নির্বাচনে জয়ের ক্ষেত্রে যুব কার্যকর্তাদের ভূমিকা খুবই প্রশংসনীয়, বললেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা৷
আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার সম্মাননা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্য সরকারের ভালমন্দের দিকে নজর রাখতে হবে যুবশক্তিকে। যুবশক্তি রয়েছে বলে সরকার সকল সমস্যার সুরাহা করার সাহস ও শক্তি পায়। আগামী দিনে রাজ্যের ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল। নতুন নতুন বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিনিয়োগ হচ্ছে রাজ্যে। রবার, বাঁশ শিল্পের উন্নয়নে ব্যাপক অগ্রগতি ঘটেছে। সরকারি চাকরির জন্য অপেক্ষা না করে কর্মসংস্থানে জোর দিতে হবে। রাজ্য সরকার যাবতীয় নিয়ম কানুন মেনে চাকরি প্রদান করছে। আর বিরোধী কমিউনিস্ট পার্টিতে এখন আর যুব অংশের নেতৃত্ব নেই। বয়স্করা নিজেরাই যুব বলে প্রচার করেন। সমাজবাদের অলীক স্বপ্ন দেখাতে দেখাতে তারা আজ সমাজের শত্রু হয়ে পড়েছেন।’
নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যে সরকার গঠন করলেও দলের সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে কোন আপোশ করতে চায় না ভারতীয় জনতা পার্টি। তাই নির্বাচনের পর থেকেই নিজেদের শক্তি আরও মজবুত করার পদক্ষেপ নিয়েছে গেরুয়া শিবির। এক্ষেত্রে কার্যকর্তা সহ যুব শক্তির উপর অধিক গুরুত্ব দিয়েছে পার্টি। এই পরিস্থিতিতে আগরতলায় অনুষ্ঠিত হল যুব মোর্চার সম্মাননা কর্মসূচি।
সেখানে অন্যতম বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা বলেন, ‘নিজেদের মানসিকতা সবসময় পজিটিভ রাখতে হবে। সেই সঙ্গে দলীয় শৃঙ্খলা ও দায়িত্ব যথাযতভাবে পালন করতে হবে। রাজ্য সরকারও স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রশাসনিক কাজ করছে।’ এর পাশাপাশি কমিউনিস্ট পার্টির প্রসঙ্গে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের দলে এখন আর যুব অংশের নেতৃত্ব নেই। বয়স্করাই যুব বলে নিজেদের প্রচার করছেন। সমাজবাদের তথ্য দিতে দিতে তারা এখন নিজেরাই সমাজের শত্রু হয়ে গেছেন। সমস্ত যুব শক্তি এখন ভারতীয় জনতা পার্টির পাশে এসে সামিল হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপর অগাধ বিশ্বাস ও আস্থা থেকেই যুবরা এখন বিজেপির পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।’
এই কর্মসূচি থেকেই যুব মোর্চার কার্যকর্তাদের উদ্দেশ্যে সবসময় সরকারের পাশে থাকার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যুব শক্তি আছে বলেই সরকার সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে সাহস পায়। সাধারণ মানুষের কাছে ভারতীয় জনতা পার্টির ভাবধারা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এবং বুথ স্তর পর্যন্ত সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে ক্রমাগত প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে চলেছে যুব শক্তি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গদর্শনে এই রাজ্যে বিগত নির্বাচনগুলিতে বিজেপির জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে যুব কার্যকর্তাদের অবদান খুবই উল্লেখযোগ্য। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আগামী দিনে রাজ্যের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। রাবার শিল্প, বাঁশ শিল্পে ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে।’ সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু সরকারি চাকরির জন্য অপেক্ষা করলে হবে না। এক্ষেত্রে সরকার নিয়ম মেনে চাকরি প্রদান করছে। সবসময় পজিটিভ চিন্তাভাবনা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচিত সদস্যরা এক একজন এক এক নীতিতে বিশ্বাস করতে পারেন। কিন্তু এরমধ্যে থেকেও সাধারণ মানুষের মৌলিক সমস্যা নিরসনে কাজ করতে হবে তাদের। কথা বলতে হবে জনগণের স্বার্থে।’
এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিজেপি মহিলা মোর্চার নেত্রী ও কর্মীদের তাদের অনবদ্য ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিজেপি মহিলা মোর্চার অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে আমাদের দল মহিলা ভোটারদের কাছ থেকে 3% অতিরিক্ত ভোট পেয়েছে। আমাদের সরকার নারীদের সার্বিক কল্যাণের জন্য কাজ করছে এবং এর জন্য তারা বুঝতে পেরেছেন যে শুধুমাত্র এই ডাবল ইঞ্জিন সরকার তাদের অধিকার দিতে পারে।’
আরও পড়ুন- এসি-কুলারের দাম অনেক! গরমে ঘরে রেখে দিন এই ফ্যান, ঘর ঠান্ডা হবে কয়েক মিনিটে
আরও পড়ুন- চণ্ডীপুরে সিআইডি, পাল্টা আদালতে শুভেন্দু! দুর্ঘটনা কাণ্ডে টানাপোড়েন চরমে
এছাড়া মণিপুর থেকে ছাত্রছাত্রীদের নামমাত্র একটা অংশকে রাজ্যে ফিরিয়ে আনার জন্য তিপ্রামথা পার্টির সমালোচনা করেন। এদিন এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা, বিজেপির প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, সহ সভাপতি ডাঃ অশোক সিনহা, উপাধ্যক্ষ রাম প্রসাদ পাল, বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ, মন্ত্রী সুধাংশু দাস, মন্ত্রী শুক্লা চরণ নোয়াতিয়া, দলের সাধারণ সম্পাদক পাপিয়া দত্ত সহ প্রদেশ বিজেপির অন্যান্য নেতৃত্ব। এদিন সারা রাজ্য থেকে যুব কার্যকর্তাদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। আর এই কর্মসূচিকে ঘিরে যুব কর্মীদের মধ্যে বিপুল সাড়া লক্ষ্য করা গিয়েছে।