পেশাদারিত্ব, টার্গেট, সংস্থাকে সর্বোচ্চ জায়গায় নিয়ে যাওয়া, পদমর্যাদা। সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রায় সব অফিসেই এই ধরনের নানা বিষয় থাকে। তবে তার মধ্য়েই এমন কিছু ঘটনা থাকে যা মন ছুঁয়ে যায়। আর তেমন ঘটনাই হয়েছে মেট্রো রেলের অন্দরে।
কলকাতা মেট্রো রেলের জিএম পি উদয় কুমার রেড্ডি। কলকাতা মেট্রোর একেবারে শীর্ষ পদে রয়েছেন তিনি। তাঁরই গাড়ি চালাতেন কার্তিক চন্দ্র মণ্ডল। মঙ্গলবার ছিল তাঁর অবসরের দিন। আর সাহেবকে নিয়ে অফিসে আসার দিন শেষ। এবার অখন্ড অবসর। সেই মতো চাকরি জীবনের শেষ দিনে জেনারেল ম্যানেজারের দফতরে সংবর্ধনা জানানো হয় কার্তিক চন্দ্র মণ্ডলকে।
সবারই মন ভারাক্রান্ত। মন খারাপ তো হওয়ারই কথা। অত্যন্ত নিষ্ঠাবান কর্মী ছিলেন তিনি। রোজ নির্দিষ্ট সময়ে পি উদয়কুমার রেড্ডিকে নিয়ে অফিসে আসতেন তিনি। এরপর বিভিন্ন সাইটে যাওয়ার সময় একেবারে নির্দিষ্ট সময়ে চলে যেতেন তিনি। কিন্তু একদিন তো অবসর নিতেই হবে। সেই দিনটা ছিল মঙ্গলবার। অনেকেই স্মৃতি চারণা করছিলেন। এরপর অনুষ্ঠান শেষ হয়। একরাশ মন খারাপ নিয়ে শেষবারের মতো এই অফিসটাকে দেখে নিয়ে ধীরে ধীরে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন কার্তিক চন্দ্র মণ্ডল।
এমন সময় এগিয়ে এলেন পি উদয় কুমার রেড্ডি।। ডাকলেন কার্তিক চন্দ্র মণ্ডলকে। গাড়ির দরজাটা খুলে দিলেন জিএম। চমকে যান কার্তিক চন্দ্র মণ্ডল। এতদিন তো স্যারের জন্য দরজাটা খুলে দিতেন কার্তিক চন্দ্র। আর এদিন সেই দরজা খুলে দিলেন জিএম। প্রথমে অস্বস্তি। জিএম কোনও কথা শোনেননি। যে মানুষটা এতদিন নিরাপদে তাঁকে অফিসে পৌঁছে দিয়েছেন চাকরির শেষ দিনে তাঁকেই নিজে হাতে গাড়ি চালিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দিলেন মেট্রোর জিএম। এই ছবি দেখে চমকে যান সহকর্মীরা। মেট্রোর পদস্থ কর্তারা।
তবে চমকের এখানেই শেষ নয়। পেছনের সিটে বসালেন চালককে। এরপর গাড়ির স্টিয়ারিং ধরলেন খোদ জিএম। চোখে জল চালকের। এর থেকে বড় সম্মান আর কী থাকতে পারে! জিএম নিজে গাড়ি চালিয়ে অফিস থেকে চালকের তেলেঙ্গাবাগানের বাড়িতে পৌঁছে দিলেন জিএম। একেবারে অন্য রকম জিএম। শ্রদ্ধায় মাথা নত করলেন মেট্রোর কর্মীরা।