বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করে দলত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন কলকাতার নারকেলডাঙায় ভোট পরবর্তী হিংসায় নিহত যুবক অভিজিৎ সরকারের দাদা। তাঁর অভিযোগ, লোকসভা ভোটের মুখে ভাইয়ের খুনিদের যোগদান করাচ্ছে দল। এব্যাপারে তাঁর কোনও ওজর আপত্তি শোনেনি বিজেপি। সেজন্য দলত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ করে ভাইয়ের স্মৃতি স্মারক সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন তিনি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বিশ্বজিৎবাবুকে ফোন করেন উত্তর কলকাতা জেলা বিজেপির সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ। আশ্বাস দিয়ে বলেন, অভিজিৎ সরকারের খুনিদের পাশে বিজেপি নেই। এদের প্রত্যেকের শাস্তির ব্যবস্থা করবে দল। জেলা সভাপতির আশ্বাসে বিজেপি ছাড়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে দলকে আপাতত স্বস্তি দিয়েছেন বিশ্বজিৎবাবু।
২০২১ সালের ২ মে বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের দিন বিকেলে বাড়ির সামনে পিটিয়ে খুন করা হয় ভারতীয় শ্রমিক মোর্চার নেতা অভিজিৎ সরকারকে। এলাকায় একনিষ্ঠ বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত ছিলেন তিনি। এছাড়া পথকুকুরের যত্ন করতেন তিনি। অভিজিৎবাবুর সঙ্গে তাঁর পোষ্য একটি কুকুরকেও পিটিয়ে মারে দুষ্কৃতীরা। আদালতের নির্দেশে সেই ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই।
আরও পড়ুন: রাম নবমীতে ছুটি ঘোষণা করল নবান্ন, লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজ্ঞপ্তি জারি
বিশ্বজিৎবাবুর দাবি, স্থানীয় যে যুবকরা অভিজিৎবাবুকে খুনে যুক্ত তাদের সপরিবারে যোগদান করাচ্ছেন বিজেপি নেতারা। এব্যাপারে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েও কোনও ফল পাননি তিনি। যাদের বিরুদ্ধে ভাইকে খুনের অভিযোগ তাদের সঙ্গে দল করতে পারবেন না বলে স্পষ্ট জানান তিনি। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘দলের হয়তো আমাদের বাড়ির ২টো ভোটের আর দরকার নেই। বরং তারা খুনিদের বাড়ির ৩০টা ভোট পেতে চায়।’ তিনি জানান, তিনি দলত্যাগ করে বিজেপির তরফে ভাইয়ের মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেওয়া ৫ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দিতে চান।
বিশ্বজিৎবাবু বিজেপি ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করতেই তাঁকে ফোন করে উত্তর কলকাতা জেলা বিজেপির সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ। তিনি বলেন, অভিজিৎ সরকারের পরিবারের পাশে দল সব সময় আছে। অভিজিতের খুনিদের কোনও দিনও সমর্থন করবে না বিজেপি। তাদের শাস্তি নিশ্চিত করবেন দলের নেতারা।
আরও পড়ুন: রুবি থেকে ৩২ মেট্রো স্টেশনে যেতে পারবেন! কোথায় কত ভাড়া লাগবে? দেখুন পুরো তালিকা
লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে পর পর তিন দিন অস্বস্তিতে পড়ল বিজেপি। শুক্রবার দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী। শনিবার দলত্যাগ করেন ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম। রবিবার দলের অস্বস্তির কারণ হলেন বিশ্বজিৎবাবু।
তৃণমূলের দাবি, বিজেপি শুধু নেতা – কর্মীদের ব্যবহার করে। তাদের মর্যাদা দিতে জানে না। প্রায় ৩ দশক আগে ২১ জুলাইয়ে নিহত কর্মীদের এখনও প্রতি বছর শ্রদ্ধা জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বিজেপি তিন বছরে তাদের নিহত দলীয় কর্মীকে ভুলে গিয়েছে।