শহরে বেআইনি নির্মাণ রুখতে বারবার কড়া বার্তা দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি জানিয়েছেন কোনওভাবে বেআইনি নির্মাণ হতে দেওয়া চলবে না। কিন্তু, মেয়র এই নির্দেশ দিলেও শহরে বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক তৈরি হচ্ছে বেআইনি নির্মাণ। এ নিয়ে এবার বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করল কলকাতা পুরসভা। ১৬ জন সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ করা হল। এছাড়াও, তিনজনকে সাসপেন্ড করেছে কলকাতা পুরসভা। শুক্রবার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানের শেষে এ কথা জানান ফিরহাদ হাকিম।
আরও পড়ুন: নো-টলারেন্স নীতি মেয়রের, জোরকদমে বেআইনি নির্মাণ ভাঙছে কলকাতা পুরসভা
এদিনও বেআইনি নির্মাণ নিয়ে টক টু মেয়রে ফিরহাদের কাছে অভিযোগ আসে। একই অভিযোগ শোনার পর কার্যত ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন ফিরহাদ। তিনি মন্তব্য করেন, ‘এবার একজন সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে চাকরি খোয়াতে হবে। তবেই বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করা যাবে।’ তবে মেয়রের এই ধরনের বক্তব্যে অসন্তুষ্ট ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, অধিকাংশ ওয়ার্ডেই মূলত বেআইনি নির্মাণ হয়ে থাকে রাজনৈতিক দলের মদতে। সে ক্ষেত্রে স্থানীয় পুর প্রতিনিধিরে হাত থাকে। এ প্রসঙ্গে একটি উদাহরণ তাঁরা জানান, কয়েক মাস আগে ১০ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরের বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল পুরকর্মীদের। বাধ্য হয়েই তাদের ফিরে যেতে হয়েছিল। সেক্ষেত্রে শুধু ইঞ্জিনিয়ারদের শাস্তি দিয়ে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করা যাবে না বলে মনে করছেন ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ।
ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, কোথাও কোনও নির্মাণ হলে আগে সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়াররা খোঁজখবর নেন। যদি তাঁরা প্রথম থেকে বিষয়টিতে নজর রাখেন তাহলে সে ক্ষেত্রে বেআইনি নির্মাণ তৈরি বন্ধ হবে। মেয়রের বক্তব্য, বেআইনি নির্মাণ হয়ে যাওয়ার পর সেখানে নাগরিকরা থাকতে শুরু করলে মানবিকতার খাতিরে সেটি ভাঙতে সমস্যা হয়। কিন্তু শুরুতেই নির্মাণ ভাঙা হলে আর এই সমস্যা হয় না।
প্রসঙ্গত, মাসখানেক আগে নির্মাণ নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারদের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি বলেছিলেন, মানুষের কাছে অভিযোগ শুনতে হচ্ছে তাহলে ইঞ্জিনিয়ার রেখে লাভ কি! উল্লেখ্য, পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের দায়িত্ব রয়েছেন মেয়র নিজেই। সে ক্ষেত্রে মেয়রের নির্দেশ দেওয়ার পরও কেন নির্মাণ বন্ধ হচ্ছে না? সেই প্রশ্নের উত্তরে ফিরহাদ হাকিম জানান, শহরে বেআইনি নির্মাণ ৮০ শতাংশ কমেছে।