ষোল বছরের বেশি বয়সী কিশোরীর সঙ্গে নাবালকের যৌনতাকে ফৌজদারি বিধির বাইরে রাখার পক্ষে সওয়াল করল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার এক মামলার শুনানিতে বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ ও বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ এই মত প্রকাশ করেছে। বিচারপতিরা জানিয়েছেন, ১৬ বছরের বেশি বসয়ীদের মধ্যে সহমতির ভিত্তিতে হওয়া যৌনতার ক্ষেত্রে ১৬ শিশুসুরক্ষা ও কিশোরাবস্থায় তাদের অপরাধী হিসাবে চিহ্নিতকরণে পকসো আইনের ধারায় ভারসাম্য থাকা উচিত।
১৭ বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত এক যুবকের আবেদনের শুনানিতে একথা বলেছে আদালত। ১৪ বছর বয়স থেকে কিশোরীর সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল যুবকের ১৭ বছর বয়সে কিশোরী গর্ভবতী হলে তাঁর পরিবারের তরফে যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়। এর পর কিশোরী একটি সন্তানের জন্ম দেন।
আদালত আরও জানিয়েছে, পকসো আইনের লক্ষ্য ১৮ বছরের কম বয়সী প্রত্যেককে যৌন হেনস্থার হাত থেকে বাঁচানো হলেও এই আইন অগোচরেই তরুণদের মধ্যে সহমতির ভিত্তিতে যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার স্বাধীনতাকে খর্ব করছে। তাই ১৬ বছরের বেশি বয়সী কিশোর – কিশোরীদের মধ্যে সহমতির ভিত্তিতে যৌনতা ফৌজদারি অপরাধ হিসাবে গণ্য হওয়া উচিত নয়। এতে ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের যৌন হেনস্থা থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে কোনও আপোস হবে না।
আদালত এও বলেছে, কিশোরাবস্থার স্বাভাবিক যৌন প্রবৃত্তি ও শিশু সুরক্ষার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে পকসো আইন। কিশোর – কিশোরীদের হেনস্থা থেকে বাঁচানোর বদলে এই আইন সহমতির ভিত্তিতে হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠিত সম্পর্ককেও ফৌজদারি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হওয়ার বিপদের মুখে ঠেলে দেয়।
আদালত বলেছে, সমস্ত শিশু ও কিশোরকে উপযুক্ত যৌনশিক্ষা পাওয়ার অধিকার দেওয়া উচিত। কিশোর কিশোরীদের গোপনীয় ও বাধাহীন যৌন ও প্রজনস্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করতে আইনি ও নীতিগত পুনর্গঠন প্রয়োজন।\