সিএএ ইস্যুতে সুর চড়াতে শুরু করেছে তৃণমূল। তবে লোকসভা ভোটে একদিকে যেমন বিজেপি এই সিএএ ইস্যুকে হাতিয়ার করে মতুয়াদের মন জয় করার চেষ্টা করছে। তখনই পালটা সিএএ ইস্যুতে সুর চড়াতে শুরু করেছে তৃণমূল। আর এবার সেই সিএএ ইস্যুতে বুধবার বড় মিছিল করার কথা ছিল তৃণমূলের। আর সেই মিছিল হওয়ার কথা ছিল শিলিগুড়িতে। খোদ বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় এই মিছিলে নেতৃত্ব দেবেন বলে ঠিক ছিল। কিন্তু কলকাতা ছেড়ে তিনি কেন শিলিগুড়িতে সিএএ-এনআরসি বিরোধী মিছিল করবেন? এই প্রশ্নটা ভাবাচ্ছিল অনেককেই। তবে এবার জানা গিয়েছে সেই মিছিল বাতিল করা হয়েছে।
সেই সঙ্গেই ভিডিওকনের মাঠে যে কর্মসূচি ছিল তাতেও বদল আসছে। সূত্রের খবর, উত্তরকন্য়া থেকে বুধবার সকালের দিকে কর্মসূচি শেষ করেই তিনি কলকাতায় ফিরবেন। কেন সফরে কাটছাঁট তা জানা যায়নি।
তবে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, সিএএ-এনআরসির বিরুদ্ধে শিলিগুড়িতে রোডশো করা হবে। আমাদের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সেই মিছিলে নেতৃত্ব দেবেন।
সূত্রের খবর ছিল, মৈনাক থেকে এই মিছিল শুরু হবে। এরপর সেই মিছিলটি শেষ হবে শিলিগুড়ির ভেনাস মোড়ে। সেই মিছিলকে সফল করতে সবরকম উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছিল। সব মিলিয়ে এবার উত্তরবঙ্গে সিএএ আর এনআরসি ইস্যুতে দলের পালে হাওয়া টানতে সবরকম উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু আচমকাই সেই কর্মসূচি বাতিল করা হল বলে খবর।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, উত্তরবঙ্গে বিজেপির শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। গত লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গের একের পর এক আসনে জিতে যায় বিজেপি। এই ছবি দেখে কার্যত টেনশনে পড়ে যায় তৃণমূল। এরপর তিস্তা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। ফের সামনেই লোকসভা ভোট। আর এবার একেবারে ভোটের মুখে সামনে এল সিএএ।
এদিকে উত্তরবঙ্গের একাধিক লোকসভা আসনে রাজবংশী মানুষদের সংখ্য়া কম কিছু নয়। কোচবিহার, জলপাইগুড়়ি, আলিপুরদুয়ার সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় রাজবংশী ভোটকে নিজেদের দিকে আনতে একেবারে উঠেপড়ে লেগেছে রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু এই সিএএ ইস্যুতে কার্যত বিভ্রান্ত রাজবংশীদের অনেকেই। কারণ তাঁরাই হলেন উত্তরবঙ্গের ভূমিপুত্র। তাঁদের উপর আখেরে সিএএর কোনও প্রভাব পড়বে না। তবে শেষ পর্যন্ত এই নয়া নিয়মের জেরে কার অধিকার কতটা প্রতিষ্ঠা পাবে সেটাও বুঝে নিতে চাইছেন অনেকেই। অন্য়দিকে ওপার বাংলা থেকে আসা অগণিত মানুষও রয়েছেন উত্তরবঙ্গে। তাঁদের ভোট এবার কাদের দিকে যায় সেটাও দেখার।
তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ইতিমধ্য়েই জানিয়ে দিয়েছেন, ইচ্ছে করেই কালকের দিনটা বেছে নেওয়া হয়েছে, কারণ কালকে থেকে রমজান মাস শুরু হয়েছে। এটা আমরা বুঝি। বিজেপির খেলা হচ্ছে হিন্দুতে হিন্দুতে ভাগ করে দেওয়া, মুসলিমে মুসলিমে ভাগ করে দেওয়া। বলুন আফগানিস্তান কী করে এল? মায়ানমার কেন এল না? এটা তো ভারতের বর্ডার। যেগুলো ভারতের বর্ডার সেগুলি হল না। সব কিন্তু রাষ্ট্রহীন হয়ে যাবে। এই ক্যা এনআরসির সঙ্গে যুক্ত মনে রাখবেন। ইয়ে পলিটিকাল খেলা। ইসকো বাদ চল আয়েগা এনআরসি।
তবে কেন শেষ মূহুর্তে মিছিল বাতিল হল তা নিয়ে প্রশ্নটা থেেকই গিয়েছে।