‘প্রশাসনের চোখ খুলে গিয়েছে’ – মাসতিনেক আগে এগরায় বেআইনি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনার পর এমনই মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু আদৌও প্রশাসনের চোখ খুলেছে কিনা, সেই প্রশ্ন তুলে দিল উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর। কারণ রবিবার সেখানে বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ হল। সেই ঘটনায় কমপক্ষে ছয়-সাতজনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ওই ঘটনায় আশপাশের একাধিক বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে পুলিশ বা প্রশাসনের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। আপাতত উদ্ধারকাজ চলছে। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, বারবার পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। রমরমিয়ে চলছিল বেআইনি বাজি কারখানা। যে কারখানা থেকে মাসে-মাসে রাজ্যের এক মন্ত্রীর কাছে টাকা যেত বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী আপাতত মুখ খোলেননি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রবিবার সকাল ১০ টা ৩০ মিনিট নাগাদ দত্তপুকুরের ওই বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। বিস্ফোরণের মাত্রা এতটাই বেশি ছিল যে অন্যত্র ছিটকে গিয়েছে দেহ। আশপাশের একাধিক পাকা বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটি বাড়ির সামনের অংশও ভেঙে পড়েছে। লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে এলাকা। আশপাশের গাছপালাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকল। আগুন নেভানোর কাজ চলতে থাকে। আসে পুলিশও। যদিও পুলিশকে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee on Egra blast: পুলিশের উপর দোষ চাপিয়ে এগরা বিস্ফোরণের দায় ঝাড়লেন মমতা, বললেন ‘চোখ খুলে’ গিয়েছে
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, আজ এত পুলিশ নিয়ে এসে কী লাভ হবে? আগে ব্যবস্থা নিলে তো আজকের দিনটা দেখতে হত না। তাঁদের দাবি, ওই কারখানায় বেআইনিভাবে বাজি তৈরি করা হত। তৈরি হত বোমাও। তা নিয়ে পুলিশ এবং প্রশাসনের কাছে বারবার অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। হাত-পা গুটিয়ে বসে থেকেছে পুলিশ-প্রশাসন। এক স্থানীয় বাসিন্দার দাবি, বেআইনি বাজি কারখানার লোকজনের থেকে টাকা পেতেন পুলিশকর্মীরা। হাত ছিল তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদেরও। এমনকী রাজ্যের এক মন্ত্রীও টাকা পেতেন বলে অভিযোগ তুলেছেন।
আরও পড়ুন: Green crackers: এগরা বিস্ফোরণের পরে ঘুম ভেঙেছে, আতশবাজির ক্লাস্টার তৈরি নিয়ে বৈঠক হবে নবান্নে
তারইমধ্যে যে কারখানায় বিস্ফোরণ হয়েছে, সেই ‘কারখানার লোক শামসুল তথা মূল অভিযুক্তের’ বাড়িতে আছড়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ। যিনি তৃণমূল করেন বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আপাতত তিনি হাসপাতালে ভরতি আছেন বলে দাবি করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির বাড়িতে ইট-পাটকেল ছোড়া হতে থাকে। তাঁদের দাবি, এলাকায় আরও অনেকের বাড়িতে বাজির মশলা মজুত আছে।