ইঞ্জিনিয়রদের পৌষমাস। অতিমারির যুগে অনেকেই যখন চাকরি হারাচ্ছেন তখন প্রচুর বেতন বৃদ্ধি নিয়ে একের পর এক সংস্থা থেকে নিয়োগপত্র পাচ্ছেন তাঁরা। তবে মূলত চাকরির বাজারে জোয়ার এসেছে তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এবং ডেটা অ্যানালিস্ট বা ডেটা সায়েন্টিস্টদের। একটি সংস্থার সমীক্ষায় জানা গিয়েছে অনেকেই আছেন যাঁরা এই অতিমারির সময়ে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি নিয়ে নতুন সংস্থায় যোগ দিচ্ছেন।
কেন এই জোয়ার?
যদি একটু খেয়াল করা যায় তাহলে দেখা যাবে চাকরির জোয়ার শুধুমাত্র যাঁরা তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত আছেন তাঁদের। অন্য ক্ষেত্রগুলির চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। অনেক সংস্থা এই অতিমারির সময়ে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। তাহলে কেন শুধুমাত্র তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে জোয়ার এসেছে?
একটু বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে অতিমারির সময়ে প্রতিটি মানুষের জীবনযাত্রায় বিপুল পরিবর্তন এসেছে। মানুষ বাইরে বার হচ্ছে কম। যাবতীয় কাজ সম্ভব হলে বাড়ি থেকেই করতে পছন্দ করছে। খাবার অর্ডার থেকে শুরু করে সবজি কেনা, এমনকী ব্র্যান্ড নিউ সিনেমা দেখতে এখন আর হলে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। সব কাজ এখন সম্ভব হচ্ছে অনলাইনে। যার ফলে সংস্থাগুলির প্রয়োজন পড়ছে সফ্টওয়্যার ডেভেলপার, ডেটা অ্যানালিস্ট সহ বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত IT প্রফেশনালদের। আর সেকারণে প্রতিটি সংস্থা চাইছে অভিজ্ঞতাসম্পন্নদের নিয়োগ করতে। বাড়ছে চাকরির বাজার।
এরই মাঝে অন্য একটি সমস্যায় পড়ছেন রিক্রুটাররা। কদর বেড়ে যাওয়ায় এখন ভাল প্রার্থী খুঁজে পেতেও সমস্যায় পড়ছেন নিয়োগকারীরা। কেন এই সমস্যা? অনেক চাকরিপ্রার্থীরা কোনও একটি সংস্থা থেকে অফারলেটার পাওয়ার পরেও বিভিন্ন সংস্থায় ইন্টারভিউ দিচ্ছেন। সেখানে তাঁরা বেশি প্যাকেজ পেলে আগের পাওয়া অফারলেটার গ্রহণ করছেন না। একটি সংস্থার তরফে জানা গিয়েছে অনেক চাকরি প্রার্থী রয়েছেন যাঁরা অনবোর্ডিং প্রসেস সম্পূর্ণ করার পরেও জয়েনিং করার দিন অনুপস্থিত থাকছেন। জানুয়ারির আগে এই ড্রপ আউট রেট ছিল ৭ থেকে ১৫ শতাংশ। অর্থাৎ যাঁরা অফার লেটার হাতে পেয়েও চাকরিতে যোগ দিতেন না। কিন্তু, জানুয়ারির পর ড্রপ আউট রেট বেড়ে গিয়ে হয়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন বড় সংস্থার তরফে জয়েনিং বোনাস দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ, সেই সংস্থায় যোগ দিলে ওই ব্যক্তি বেস স্যালারির উপর অতিরিক্ত টাকা পাবেন। অনেকক্ষেত্রে তা ১৫ শতাংশ পর্যন্ত জয়েনিং বোনাস দেওয়া হচ্ছে। এই সংক্রান্ত সংস্থাগুলি অতিমারি পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগে প্রতি মাসে গড়ে ৬০০-৭০০ জনকে চাকরি অফার করলেও বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ২৫০০ । যা প্রায় ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সফটওয়্যার এবং এই সংক্রান্ত ক্ষেত্রের পরিধি বেড়েছে অনেকটাই। এই ক্ষেত্রের পরিধি ২০১৯ সালের জুন মাসে যা ছিল, তার তুলনায় চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত ৫২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এবং চলতি বছরের জুন মাস থেকে জুলাই মাসের মধ্যে এই ক্ষেত্রটির পরিধি বেড়েছে ১৮ শতাংশ। দেশের সবথেকে বেশি বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ এবং পুণেতে সবথেকে বেশি এই ক্ষেত্রটির পরিধি বিস্তৃতি লাভ করেছে। বেঙ্গালুরুতে ১৭ শতাংশ, হায়দরাবাদে ১৬ শতাংশ এবং পুণেতে ১৩ শতাংশ বেড়েছে।
Tags: Job, Recruitment