কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেও ববিতা সরকারের করা মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ বহাল রাখল। একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ওএমআর সিট অর্থাৎ উত্তরপত্র প্রকাশের নির্দেশ দিল বেঞ্চ। আগামী ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে সমস্ত ওএমআর শিট প্রকাশ করতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৭ জুলাই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, ২০১৬ সালের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চাকরি পাওয়া শিক্ষক এবং ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের উত্তরপত্র প্রকাশ করার। সেই সঙ্গে ৯০৭জন চাকরিপ্রার্থী, যাঁদের বিবৃত উত্তরপত্র উদ্ধার করে সিবিআই, তাদের নাম, ঠিকানা ও বাবার নাম প্রকাশের নির্দেশ দেয় আদালত। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে চাকরি হারানো ববিতা সরকার আদালতের কাছে বিস্তারিত মেধা তালিকা প্রকাশের আবেদন করেন। বুধবার সেই রায়ই বহাল রেখেছে বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ।
(পড়তে পারেন। মানুষকে ন্যায় দিতে আদালতে আসি, খবরের কাগজে নাম ছাপাতে নয়: অমৃতা সিনহা)
আদালতে ববিতার দাবি ছিল, একাদশ-দ্বাদশে বিস্তারিত তথ্য সহ প্যানেল যদি প্রকাশিত হয়, তবে কে, কী ভাবে চাকরি পেয়েছেন তা প্রকাশ্যে আসবে। সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, প্রথম ২০ জনের মধ্যে যদি দুর্নীতির কারণে কেউ চাকরি পান, তবে তা সামনে আসবে। এর ফলে ববিতা আবার চাকরির সুযোগ পাবেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পর্ষদকে নির্দেশ দেন, ২০১৬ সালে চাকরি পাওয়া ৫,৫০০ জনের উত্তরপত্র প্রকাশের। এই নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় স্কুল সার্ভিস কমিশন। ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকেই বহাল রাখে।
রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর বিরুদ্ধে নিয়ম ভেঙে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ এনে কলকাতা হাইকোর্টে দ্বারস্থ হয় ববিতা সরকার। মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন অঙ্কিতার চাকরি ববিতাকে দিতে। মাইনে বাবদ যে টাকা অঙ্কিতা পেয়েছিলেন তাও ববিতাকে দিতে নির্দেশ দেন বিচারপতি।
এই রায়ের কিছু দিন পর ববিতার চাকরি বাতিলের দাবি করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন শিলিগুড়ির বাসিন্দা অনামিকা। তাঁর অভিযোগ ছিল, এসএসসিতে আবেদনের সময় ববিতার শতকরা নম্বর বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে চাকরি যায় ববিতার। সেই চাকরি দেওয়া হয় অঙ্কিতাকে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যান ববিতা। সেই মামলা বিচারাধীন। এর সঙ্গে উত্তরপত্র ও মেধা তালিকা দেখার আবেদন জানিয়ে আলাদা মামলা করেন ববিতা। সেই মামলায় একক বেঞ্চ উত্তরপত্র প্রকাশের নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কমিশনের করা মামলায় ডিভিশন বেঞ্চ একক বেঞ্চের রায়কেই বহাল রাখল।