ইদানিং বেড়াতে গিয়ে তাঁবুতে থাকার চল রয়েছে। অনেকে পাহাড়ের কোলে, নদীর ধারে ক্য়াম্প করে থাকতে ভালোবাসেন। এগুলি প্যাকেজ ট্যুরের অন্তর্গত। আবার সার্কাসেরও তাঁবু পড়ে। তবে এবার সেই উত্তরবঙ্গেই জেলায় জেলায় দেখা যাচ্ছে সাদা সাদা তাঁবু। আর তার নীচে নীল রঙের কার্পেট। তবে সেই তাঁবুরও আবার শ্রেণিবিভেদ রয়েছে। কিছু আবার ভিভিআইপি তাঁবু। সেই তাঁবু একেবারে চরম বিলাসবহুল।এমনটাই বলছেন অনেকে। তার সঙ্গে আবার যুক্ত হয়েছে বিলাসবহুল ক্যারাভান। সব মিলিয়ে টিএমসির একেবারে নজরকাড়া প্যাকেজ। আর বিরোধীরা এর সঙ্গেই দুটো একটা শব্দ যুক্ত করছেন। যেমন তৃণমূলের প্যাকেজ ট্যুর। অনেকে আবার বলছেন যুবরাজের মৃগয়া।
সূত্রের খবর, দিনহাটার বামনহাটে ১৪টি তাঁবু করা হয়েছিল। মাথাভাঙায় ১০০টি তাঁবু, তুফানগঞ্জে ৬৮টি তাঁবু পড়েছে। আবার আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়ায় ১১০টি তাঁবু।তাঁবুতে শ্রেণিবিভেদ অনুসারে ফ্য়ান, খাট, এসি, কুলার সবই থাকছে পুরোদমে। মিটিংয়ের জন্যও আলাদা ব্যবস্থা। সিসি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা। ভিনরাজ্যের সংস্থাও এই তাঁবুর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে। একটি দৈনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে দুই জেলায় তাঁবু ভাড়া করতেই দলের খরচ হচ্ছে প্রায় ৭৩ লাখ টাকা।
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি রথীন বসু হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানিয়েছেন, পুরোটাই প্রমোদ ভ্রমণ। কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। বঞ্চিত উত্তরবঙ্গে মানুষকে পরিষেবা না দিয়ে চুরির টাকায় মৃগয়া করতে বেরিয়েছেন তৃণমূলের নেতা। তৃণমূলের প্যাকেজ ট্যুর। মানুষ এর জবাব দেবে।
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আগেই জানিয়েছিলেন পাঁচতারা তাঁবু তৈরি হচ্ছে তৃণমূলের। তবে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, ভয় পাচ্ছে বিজেপি। সেকারণে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন।
এদিকে বিরোধীরা এই বিপুল খরচ নিয়ে রীতিমতো খোঁচা দিচ্ছেন। আবার তাঁবু দেখার জন্যও ভিড় জমে যাচ্ছে এলাকায়। প্রান্তিক জেলার অনেকেই এই ধরনের আধুনিক তাঁবু জীবনে দেখেননি। একেবারে দুধ সাদা তাঁবু। সেই তাঁবুর মধ্যে বসে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তবে নবজোয়ারের প্রথমেই ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল। এদিন সিতাই, মাথাভাঙা সর্বত্র দলের ভোটকে কেন্দ্র করে একেবারে তুমুল অশান্তি। নিজেদের দলের ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে ছুট দিল তৃণমূলের লোকজন। মাথাভাঙায় আবার চেয়ার ছোঁড়াছুড়ি। হাতাহাতিও শুরু হয়ে যায়। সব মিলিয়ে চরমতম বিশৃঙ্খলা। অনেকের মতে ঠিক যেন ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের ছবি আবার দেখা যাচ্ছে ২০২৩ সালে। বলা ভালো সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তারই আগে ব্যালট ছিনতাইয়ের মহড়ায় অংশ নিলেন তৃণমূলের কর্মীরা। এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে এখনই যদি এই অবস্থা হয় তবে পঞ্চায়েতে কী হবে। তবে এর সঙ্গেই অভিষেকের কমান্ডকে যে আদৌ পাত্তা দিচ্ছে না তৃণমূল এটাও এদিন সামনে আসে আরও একবার। মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।