.
নিজের পায়ের দিকে খেয়াল রাখুন…
তাই চি-র ক্ষেত্রে পায়ের অনুশীলন ও মুভমেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ. শরীরের ব্যালান্স বজায় রাখে পা, আর সেই পায়ের ব্যালান্স বাড়ায় তাই চি. ওজন কমিয়ে দেওয়ার ফলে শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকে. ফলে শরীরের দ্রুত পতন রোধ করা যায়।
‘তাই চি’ চীনের ঐতিহ্যবাহী শারীরিক কসরত। গবেষক ড. জিয়াংলান ঝ্যাং বলেন, “এটি ধীরগতির ব্যায়াম এবং নড়াচড়ার ওপর মনসংযোগ ধরে রাখার একটি যৌথ প্রক্রিয়া। যা আপনার চাপ কমাবে এবং অবশ্যই আপনার নমনীয়তা ও সহ্য ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।”
যদিও তার এই গবেষণাটি এখনো প্রমাণিত নয় তবে অনেকের দীর্ঘায়ুর পেছনে তাই চি’র গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। সাংহাইয়ে মাঝ বয়সী ও বৃদ্ধদের মধ্যে এক গবেষণা চালিয়ে ঝ্যাং ও তার দল দেখেছেন, তাই চি এবং অন্যান্য ব্যায়াম মানুষের আয়ু বাড়াতে সাহায্য করে। প্রায় ৬১ হাজার মানুষের ওপর প্রায় পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে চালানো ওই গবেষণায় তাদের জীবনযাত্রা ও স্বাস্থ্যের বিষয়গুলো নজরে রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২২ হাজার অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন তারা সপ্তাহে অন্তত একদিন ব্যায়াম করেন এবং বাকিরা কোনো ধরণের ব্যায়াম করতেন না। গবেষণা শেষে দেখা যায় ওই সময়ে ২৪১২ জন মারা গেছেন। ‘দ্য আমেরিকান জার্নাল অ্যান্ড এপিডেমিওলোজি’তে ঝ্যাংয়ের গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।