রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে আগেই গ্রেফতার হয়েছেন চাল ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান। এই বাকিবুর না কি ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ। সেই সূত্রে ইতিমধ্যেই ইডির জালে জড়িয়েছেন মন্ত্রী নিজেও। জানা যাচ্ছে, এই দুর্নীতিকাণ্ডের অন্যতম ঘুঁটি বাকিবুর রহমানের প্রতিপত্তি বাম জমানা থেকেই ছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, বাকিবুর রহমানের একটি কিডনি নেই। সেটা তিনি দান করেছিলেন বাম জমানার এক হেভিওয়েট মন্ত্রীকে। তারপর থেকেই নাকি ধীরে ধীরে খাদ্যভবনে তাঁর প্রভাব বাড়তে থাকে। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকা ফুড কর্পোরেশনের কর্তাদের সঙ্গেও নাকি ঘনিষ্ঠতা ছিল বাকিবুরের। এহেন বারিবুরই নাকি নিজের ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছিলেন, ‘ফাঁসলে সবাইকে জড়িয়ে দেব’। (আরও পড়ুন: টিউশন পড়িয়েই ৩.৩৭ কোটি টাকা আয় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কন্যা প্রিয়দর্শিনীর!)
অভিযোগ উঠেছে, নিজের প্রভাব খাটিয়ে বেশি দামে কম পরিমাণ খাদ্য শস্য বিক্রি করতেন বাকিবুর। এভাবেই এই দুর্নীতির সূত্রপাত। অভিযোগ, ৮০০ বা ৬০০ গ্রাম আটা বিক্রি করে এক কেজির দাম নিতেন বাকিবুর। এমনকী কিছু ব্যবসায়ীর সূত্রে চাল যেত বাংলাদেশে। সেই রফতানির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে অনেক প্রভাবশালী নাকি বাকিবুরের ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছিলেন। এর ফলে বাকিবুরের ব্যবসা আরও ফুলে ফেঁপে উঠেছিল। সম্প্রতি দিঘায় একটি বিলাসবহুল হোটেলও তৈরি করেছিলেন বাকিবুর। তাছাড়া আরও অনেক সম্পত্তি আছ তাঁর। তবে সম্প্রতি নাকি বাকিবুর বুঝতে পেরেছিলেন যে ইডি-সিবিআইয়ের নজরে পড়েছেন তিনি। এই আবহে নাকি ঘনিষ্ঠ মহলে বাকিবুর বলেছিলেন, ‘আমি ফাঁসলে সবার নাম বলে দেব।’ এই আবহে প্রভাবশালীরা নাকি গত কয়েকমাসে বাকিবুরের থেকে দূরত্ব তৈরি করছিলেন।
এদিকে রেশন বণ্টন দুর্নীতিতে বাকিবুর রহমানের গ্রেফতারির পর বার বার উঠে এসেছিল জ্যোতিপ্রিয়র নাম। এদিকে সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বাকিবুর রহমানের অন্তত ১০০ কোটির সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে। নামে – বেনামে, আত্মীয়দের নামে এই বিপুল সম্পত্তি। এগুলি রেশন দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করার জন্য করা হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, অন্তত ৬টি সংস্থায় শেয়ার রয়েছে বাকিবুরের। সেই শেয়ার মিলিয়েই বাকিবুরের সম্পত্তি প্রায় ৫০ কোটি। নিউ টাউন, রাজারহাট, পার্কস্ট্রিটে একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে তার। বাকিবুরের একাধিক হোটেল, পানশালাও রয়েছে। বিদেশেও তার সম্পত্তি রয়েছে বলে খবর। প্রসঙ্গত, বাকিবুরের ফ্ল্য়াট থেকে সরকারি দফতরের প্রচুর স্ট্য়াম্প পাওয়া গিয়েছিল। সেই স্ট্যাম্প কী জন্য ব্যবহার করা হত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই আবহে বকিবুরের দুর্নীতির সঙ্গে মন্ত্রী যোগের অভিযোগ বারংবার উঠেছে। আর শেষ পর্যন্ত গত সপ্তাহে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতারও করে ইডি।