চাষিরা যাতে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারেন তার জন্য সহায়ক ধান ক্রয় কেন্দ্র তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু, সেখানে একাধিক সমস্যার কারণে শেষ পর্যন্ত খোলা বাজারে ফড়েদের ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা। শুধু তাই নয়, সহায়ক মূল্যের থেকে কম দামে তারা ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। চাষিদের অভিযোগ, নাম নথিভুক্তির জন্য তারা প্রতিদিন কেন্দ্রে যাচ্ছেন, কিন্তু তাদের বলা হচ্ছে সার্ভার ডাউন। ফলে তাদের ঘুরে আসতে হচ্ছে। এমন অভিযোগ উঠেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার পাঞ্জিপাড়া, চোপড়া, ইসলামপুর, করণদিঘি, চাকুলিয়া রায়গঞ্জ, ইটাহার হেমতাবাদ সহ একাধিক জায়গায়। ফলে সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়কেন্দ্রগুলি কার্যত ফাঁকাই থেকে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: এবার রাজ্যের উৎপাদিত বাসমতী চাল আনছে সরকার, সস্তায় পাবেন সাধারণ মানুষ
চাষিদের অভিযোগ, সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্র, কিষাণমান্ডিতে ধান বিক্রি করতে গিয়ে তাদের ব্যাপক হয়রানি হতে হচ্ছে। তাছাড়া ফড়েরা চাষিদের বোঝাচ্ছে যে কিষাণ মান্ডিতে ধান বিক্রি করতে গেলে অনেক সমস্যায় পড়তে হবে। এই সমস্ত কারণে বাধ্য হয় চাষিরা সহায়ক মূল্যের চেয়ে কম দামে খোলা বাজারে ফড়েদের কাছে ধান বিক্রি করছেন। প্রসঙ্গত, এর আগে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির জন্য সিপিসিতে গিয়ে ডেট নিতে হত চাষিদের। তাতে অনেক সময় সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে হয়রানি করার অভিযোগ উঠত। তবে সেই সমস্যা এবার এড়াতে চাষিরা নিজেরাই সরকারি কেন্দ্রে গিয়ে ধান বিক্রির জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গে চাষিরা নিজেদের পছন্দমত তারিখও বেছে নিতে পারবেন বলেও জানানো হয়েছিল। সেই কাজ ইতিমধ্যে চলছে। কিন্তু, তাতেও সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
চাষিরা অভিযোগ করছেন, তারা বেশিরভাগই অনলাইন ব্যবস্থা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তাছাড়া সে ক্ষেত্রেও ফড়েরা আগে থেকেই তারিখ বুক করে রাখছে। তারফলে তাদের সমস্যা হচ্ছে। কিষাণমান্ডিতে গিয়ে ফড়েরা ধান বিক্রি করছে। আর চাষিদের হয়রানি পোহাতে হচ্ছে। সেইকারণে তারা খোলা বাজারে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।এর পাশাপাশি অনেক চাষিকে অগ্রিম ধান কেনার জন্য টাকা দিচ্ছেন ফড়েরা। সে ক্ষেত্রে শীতকালীন আনাজ চাষের সুবিধার জন্য টাকাও নিয়ে নিচ্ছেন চাষিরা। প্রসঙ্গত, ধানের সরকারি সহায়ক মূল্য হল পরিবহণ খরচ সহ প্রতি কুইন্টালে ২২০৩ টাকা। তবে সেই জায়গায় চাষিরা সেই ধান খোলা বাজারে বিক্রি করছেন ১,৭০০ থেকে ১,৮০০ টাকা কুইন্টাল দরে। খাদ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।