এখন পূবালী বাতাসের সঙ্গে বর্ষা রাজ্যে দেখা দিলেও বাঙালির মুখ যেন বিস্বাদে বাংলার পাঁচের মতো হয়ে রয়েছে। ইলিশের মরশুমে বাড়িতে ইলিশ নিয়ে এলেও রান্না করার পর মুখে দিয়ে কোনও স্বাদ পাচ্ছেন না তাঁরা। এখন দাম অনেকটা নাগালের মধ্যে থাকলেও বেলাগাম হয়েছে স্বাদ। এই বিস্বাদের ইলিশ মুখে দিয়ে রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে উঠছেন গৃহকর্তারা। তাই রুপোলি ফসলকে পাতে পেয়েও আস্বাদন করতে পারছেন না গৃহস্থরা। এই নিয়ে এখন শহর থেকে গ্রামে সরগরম হয়ে উঠেছে পরিবেশ।
কেন স্বাদ মিলছে না ইলিশে? ইলিশে স্বাদ না মেলা নিয়ে ক্রেতারা একহাত নিচ্ছেন বিক্রেতাদের। আর এতে মৎস্য ব্যবসায়ীরা পড়েছেন মহাফাঁপরে। এই ঘটনার কথা কানে পৌঁছতেই ব্যাখ্যা দিলেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী। কাঁথিতে মৎস্যজীবীদের সরকারি সুবিধা প্রদান অনুষ্ঠানে এসে বিপ্লববাবু সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘ইলিশকে বেড়ে ওঠার জন্য একটা সময় দেওয়া উচিত ছিল। সেই সময়টা আমরা দিচ্ছি না। খোকা ইলিশ ধরে ফেলার জেরে স্বাদটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এবার ৬০ দিন বন্ধ করে দিয়েছিলাম। সেটাকে বাড়িয়ে ৭০ দিন করা যায় কি না সেটা দেখছি।’ এই স্বাভাবিক বেড়ে ওঠার সময়ের কথা বলা হলেও বিস্বাদ এখন মুখেই।
আর কী বলছেন মৎস্যমন্ত্রী? এই ইলিশের স্বাদ পেতে মানুষকে সচেতন হওয়ার কথাও বলেন মন্ত্রী। মৎস্যজীবীদের জন্য ‘আদর্শ গ্রাম’ গড়ে তোলার কথাও বলেন মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘মানুষ যদি সচেতন না হয় তাহলে হবে না। মানুষ সচেতন হয়ে খোকা ইলিশ না কিনলেই স্বাদ মিলবে। গ্রামের প্রত্যেকটা প্রান্ত যেন রাস্তার সঙ্গে যুক্ত থাকে। প্রত্যেক বাড়িতে যেন পানীয় জল পৌঁছয় এবং প্রত্যেক বাড়িতে বিদ্যুৎ থাকে। সাক্ষরতা একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নিরক্ষরতাকে দূর করতে চাইছি। আমি চাই প্রত্যেকটা মৎস্যজীবী পরিবার লেখাপড়া শিখুক। কারণ তারা যত এগোবে, তত সমাজ এগোবে।’
আরও পড়ুন: এক লক্ষ প্রবীণ নাগরিকের বার্ধক্য ভাতা বন্ধ করল কেন্দ্রীয় সরকার, কেন এমন ঘটল?
আর কী বার্তা মৎস্যমন্ত্রীর? এদিন বন্দরগুলি নিয়েও তিনি পরিকল্পনা করছেন বলে জানান। বাংলাদেশে যেমন ইলিশ ধরার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করা হয় এখানেও সেটা করার কথা ভাবা হচ্ছে। এবার বন্দরের পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মৎস্যমন্ত্রী বলেন, ‘মৎস্যজীবীদের কারও কারও অভিযোগ আছে বন্দর নিয়ে। বন্দর নিয়ে অবহেলা করা হচ্ছে। বন্দরগুলি বাড়ছে এবং বন্দরগুলিকে সচল করবার জন্য নানা ধরণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যে আর্থিক সংকট ছিল সেটাকে আমরা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি।’